ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের নবনির্মিত সংসদ ভবনে স্থাপিত ‘অখণ্ড ভারত’ ম্যুরালে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাকিস্তান ও নেপাল এরই মধ্যে এ কাজটির নিন্দা জানিয়েছে। বাংলাদেশ এখনো সরকারিভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।খবর আমাদের সময়.কম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অখণ্ড মানচিত্রে বাংলাদেশকে যুক্ত করার বিষয়টি গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। ফলে অন্য কোনো দেশের অখণ্ড মানচিত্রে বাংলাদেশকে দেখানোটা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। বাংলাদেশের জন্য অপমানজনক।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স এক বিবৃতিতে অখণ্ড ভারত ম্যুরালো বাংলাদেশকে অংশ করার প্রতিবাদ জানান।
তারা বলেন, ভারত সরকার কর্তৃক স্থাপিত বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মায়ানমারসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশকে অঙ্গীভূত করে ভারত সরকারের ভিস্তা প্রকল্পের আওতায় ভারতের নয়া সংসদ ভবনে তথাকথিত অখণ্ড ভারতের মানচিত্রের ম্যুরাল স্থাপনের যে খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাতে সিপিবি’র দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। ভারত সরকার কর্তৃক স্থাপিত এই ম্যুরাল বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদার প্রতি এক অবমাননাকর দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ। ভারতের বর্তমান সরকারের হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, আপত্তিকর এবং বিভ্রান্তিমূলক মানচিত্রের এই ম্যুরাল স্থাপনে সিপিবি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। একইসাথে অবিলম্বে এটি অপসারণের দাবি জানাচ্ছে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এক বিবৃতিতে অখণ্ড ভারত মানচিত্র তৈরির তীব্র নিন্দা জানান। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অখণ্ড ভারত মানচিত্রে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের দেশগুলোকে অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এটি এসব দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন বলেছে, ভারতের শাসকদের কল্পিত মানচিত্রে বাংলাদেশকে অখণ্ড ভারতের অংশ দেখানো আপত্তিকর। ভারতের এমন আচরণ প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য অমর্যাদাকর ও অসম্মানজনক।

লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তি দেশটির রাজনীতিকদের অনেকে মেনে নেয়নি। তাদের ভেতর অখণ্ড ভারতের আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। তবে ভারত আসলে এ ধরনের মানচিত্র এঁকে কী করতে চাইছে, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া উচিত।