Home জাতীয় নালিতাবাড়ীতে অসহায় ও স্বামী পরিত্যক্তা নাছিমার রান্নাঘর ভেঙ্গে দিলেন চেয়ারম্যান

নালিতাবাড়ীতে অসহায় ও স্বামী পরিত্যক্তা নাছিমার রান্নাঘর ভেঙ্গে দিলেন চেয়ারম্যান

39

শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারোমারী বাজার সংলগ্ন খাস জমিতে অসহায় ও স্বামী পরিত্যক্তা নাছিমা বেগম অস্থায়ী ভাবে নির্মাণকরা রান্নাঘরটি ভেঙ্গে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ মাওলানা জামাল উদ্দিন। গত ২৬ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখে এ ঘটনাটি ঘটেছে। সরেজমিনে পরিদর্শণ ও এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারোমারী বাজার সংলগ্ন সরকারের খাস জমিতে গত প্রায় ৫০ বছর যাবৎ বসবাস করে আসছেন নাছিমা বেগম ও তার পরিবার। ১ ছেলে ১ মেয়ের জননী নাছিমা বেগম তার বাক-প্রতিবন্ধি মাকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করলেও নাছিমার স্বামী গোলাম মোস্তফা তাদেরকে ফেলে রেখে অন্যত্র চলে যায়। এর পর থেকে গোলাম মোস্তফা স্ত্রী নাছিমা আর সন্তানদের নেইনি কোন খোঁজ-খবর। তাই খেয়ে না খেয়ে, অন্যের সাহায্য নিয়ে এবং অন্যের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করে কোন মতে দিন কাটে তাদের। সহায় সম্ভলহীণ নাছিমার পরিবারের থাকার মতো একটি ঘর নির্মাণ করার সামর্থ্য না থাকায় গত ৩ বছর পুর্বে সরকারের ঐ খাস জমিতে সরকারী খরচে একটি আধাপাকা ঘর নির্মাণ করে দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ মো. আজাদ মিয়া। সেই ঘরের সামনে কয়েক ফর্দ টিন দিয়ে একটি অস্থায়ী চালা তৈরী করে সেখানেই রান্নার কাজ করতেন নাছিমা। নাছিমার বাক-প্রতিবন্ধি বৃদ্ধা মাতা আর তার পরিবারের প্রতি সদয় থাকায় সব সময় সাহায্য সহযোগীতা করতেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আজাদ মিয়া। কিন্তু বিগত ইউপি নির্বাচনে আলহাজ্ব মো. আজাদ মিয়া হেরে যান আলহাজ মাওলানা জামাল উদ্দিনের কাছে। আলহাজ্ব মাওলানা জামাল উদ্দিন নির্বাচনে জয়লাভ করার পর নজর পড়ে অসহায় ও স্বামী পরিত্যক্তা নাছিমার বাড়ীর প্রতি। ঘরটি সরকারি ভাবে নির্মাণ করার কারণে সেটির উপর হস্তক্ষেপ করা সম্ভব না হলেও নিজ উদ্যোগে ভেঙ্গে দেন নাছিমার রান্নার ছাপড়াটি। তার কয়েকদিন পর নাছিমার রান্না করার কোন জায়গা না থাকায় পূণরায় ওই ছাপড়াটি মেরামত করেন। ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ মাওলানা জামাল উদ্দিন উক্ত সংবাদ পাওয়া মাত্রই চৌকিদার পাঠিয়ে নাছিমার ছাপড়াটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। অথচ নাছিমার ঘর সংলগ্ন স্থানে ইসলামিক ফাউন্ডেশন দ্বারা পরিচালিত বারোমারী বাজার জামে মসজিদ গণশিক্ষা কেন্দ্র (মক্তব) এর বিশাল ঘর থাকলেও গত ২ বছর যাবৎ সাইন বোর্ড ঝুলানো ছাড়া আর কোন কার্যক্রম নেই। সে ব্যাপারে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওলানা জামাল উদ্দিনের কোন পদক্ষেপ নেই। এ ব্যাপারে অসহায় ও স্বামী পরিত্যক্তা নাছিমা বেগম জানান, আমি ভূমিহীন হিসেবে সরকারের খাস জমিতে ও ঘরে থাকি এবং খাস জমিতেই রান্না করি। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মাওলানা জামাল উদ্দিন কেন আমার সাথে এমনটি করছে? আমি এর প্রতিকার চাই। এ ব্যাপারে বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জামাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইউনিয়নের বারোমারী বাজারের খাস জমিতে দীর্ঘদিন ধরে ঐ বিধবা নারী থাকলেও নতুন করে কিছু জায়গা দখল করে অন্য একটি ঘর তোলার চেষ্ঠা করায় চৌকিদার দিয়ে ঘর ভেঙ্গে দিয়েছি। বৃদ্ধা নারীর মেয়ে নাছিমা সাবেক চেয়ারম্যান আজাদের বাড়ীতে কাজ করে, তার ইন্ধনে নতুন করে সরকারী জায়গা দখল করে আরো ঘর উঠানের পারতাড়া করছে বলেও চেয়ারম্যান দাবী করেন।