Home জাতীয় প্রকাশ্যে আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা, মামলার এজাহারে যা বললেন স্ত্রী

প্রকাশ্যে আ.লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা, মামলার এজাহারে যা বললেন স্ত্রী

41

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর শাহজাহানপুরে ‘ফিল্মিস্টাইলে’ এলোপাতাড়ি গুলি করে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১১, ১২, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।

মামলার এজাহারে ডলি উল্লেখ করেন, ‘আমার স্বামী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। তার মতিঝিল কাঁচাবাজার এলাকায় একটি রেস্টুরেন্ট আছে। আমার স্বামী রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করতেন। ১০ বছর ধরে বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন দলীয় কোন্দল ছিল। ৪-৫ দিন আগে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারী আমার স্বামীকে মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়।’

এজাহারে ডলি আরও বলেন, ‘প্রতি দিনের মতো গতকাল (বৃহস্পতিবার) গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্না মাইক্রোবাস নিয়ে হোটেলের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য রওনা হন।মতিঝিল এজিবি কলোনিতে গ্রান্ড সুলতান রেস্টুরেন্টে কাজ শেষে বাসার উদ্দেশে যাওয়ার পথে রাত আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে মানামা ভবনস্থ বাটার দোকানের সামনে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারীরা পূর্বশত্রুতার জের ধরে আমার স্বামীকে এলোপাতাড়ি গুলি করে এবং গুলিতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়।’

এজাহারে স্বামীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার বর্ণনা দিয়ে ডলি বলেন, ‘আমার স্বামীর গলার ডান পাশে, বুকের বাম পাশে, বুকের বাম পাশের বগলের কাছাকাছি, পেটের মধ্যে নাভির নিচে, বাম কাঁধের ওপরে, পিঠের বাম পাশের মাঝামাঝি স্থানে, পিঠের বাম পাশের কোমর বরাবর, পিঠের ডান পাশের কোমরের ওপরসহ একাধিক স্থানে মারাত্মক জখম হয়।’

এদিকে জাহিদুলের গাড়িচালক একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ মুন্না বলেন, আমরা গাড়িতে করে শাহজাহানপুর বাগিচা মসজিদের দিক দিয়ে বাসায় যাচ্ছিলাম। রাস্তায় ট্রেনের সিগন্যাল দিলে গাড়ি থামিয়ে সিগন্যাল ছাড়ার অপেক্ষা করতে থাকি। হঠাৎ বাঁ পাশ দিয়ে সন্ত্রাসীরা আচমকা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। জাহিদুল ভাইয়ের বাঁ হাতসহ বিভিন্ন স্থানে গুলি লাগে। কাউকে চিনতে পেরেছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবার মুখে হেলমেট পরা ছিল।

ঘটনার সময় জাহিদুলের সঙ্গে গাড়িতে থাকা বন্ধু মিজানুর রহমান শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজে সাংবাদিকদের বলেন, তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি ঘটনাস্থলে আসা মাত্রই জাহিদুলকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে এক যুবক। এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায় ওই যুবক।

জাহিদুল আলোচিত যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই মামলার কোনো সংশ্লিষ্টতা আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে মিজানুর বলেন, সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য তদন্ত করে সেটা বলতে পারবে।

উল্লেখ্য, রাজধানীর শাহজাহানপুরে আমতলা মসজিদ এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনের সড়কে মাইক্রোবাসে থাকা টিপুকে (৫৪) লক্ষ্য করে মুখোশ পরা (কেউ বলছেন হেলমেট পরা) দুই যুবক এলোপাতাড়ি গুলি চালায় বলে জানান স্থানীয়রা। এতে টিপু, তার চালক মুন্না এবং পাশে রিকশাআরোহী বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী সামিয়া আরেফিন প্রীতি (২৪) গুলিবিদ্ধ হন।

স্থানীয়রা জানান, হামলার সময় টিপু একটি গাড়িতে ছিলেন। দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। রাত সোয়া ১১টার দিকে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক টিপু ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন।-যুগান্তর