Home স্বাস্থ্য ‘দিনে দুই থেকে আড়াই লিটারের বেশি পানি পান করা উচিত নয়’: বিএসএমএমইউ...

‘দিনে দুই থেকে আড়াই লিটারের বেশি পানি পান করা উচিত নয়’: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

19

স্টাফ রিপোটার: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দীর্ঘমেয়ার্দী অন্ত্রের ব্যাধি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস এর চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন নাই। দীর্ঘমেয়াদী অন্ত্রের রোগের সব ধরণের চিকিৎসা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। বাংলাদেশে কমপক্ষে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ আইবিএস রোগে ভুগছেন। এটা একটা বিরাট সংখ্যা। এই রোগের বিষয়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। এই রোগের আরো উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি করতে হবে। রোগ নির্ণয়ের উপরও গুরুত্ব দিতে হবে। এ জন্য স্ক্রিনিং কার্যক্রমও জোরদার করতে হবে। এ সময় তিনি আরো বলেন, মানুষের ধারণা রয়েছে অতিরিক্ত পানি খেলে কিডনী ভালো থাকবে, এটা ভুল ধারণা। দিনে দুই থেকে আড়াই লিটারের বেশি পানি পান করা উচিত না। দিনে দুই লিটার পানি পান করাই হলো সর্বোত্তম। আজ মঙ্গলবার ১৮ এপ্রিল দীর্ঘমেয়ার্দী অন্ত্রের ব্যাধি আইবিএস দিবস ২০২৩ কে সামনে রেখে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত র‌্যালি ও সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ আনওয়ারুল কবীরের সভাপতিত্বে ও অধ্যাপক ডা. মোঃ রাজীবুল আলম এর সঞ্চালনায় আয়োজিত সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মনিরুজ্জামান খান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ মাসুদুর রহমান খান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ নুরুজ্জামান। সেমিনারে গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের শিক্ষক, চিকিৎসক, শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে বলা হয়, আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম দীর্ঘমেয়ার্দী অন্ত্রের ব্যাধি। বিশ^ জনসংখ্যার ১০ শতাংশ লোক আইবিএস রোগে ভুগছেন। আক্রান্ত ব্যক্তি ঘন ঘন পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যাথা দীর্ঘমেয়াদী আমাশয়, পেট ফেপে থাকা, পেটে কামড় দিয়ে পায়খানা হওয়াসহ নানাবিধ উপসর্গ প্রকাশ করে। কারো কারো ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে । জীবনহানিকর কোন সমস্যা না থাকা সত্ত্বেও রোগীরা দীর্ঘসময় ধরে কষ্ট পেতে থাকে এবং এতে তাদের পারিবারিক, সামাজিক, পেশাগত জীবন ব্যাহত হয়। পরিপাকতন্ত্রের মাংসপেশী ও ¯œায়ুর অস্বাভাবিক সংকোচন, প্রসারণ, উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিবর্তনসহ নানাবিধ কারণ আইবিএস রোগের কারণ হিসেবে ধারণা করা হয়। উদ্বেগ ও মানসিক চাপে যারা থাকেন তারা এই রোগেবেশি ভোগে। পুরুষের তুলনায় মহিলারা আইবিএস রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।
আইবিএস রোগের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণই রোগ নিয়ন্ত্রণের মূলমন্ত্র। যেসব খাবারে পেটের সমস্যা বাড়ে, সেসব এড়িয়ে চলতে হবে। দুধ, দুগ্ধজাত খাবার, শাক, অতিরিক্ত তেলে ভাজা, অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার, চিনি, ক্যাফেইন ইত্যাদি এড়িয়ে চলা ভালো। মানসিক চাপ কমাতে ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, মেডিটেশন করতে পারেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী উপসর্গ অনুযায়ী উপসর্গ প্রশমনের জন্য ঔষধ সেবন করতে হবে। মনস্তাত্ত্বিক থেরাপি আইবিএস রোগীর জন্য ফলপ্রসূ। জনসচেতনতা ও কুসংস্কার দূরীকরণই হতে পারে আইবিএস মোকাবিলার মূল হাতিয়ার।
সম্পাদনা: সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস এম ইয়ার ই মাহাবুব ও সুব্রত বিশ্বাস। ছবি: সোহেল গাজী। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।