Home রাজনীতি ঢাকায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত

ঢাকায় বাম গণতান্ত্রিক জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত

20

ডেস্ক রিপোর্ট: বিদ্যুৎ-গ্যাস ও নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ও বিরোধী রাজনৈতিক দল-সংগঠনের উপর হামলা-নিপীড়নের প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের উদ্যোগে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও শেষে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম, বাসদ (মার্কসবাদী)-র সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির শহীদুল ইসলাম সবুজ। সমাবেশ পরিচালনা করেন বাসদ কেন্দ্রীয় বর্ধিত ফোরামের সদস্য খালেকুজ্জামান লিপন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার এক মাসেই দুইবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে এবং সাত মাসের ব্যবধানে ৮০ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণের ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দুর্নীতি-লুটপাট, অপচয়-ভুলনীতির কারণে লোকসানের দায় জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে সরকার। দুর্নীতিবাজদের শাস্তি না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী কুইক রেন্টালের বিরোধিতাকারীদের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়ার হুমকী দিয়েছেন। অথচ কেন্দ্রগুলোকে বসিয়ে বসিয়ে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ৯৬ হাজার কোটি টাকা গত ১২ বছরে কুইক রেন্টাল কোম্পানিগুলোকে দেয়া হলো, সেটার দায় জনগণ কেন নিবে, সে বিষয়ে কোন কথা প্রধানমন্ত্রী বললেন না।
নেতৃবৃন্দ ভারতের আদানী গ্রæপের সাথে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিল ও এই অযৌক্তিক অন্যায় চুক্তির সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। এমনিতে চাল-ডালসহ নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধমুখী। বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ না করে সরকার তাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। শতকরা ৬৮ ভাগ মানুষ পুষ্টিকর খাবার কিনতে হিমশিস খাচ্ছে। টিসিবির ট্রাকের সামনে লাইন ক্রমাগত দীর্ঘ হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে আইএমএফ-এর কাছ থেকে সরকার ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে। প্রতিবছর ৭০০ কোটি ডলার পাচার হয়ে যাচ্ছে-সেটা ঠেকানোর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ উদ্ধারে সরকারি পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, যেগুলো ইতিমধ্যে অবলোপন করা হয়েছে ও আদালতে মামলা রয়েছে তা হিসাবে আনলে এটি প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকা হবে। ব্যাংক লুটপাটকারী, দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনতে সরকারের কোন পদক্ষেপ নেই, বরং সরকার এদের রক্ষাকর্তা হিসাবে ভ‚মিকা রাখছে। আইএমএফ-এর ঋণের ৩৮টি শর্ত মেনে শিক্ষা-চিকিৎসা, সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনগণের প্রতি সরকারের ভূমিকা সংকুচিত হচ্ছে। ফলে এই সব সেক্টরে ভর্তুকী কমিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ বর্তমান সরকারের ফ্যসিবাদী দুঃশাসন ও সারাদেশে বিরোধী দলীয় বিভিন্ন সভা-সমাবেশে পুলিশী হামলা ও ক্ষমতাসীনদের হামলা এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সিট বাণিজ্য ও গণরুমে নির্যাতনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দেশের বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে হাইকোট ঈদঘা গেট-কদম ফোয়ারা ঘুরে তোপখানা রোড হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।