Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস জাবিতে গাছ কাঁটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

জাবিতে গাছ কাঁটার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

33

জাবি প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাছ কেটে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ-জেইউ) স্থায়ী ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পাশে সুন্দরবন নামক এলাকায় আইবিএ-জেইউ এর স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য সূর্যোদয়ের পূর্বে অর্ধশতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে।

গাছ কেটে ফেলার প্রতিবাদে গাছে কাফনের কাপড় পড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরবন নামক স্থানে ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ-জেইউ) স্থায়ী ভবন নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এখানে ১ হাজারের অধিক গাছ থাকায় ভবন নির্মাণ করলে বেশিরভাগ গাছ কাটা পড়বে । বরাদ্দ দেওয়ার পর থেকেই এই স্থানে ভবন নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। তবে বুধবার ভোররাতে অর্ধশতাধিক গাছ কেটে ফেলে আইবিএ কতৃপক্ষ।

গাছ কাটার প্রতিবাদে সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্বরে অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গা প্রদক্ষিণ শেষে ‘সুন্দরবন’ এসে শেষ হয়। সেখানে অবস্থিত ‘আইবিএ জেইউ’ ভবন এর ভিত্তি প্রস্তর ভেঙে ফেলে তারা গাছ রোপণ করে। এরপর শিক্ষার্থীরা কাটা গাছের গোড়ায় লাল রঙ দেয়, গাছ রোপণ করে, পোস্টার লিখে তারপর সেখান থেকে একটা কেটে ফেলা গাছের প্রতীকী লাশ মিছিল নিয়ে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এর সামনে অবস্থান নেয়।এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ও প্রক্টরকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।

শিক্ষার্থীরা বলেন ,যখন তারা ওখানে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে তখন আমরা এর বিরোধীতা করেছি। আইবিএ এর চেয়ারম্যান আমাদেরকে ডাকলে তাকে আমরা স্পষ্ট করে বলেছিলাম, ‘আইবিএ সহ এখানকার আরও অনেক বিভাগ ও ইনস্টিউট এর ক্লাসরুম সংকট রয়েছে। আমরা চাই ক্লাসরুম সংকট নিরসন হোক। কিন্তু এই বন উজাড় করে এখানে বিল্ডিং বানানো যাবে না। আরও অনেক বিকল্প জায়গা রয়েছে। তাছাড়া মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দিব না। ‘

জাবি ছাত্র ইউনিয়নের এক অংশের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, ভবনের অবশ্যই প্রয়োজন আছে কিন্তু সেটা প্রকৃতি উজাড় করে নয়। এখানে বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুটি কর্তৃপক্ষ জড়িত। তাদের দ্বন্দ্বে এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি ধ্বংস হতে পারে না। তাদের এই হঠকারিতার প্রতিবাদে আমরা সেই স্থানে পুনরায় গাছের চারা রোপণ করেছি।

এ বিষয়ে এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান বলেন , আইবিএ থেকে গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে আমাদের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। সেটার কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, কিন্তু আজকে গাছ কাটার বিষয়ে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।

রাতের আঁধারে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে আইবিএ-জেইউ এর পরিচালক অধ্যাপক কে এম জাহিদুল ইসলাম বলেন,আমাদের শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষকদের কক্ষের সংকট আছে। দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনকে এটা জানিয়ে আসছি। প্রশাসন আমাদের এই জায়গা নির্ধারণ করে দিয়েছে। গাছ কাটার বিষয়টা ঠিকাদার কোম্পানির উপর নির্ভর করে। যতটুকু জেনেছি ওরা আজ ভোরে গাছ কেটেছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।