Home জাতীয় কামারশালায় কারিগর সংকট, কোরবানি সরঞ্জামের দাম বৃদ্ধি

কামারশালায় কারিগর সংকট, কোরবানি সরঞ্জামের দাম বৃদ্ধি

34

মো: মিজানুর রহমান রনি, (উজিরপুর) বরিশাল: আগামী ১০জুলাই অনুষ্ঠিত হবে ঈদুল আযাহা। ঈদুল আযাহাকে ঘিরে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে প্রতিটি কামারাশালায়। বরিশালের উজিরপুরে কামারশালায় কারিগর সংকট নিয়ে কোরবানি সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। এরই সঙ্গে বেড়েছে দা-বটি বানানোর লোহা আর ইস্পাতের দাম। ফলে এখন কাজ করে আগের মতো লাভ হচ্ছে না কামারদের। গত বছরের চেয়ে এবার কোরবানির সরঞ্জামের দাম অনেক বেশি। মাংস কাটা দা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা ,আগে এই দাম ছিলো ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। বড় চাকু ছিলো ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা এখন তার দাম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বটি ছিলো ২০০ টাকা, এখন সেই বটি বিক্রি হিচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। এছাড়া হাসুয়া ছিলো ১৫০ টাকার পরিবর্তে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা। লোহার আওয়াজ, হাপরের ফোঁসফাঁস আর হাতুড়িপেটার টুংটাং শব্দে মুখর এখন কামারবাড়ি। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, হাপর দিয়ে কয়লার আগুনে লোহা পুড়িয়ে লাল করে ছোট-বড় নানা আকারের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ছুরি, বটি, দা, চাপাতি ইত্যাদি। নতুন অস্ত্র বানানোর পাশাপাশি পুরনো অস্ত্র শান দেওয়ার কাজও করতে হচ্ছে সমানতালে। ক্লান্তিহীনভাবে চলছে কাজ, কথা বলার ফুরসত নেই কারো। শেষ সময়ে এসে কারিগররা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন দা, বটি, ছুরি, চাপাতি তৈরিতে। এত পরিশ্রমেও তাদের মুখে হাসি ফুটছে। এই কাজে সারাবছর তেমন না থাকায় অনেকে এই পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে যার কারনে বর্তমানে কামারশালায় কারিগর সংকট দেখা দিয়েছে বলে একাধিক কামাররা জানান। উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের প্রতিটি বাজারেই আছে কামারের দোকান রয়েছে। এসব দোকানে সারা বছরই লোহার তৈরি দা, বটি, ছুরি, চাপাতি, কোদাল, কুড়াল, কাঁচি পাওয়া যায়। কিন্তু কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পুরানো যন্ত্রপাতিতে বেড়েছে শানের কাজ। উজিরপুর পৌরসভার বাসিন্দা আ: রহমান , হেলাল উদ্দিন সহ একাধিক ক্রেতাদের অভিযোগ অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ঈদ উপলক্ষে দা, চাপাতি ও ছুরির দাম অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছে। বিক্রেতারা গতবারের চেয়ে এবারে দাম বেশি নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কয়লার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আগে হোটেল, বাসা-বাড়ি থেকে কয়লা সংগ্রহ করা হতো। এখন হোটেল বা বাসাবাড়িতে রান্নার কাজে গ্যাস ব্যবহার হয়। কয়লা পাওয়া তাই দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে।এর সাথে শ্রমিকের দাম বেড়ে গেছে। আবার অন্যদিকে প্রায় সব ধরনের দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোহার দামও বেড়েছে। তাই অন্য বারের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি । উজিরপুর পৌরসভার কমল কর্মকার বলেন, কোরবানির ঈদ এলে আমাদের বেচা বিক্রি বেড়ে যায়। ঈদের দুই সপ্তাহ আগে থেকে কাজের চাপে দম ফেলার অবস্থা থাকে না। এ বছর চায়না স্টিলের সরঞ্জাম কিনছে অনেকে। তাই তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভালো মানের জিনিস তৈরি করছেন। তারপরও শানের কাজ বেশি। শিকারপুর ইউনিয়নের কার্তিক জানান, বেশি টাকা দিয়েও কারিগর পাওয়া যায় না। তাই রাতদিন কাজ করতে হয়। তারপরও ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে এসে ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় খুশি তারা।