দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে দরবার শরীফে রাশেদ (২৮) নামে এক যুবক খুন হওয়ার ঘটনায় দরবার শরীফের কথিত পীর তাছের ফকিরকে হুকুমদাতা প্রধান আসামী করে অবিলম্বে তাকে গ্রেফতারের দাবি করেছে নিহতের পিরবার ও এলাকাবাসী। মঙ্গলবার দুপুরে নির্মমভাবে খুন হওয়া যুবক রাশেদের পিতা হত্যা মামলার বাদী আব্দুর রাজ্জাক সহ এলাকাবাসী এ দাবি করেন। এছাড়াও গতকাল বিকালে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দরবারের পীর তাছের ফকিরকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
নিহত রাশেদের পিতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কল্যানপুর দরবার শরীফের ভন্ড পীর তাছের ফকিরের নির্দেশে তার ছেলে রাশেদ কে গাছে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। অথচ যার নির্দেশে আমার ছেলেকে খুন করা হলো সেই ভন্ড পীরকে ১০ নং আসামী করেছে পুলিশ। দরবার শরীফের ভন্ড পীর তাছের ফকিরকে হুকুমদাতা প্রধান আসামী করে অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করার দাবি জানান তিনি।
তিনি বলেন, এক বছর আগে আমার ছেলে রাশেদকে সৌদি আরবে পাঠিয়ে ছিলাম। সেখান থেকে দরবার শরীফের লোকজন ফোন করে ছেলেকে ফেরত এনে এভাবে খুন করে আমার বুক খালি করলো ভন্ড পীর ও তার লোকজন। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই, বিচার চাই ভন্ড পীর তাছের ফকিরের, যার নির্দেশে যুবকরা বিপথগামী হচ্ছে।
রোববার দুপুরে মোবাইল চুরির অভিযোগে দৌলতপুর উপজেলার কল্যানপুরে কথিত পীর তাছের ফকিরের দরবার শরীফের ভেতরে যুবক রাশেদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। নিহত যুবক দৌলতপুর উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের হরিনগাছী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের হলেও অজ্ঞাত কারণে মামলার অন্যতম হুকুমদাতা প্রধান আসামী কল্যানপুর দরবার শরীফের কথিত পীর তাছের ফকিরকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে কল্যালপুর দরবার শরীফের কথিত পীর তাছের ফকির সহ ১০জনের নাম উলেøখ ও অজ্ঞাত ১৫-২০জনকে আসামী করে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দৌলতপুর থানা পুলিশ হত্যার সাথে জড়িত মামলার এজাহার নামীয় ৬জন আসামীকে গ্রেফতার করলেও মামলার অন্যতম হুকুমদাতা যাকে ১০নং আসামী করা হয়েছে কথিত পীর তাছের ফকিরকে গ্রেফতার করা হয়নি। সে দরবার শরীফের ভেতরে বহাল তবিয়তে রয়েছে। গ্রেফতার হয়নি মামলার এজাহার নামীয় অপর আসামী মাহবুব খান সোবহানী সালাম সহ ৪জন।
দৌলতপুর থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, কল্যানপুর দরবার শরীফে খুনের ঘটনায় অধিকতর জিঞ্জাসাবাদ ও তথ্য উদঘাটের জন্য জেলহাজতে প্রেরিত আসামীদের রিমান্ডে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি হত্যার সাথে জড়িত যারা গ্রেফতার হয়নি তাদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় দৌলতপুরের কল্যানপুর বাজারে রাশেদ হত্যার প্রতিবাদে এবং কল্যালপুর দরবার শরীফের কথিত পীর তাছের ফকিরকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।