Home বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নীল চোখের মানুষের মূল পূর্বপুরুষ একজনই!

নীল চোখের মানুষের মূল পূর্বপুরুষ একজনই!

25

ডেস্ক রিপোর্ট: প্রত্যেক মানুষেরই আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে। আর এই বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে আপনি আপনার এমন আত্মীয়কে (একই বংশোদ্ভূত) খুঁজে বের করতে পারবেন, যার সঙ্গে কখনও আপনার দেখাই হয়নি। থাকুক তিনি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে।

শুনতে অবাক লাগলেও পৃথিবীর সব নীল চোখের মানুষের ক্ষেত্রে বিষয়টি সত্য। গবেষণায় দেখা গেছে- পূর্ববর্তী, পরবর্তী, এমনকি ভবিষ্যতে যারা আসবে তারা সবাই একটি সাধারণ কেন্দ্রে সম্পর্কিত। আর এ কারণে দূরবর্তী আত্মীয়কে সহজেই চিনে নিতে পারবেন নীল চোখের অধিকারীরা।

গবেষকরা দেখেছেন, বিশ্বে নীল চোখের মানুষদের কেবল একজন পূর্বপুরুষ ছিলেন, যিনি সম্ভবত প্রায় ১০ হাজার বছর আগে বাস করতেন কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে। তার মধ্যে এক জেনেটিক মিউটেশন ঘটেছিল, যা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সেই একজন মানুষ না থাকলে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের চোখ হতো বাদামি।

বলা হয়ে থাকে, মেলানিনের কারণে বাদামি হচ্ছে মানুষের চোখের স্বাভাবিক রং। উত্তর ইউরোপে ওসিএ২ নামে জিনে একটি মিউটেশন দেখা যায়। এতে আইরিসে মেলানিনের উৎপাদনকে ব্যাহত করে। এর ফলে চোখের রং হয়ে যায় নীল।

চোখের রঙের সঙ্গে জিনের সম্পর্ক ওতপ্রোত। বলা যেতে পারে যে, সব চোখ একই রঙের। আর এর কারণ মেলানিন নামক রঞ্জক, যা আমাদের চোখের রং দেয়। স্বাভাবিকভাবেই তা বাদামি।

ডেনমার্কের ইউনিভার্সিটি অফ কোপেনহেগেনের অধ্যাপক হ্যান্স আইবার্গ বলছেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের সবার চোখ ছিল বাদামি। তবে একটি জেনেটিক মিউটেশন আমাদের ক্রোমোজোমে ওসিএ২ জিনকে প্রভাবিত করে। যার ফলে একটি ‘সুইচ’ তৈরি হয়, আক্ষরিক অর্থে যা বাদামি চোখ তৈরি করার ক্ষমতা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তী সময়ে সেই মিউটেশন ক্রমেই পরবর্তী প্রজন্ম হয়ে ছড়িয়ে গেছে মানবজাতিতে।’

গবেষকরা দেখেছেন, বিশ্বে নীল চোখের মানুষদের কেবল একজন পূর্বপুরুষ আছেন, যিনি সম্ভবত ১০ হাজার বছর আগে কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে বাস করতেন।

চোখের রঙের জেনেটিকস গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশেরও বেশি নীল চোখের মানুষের জিনে একই ক্ষুদ্র মিউটেশন রয়েছে, যা আইরিসের রং নির্ধারণ করে।

এই গবেষণার মতে, মিউটেশনটি কেবল একজনের মধ্যে ঘটেছিল। আর তিনিই বিশ্বের নীল চোখের অধিকারীদের পূর্বপুরুষ।

হিউম্যান জেনেটিকস জার্নালে বলা হয়েছে, ‘নীল চোখের রঙের জন্য দায়ী মিউটেশনগুলো সম্ভবত কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলের উত্তর-পশ্চিম অংশ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। প্রায় ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার বছর আগে নিওলিথিক যুগে ইউরোপের উত্তর অংশে তখন বড় ধরনের কৃষিবিল্পব (অ্যাগ্রিকালচারাল মাইগ্রেশন) ঘটেছিল।

অধ্যাপক হ্যান্স বলেন, ‘মানুষের চোখের রঙের তারতম্য আইরিসে মেলানিনের পরিমাণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। এভাবে আমরা দেখতে পেয়েছি, নীল চোখের ব্যক্তিদের চোখে মেলানিনের পরিমাণে সামান্য পার্থক্য রয়েছে।

‘এ থেকে আমরা এই উপসংহারে আসতে পারি যে, সব নীল চোখের মানুষ একই পূর্বপুরুষের সঙ্গে যুক্ত। তারা সবাই ডিনএনের এই মিল উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে।’

নীল চোখের নারী-পুরুষ সবার চোখের ডিনএনএর জেনেটিক সিকোয়েন্স একই। অন্যদিকে বাদামি চোখের অধিকারীদের ক্ষেত্রে ডিএনএর সেই এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণে ভিন্নতা রয়েছে।-আমাদের সময়.কম