Home বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডানা থাকলেই কি মানুষ উড়তে পারত?

ডানা থাকলেই কি মানুষ উড়তে পারত?

66

ডেস্ক রিপোর্ট:: এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন। কারণ ডানা থাকার পরও উড়তে না পারা প্রাণী একদম বিরল নয়। আবার ডানাহীন প্রাণীরও ওড়ার নজির আছে।

উটপাখি বা এমুর কিন্তু ডানা আছে। কেবল ওজন বেশি বলে এক জীবন ভূমিতেই কেটে যায় তাদের। আবার হালকা বলেই হাঁস-মুরগি যে খুব একটা ভেসে বেড়াতে পারে, তা-ও নয়।

এবার উল্টোটা দেখা যাক। ডানা না থাকার পরও বাতাসে ভেসে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে পারা প্রাণীও রয়েছে পৃথিবীতে। বেলুনিং স্পাইডারের কথাই ধরা যাক। এরা বিশেষ কৌশলে বহু কিলোমিটার বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারে। ফ্লাইং স্কুইড, ফ্লাইং ফিশ, ফ্লাইং স্কুইরেলের মতো কিছু ডানাহীন প্রাণীরও রয়েছে খানিকটা ওড়ার ক্ষমতা।

উড়তে পারা বা না পারার পেছনের কারণ কেবল ডানাকেন্দ্রিক করে ফেলার যুক্তি নেই। এমনকি এটি মূল কারণও নয়।

বিজ্ঞান বলছে, মানুষকে উড়তে না দেয়ার জন্য মূলত দায়ী পৃথিবীর অভিকর্ষজ বল। মানুষের শরীরের গঠন এই অভিকর্ষজ বলকে উপেক্ষা করে বাতাসে ভেসে থাকার উপযোগী নয়।

পৃথিবী অভিকর্ষ বলের মাধ্যমে সবকিছুকে কেন্দ্রের দিকে টানতে থাকে। আমাদের শরীর এই অভিকর্ষ বল অতিক্রমে সক্ষম নয়। ফলে আমাদের আজীবন সেঁটে থাকতে হয় পৃথিবীর বুকে।

অন্যদিকে পাখির হালকা গড়ন এবং দেহের ফাঁপা হাড় অভিকর্ষজ বল এড়াতে সাহায্য করে। শরীরের ভেতরের বায়ু থলি হালকা রাখে পাখিদের, এজন্য বাতাস কেটে মসৃণ গতিতে ভেসে বেড়াতে পারে এরা।

পাখির শারীরিক গঠনও ওড়ার জন্য সহায়ক। এই গঠনের ফলে ওড়ার সময় এরা তেমনভাবে বাতাসের বাধায় পড়ে না। অন্যদিকে ডানার পেশি শরীরের অন্য পেশির তুলনায় বেশ শক্তিশালী হওয়ায় ডানা ঝাপটাতেও সমস্যা হয় না পাখির।

পাখির ফুসফুসের গঠনও একে উড়তে সাহায্য করে। শ্বাস নেয়ার সময় ফুসফুস প্রচুর অক্সিজেন শোষণ করে, যা ডানার পেশিকে দীর্ঘ সময় সক্রিয় থাকতে সাহায্য করে।

পাশাপাশি পাখির ডানার পালক বাতাসকে ওপর থেকে নিচের দিকে ঠেলে দেয়। ফলে ভূমি থেকে সহজেই আকাশপানে উড়াল দিতে পারে এরা। বিমানের ডানা বা হেলিকপ্টার ব্লেডও ঠিক এ কাজটিই করে।

আর তাই পাখির আকাশে ওড়ার ঘটনা অনেকগুলো শর্তের যোগফল। তাই কেবল ডানা লাগিয়ে নিলেই মানুষের পক্ষে ওড়া সম্ভব নয়। ওটা কেবল গল্পের পরীদের জন্যই প্রযোজ্য।
দৈনিক বাংলা