Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাবিতে ‘মোবাইল চুরিতে’ অভিযুক্তকে শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ!

জাবিতে ‘মোবাইল চুরিতে’ অভিযুক্তকে শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ!

29

জাবি প্রতিনিধি,: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সহপাঠীদের মোবাইল ফোন চুরিতে অভিযুক্ত এক ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া অধিক যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে তুলনামূলক কম যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিভাগের শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে চরম বিতর্ক ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

নিয়োগ বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. নুরুল আমিনের অধীনে বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। এতে লোক প্রশাসন বিভাগের ৪২তম ব্যাচের ছন্দা খাতুন, ৪৩তম ব্যাচের ফাইরুজ আনিকা ও ৪৪তম ব্যাচের রিফা তাসফিয়াকে সুপারিশ করা হয়েছে। এদের মধ্যে, ছন্দা খাতুনের বিরুদ্ধে সহপাঠীদের মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ রয়েছে।

ছন্দা খাতুনের সহপাঠীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী থাকাকালীন সময়ে মোবাইল চুরির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গণরুমের ছাত্রীরা ছন্দার সাথে থাকতে রাজি হননি। পরে প্রমাণ সাপেক্ষে হল কর্তৃপক্ষ ছন্দাকে শাস্তিস্বরূপ বেগম খালেদা জিয়া হলের দুই তলার টিভি রুমের পাশের স্টোর রুমে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। পরবর্তীতে ছন্দা খাতুন শেখ হাসিনা হলে চলে যান।

তারা আরো জানান, হলের গণরুমে প্রায় ২০০ জন মেয়ে শিক্ষার্থী অবস্থান করতেন। তবে কিছুদিন যেতেই অনেকের জিনিসপত্র হারিয়ে যাওয়া শুরু হয়। পরে গণরুম থেকে একটি স্মার্ট ফোন ও চার্জার চুরি হলে বিষয়টি গুরুত্ব দেন হলের ছাত্রীরা। খোঁজাখুজির পর ছন্দা খাতুনের কাছ থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করেন ছাত্রীরা। তখন বিষয়টি হল প্রশাসনকে জানানো হয়।

ছন্দা খাতুনের সহপাঠী লোক প্রশাসন বিভাগের ৪২তম ব্যাচের জান্নাত আরা বলেন, ‘ছন্দা খাতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম খালেদা জিয়া হলের গণরুমে থাকার সময় অন্য ছাত্রীদের জিনিসপত্র চুরি করতো। মোবাইল চুরির অভিযোগে ধরা পড়ার পর, হল কতৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছন্দার আরেক সহপাঠী বলেন, ‘ছন্দা আমার মোবাইল ফোন চুরি করে। তবে প্রথমে বুঝেতে পারিনি। যখন সে অন্যান্য জিনিসপত্র চুরির অভিযোগে ধরা পরে, তখন আমার হারানো মোবাইলের সিমে কল দিলে ছন্দা ভুল করে রিসিভ করে। তখন জিজ্ঞাসাবাদে ছন্দা খাতুন আমার মোবাইল চুরির কথা স্বীকার করে। কিন্তু ততদিনে সে মোবাইল অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। তাই সে পরবর্তীতে ৪ হাজার টাকা জরিমানা দেয়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক অধ্যাপক বলেন, ‘মোবাইল চুরিতে অভিযুক্ত একজন বিভাগের শিক্ষিকা হবে, এটা কখনও কাম্য নয়। বিভাগের অন্য শিক্ষকরা তাকে কলিগ হিসেবে পরিচয় দিতেও লজ্জা পাবে। তাই সিন্ডিকেট সদস্যদের এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছন্দা খাতুন বলেন, ‘আমি টিউশনিতে আছি। পরে ফোন দিবো।’ এরপর তার মুঠোফোনে কল করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. নুরুল আমিন ও উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।