স্টাফ রিপোটার: আজ ১০ই ফেব্রুয়ারি শুক্রবার। অমর একুশে বইমেলার ১০ম দিন। মেলা শুরু হয় সকাল ১১টায়, চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। আজ নতুন বই এসেছে ২৬০টি। মেলায় ছিল আজ শিশুপ্রহর। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়।
শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা : অমর একুশে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে সকাল ৮:৩০টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এতে ক-শাখায় ১৯৫, খ-শাখায় ১৮৩ এবং গ-শাখায় ৬৮ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করে। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন শিল্পী হাশেম খান।
শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতা : সকাল ৯:৩০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তেন শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুইশতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন কাজী মদিনা, আন্জুমান আরা এবং নূরুল হাসনাত জিলান।
আলোচনা অনুষ্ঠান : বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : শিল্পী সফিউদ্দীন আহমেদ এবং জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি : এস এম সুলতান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মলয় বালা এবং সৈয়দ নিজার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সুশান্তকুমার অধিকারী, ইমাম হোসেন সুমন, নাসির আলী মামুন এবং নীরু শামসুন্নাহার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুনতাসীর মামুন।
প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, বাংলাদেশের ছাপচিত্রের পথিকৃৎ এবং উপমহাদেশের স্বানামধন্য ছাপচিত্রী সফিউদ্দীন আহমেদ এদেশের শিল্প আন্দোলনের সূতিকাগার ‘গভর্নমেন্ট স্কুল অফ আর্টে’র প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। তিনি সফল তেলরং শিল্পী, ছাপচিত্রী এবং একজন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর শিক্ষক। জীবন ও কর্মে তাঁর সাধনার ধরন, নিভৃতচারী স্বভাব, বিলাসবর্জিত জীবনযাপন, সততা, শুদ্ধাচার, সংগীতানুরাগ, মুক্তদৃষ্টি, ধ্যান, শিল্পসাধনা ও ব্যক্তিত্ব তাঁর চরিত্রে জুগিয়েছে অভিনতুন মাত্রা। অপরদিকে এস এম সুলতান শুধু চিত্রশিল্পীই ছিলেন না, তাঁর স্বতন্ত্র দর্শন, রাজনীতি, সমাজ নন্দনভাবনা ছিল; যা একই সাথে দেশজ ও সময়ের চেয়ে অগ্রগামী। সুলতান আমাদের চিন্তা ও শিল্পচর্চায় ঔপনিবেশিকতার ছাপগুলি খুঁজে বের করেছেন যা বি-উনিবেশায়নের প্রাথমিক শর্ত।
আলোচকবৃন্দ বলেন, শিল্পী সফিউদ্দীন আহমেদ আমাদের আধুনিক শিল্পাচর্চার পথিকৃতদের একজন। পরিপূর্ণ সাধক-শিল্পীর একাগ্রতা নিয়েই তিনি শিল্পসাধনায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। বাংলাদেশের শিল্পকলার ইতিহাস ছাপচিত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উন্নীত করণে শিল্পী সফিউদ্দীন আহ্মেদের অবদান অনস্বীকার্য। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন শিল্পী এস.এম. সুলতান বাংলার লোকসংস্কৃতি ও জাতিসত্তার একজন ধারক হয়ে উঠেছিলেন। কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থেকেও তিনি শিল্পচর্চার জগতে রেখে গেছেন অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর।
সভাপতির বক্তব্যে মুনতাসীর মামুন বলেন, শিল্পী সফিউদ্দীন আহমেদ এবং এস এম সুলতান আমাদের শিল্পকলার জগতে উজ্জ্বল দুই নক্ষত্র। সফিউদ্দীন আহমেদ প্রাতিষ্ঠানিকতার মধ্যে থেকে নিখুঁত কলাকৌশলের মাধ্যমে শিল্পচর্চা করে গেছেন। অন্যদিকে এস. এম. সুলতান শিল্পচর্চার দিক থেকে ছিলেন সাধারণ মানুষের কাছাকাছি, যে কারণে তাঁর ছবির ভেতর আমরা নিজেদের খুঁজে পাই।
আজ লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন মৌলি আজাদ, সাগরিকা নাসরীন, সাহাদাত পারভেজ এবং হুমায়ূন কবীর ঢালী।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন বায়তুল্লাহ কাদেরী, সঞ্জীব পুরোহিত, ফারহানা রহমান এবং রুহ রুহেল। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ডালিয়া আহমেদ, নুরুজ্জামান, মাসুদ রানা, মাহমুদুল হাকিম তানভীর। এছাড়াও ছিল জিনিয়া জ্যোৎ¯œার পরিচালনা নৃত্য সংগঠন ‘জিনিয়া নত্যৃকলা একাডেমি’ মনোমি তানজানার পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘নিক্কন পারফরমিং আর্ট সেন্টার’, মোঃ জাকির হোসেনের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘শান্তি ভাবদর্শন চর্যাকেন্দ্র’, পারভীন আক্তার আঁখির পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘আনসার ডান্স একাডেমি’-এর নৃত্য পরিবেশনা। আবৃত্তি পরিবেশনা করেন ‘বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ’ এবং ‘ত্রিলোক বাচিক পাঠশালা’-এর শিল্পীবৃন্দ।
আগামীকালের সময়সূচি
আগামীকাল ২৮শে মাঘ ১১ই ফেব্রুয়ারি শনিবার। অমর একুশে বইমেলার ১১তম দিন। মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
আগামীকাল সকাল ১১টা থেকে বেলা ০১টা পর্যন্ত মেলায় শিশুপ্রহর চলবে।