Home রাজনীতি প্রচার মাধ্যমগুলোকে সরকার আওয়ামী লীগের দাপ্তরিক প্রচারযন্ত্রে পরিণত করেছে: রিজভী

প্রচার মাধ্যমগুলোকে সরকার আওয়ামী লীগের দাপ্তরিক প্রচারযন্ত্রে পরিণত করেছে: রিজভী

41

স্টাফ রিপোটার: বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, নির্বাচন সামনে রেখে জনগণের টাকায় পরিচালিত প্রচার মাধ্যমগুলোকে সরকার আওয়ামী লীগের দাপ্তরিক প্রচারযন্ত্রে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভির প্রতিদিন ১৭ ঘন্টা ৩৫ মিনিট সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানমালায় শেখ হাসিনা ও মরহুম শেখ মুজিবর রহমানকে নিয়ে মোট ৯ বার কোন না কোন অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। রুটিন করে দিনে ৬ বার দেখানো হয় “শেখ হাসিনা প্রতিদিন” ও ৩ বার তাঁর বাবাকে নিয়ে কোন না কোন প্রোগ্রাম। এই টেলিভিশন চ্যানেলটির পেছনে প্রতিবছর ব্যয় হয় ১৮০-২২০ কোটি টাকা, কিন্তু আয় হয় ৮০-১০০ কোটিরও কম। বছরে চ্যানেলটির লোকসান ১০০ কোটি টাকার বেশী।আজ রোববার (০৯ অক্টোবর) প্রেস ব্রিফিং এ গণমাধ্যমকে একথা বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, গত ১৪ বছর গণতন্ত্রকামী মানুষকে গুম-খুন-অপহরণ করে, হামলা মামলা নির্যাতন আর বিরোধী দলের সভা সমাবেশে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতা আঁকড়ে রেখেছে নিশিরাতের সরকার। ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনের আগেই সরকার গঠনের জন্য বিনা ভোটে ১৫৪ কে এমপি ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ।নির্বাচনের নামে ওই প্রহসনের ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতেই অর্থাৎ ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত নিশিরাতে জনগণের ভোট ডাকাতি করে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে আওয়ামী লিগ অবৈধভাবে গঠন করে নিশিরাতের সরকার। আর অবৈধভাবে টিকে থাকতে গিয়ে গুম, ক্রসফায়ার ও প্রতিহিংসামূলক মামলাকে বিরোধী দল দমনের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

রিজভী বলেন, গত ৫ অক্টোবর ২০২২, বিজয়া দশমীর দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উস্কানিমূলক পোষ্ট ও লাইভে এসে মিথ্যাচার করার অসত্য অভিযোগ এনে ঢাকা জেলাধীন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি’র সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এ্যাড. নিপুণ রায় চৌধুরী’র বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার আগানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর শাহ খুশী দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় এই জিডি করেন। গত বুধবার রাতে দূর্গাপুজা শেষে বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়ার সময় তুচ্ছ ঘটনার জেরে র‌্যাব সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগারদের তর্ক-বিতর্ক হয়। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী ক্যাডার’রা অবরোধ করে বলে যে, র‌্যাবের সদস্যরা ক্ষমা না চাইলে তারা প্রতিমা বিসর্জন হতে দেবে না। তারা ঘন্টার পর ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে এবং হিন্দুদের ধর্মীয় রীতি পালনে বাধা ও ভয়ভীতি সৃষ্টি করে।
এই নেতা আরও বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আবারো আওয়ামী লীগ এবং তাদের পোষ্য বিশিষ্টজন’রা ভোট ডাকাতির জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অতীতের ভোট ডাকাতির তিনটি জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করতে যেসব ভয়ংকর পন্থা অবলম্বন করেছিল এখন সেই একই পথে নেমেছে সরকার। দমন পীড়ন, মধ্যরাতে তুলে নিয়ে যাওয়া, গুম-খুন-জঙ্গী নাটক শুরু করেছে। কথা বলার অধিকার এবং সত্য প্রকাশ বন্ধের জন্য নতুন নতুন ফরমান জারি করা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে আইন করে দূর্নীতিকে আড়াল করতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ রাষ্ট্রের ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। শুধুমাত্র দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টির জন্যই এই পরিপত্র জারি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাথে তাদের আত্মা বিক্রি করা সহযোগীরা ভোট ডাকাতির জন্য সক্রিয় হয়ে উঠেছে। লেখা-লেখি ও বিবৃতিবাজির মাধ্যমে সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য বানানোর লিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগকে ক্রমাগত চোরাবালির মধ্যে ডুবিয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, জনগণ এবার আর ভোট ডাকাতদের স্বপ্ন সফল হতে দেবেনা। আমাদের নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যেই স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনার অধীনে আর কোনো জাতীয় নির্বাচন হবেনা। জনগণ হতে দেবেনা। অতএব দালালরা সাবধান। এখনো সময় আছে, গুম খুন অপহরণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণের পাশে দাঁড়ান।