Home রাজনীতি গণ অভ্যুত্থানই এখন সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ

গণ অভ্যুত্থানই এখন সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ

39

রাজশাহী অফিস: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো’র সদস্য জননেতা কমরেড আবু হাসান টিপু বলেছেন, সাম্প্রতিকালের ইউপি নির্বাচনে আরও একবার প্রমাণিত হলো এই সরকারের শাসনামলে কোন পর্যায়েই অবাধ সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই এই কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্তি পেতে হলে ২০২৩ সালের নির্বাচনের দিকে পথ চেয়ে বসে থাকলে চলবেনা। রাজপথের গণ আন্দোলনকে গণ অভ্যুত্থানে রূপান্তর করতে না পারলে এই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারকে উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিনা ভোটের সরকার আর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতের ভোটে সরকার গঠনের পরও যদি কেহ প্রত্যাশা করেন ২০২৩ সালে দেশে একটি অবাধ-সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই নির্বাচনে জনগণের রায়ে সরকার পরিবর্তন করা সম্ভব হবে তবে নিশ্চয় তিনি দিবাস্বপ্ন দেখছেন। এই সরকার ক্ষমতা পরিবর্তনের সকল গণতান্ত্রিক পথ ইতোমধ্যে হত্যা করেছেন। তাই রাজপথের গণ আন্দোলন, গণ অভ্যুত্থানই এখন সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ। ৯০-এর সামরিক স্বৈরশাসক গেছে যে পথে শেখ হাসিনার সরকারকেও সেই পথেই বিদায় করতে হবে। আপাদত দেশবাসীর নিকট এর বাইরে অন্য কোন পথ খোলা নেই।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নাটোর জেলা কমিটির সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তৃতাকালে আবু হাসান টিপু এসব কথা বলেন।

আবু হাসান টিপু আরও বলেছেন করোনা মহামারির এই সময়ে ইতোমধ্যেই দেশে নতুন করে আরও ২ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে নেমে এসছেন, সব মিলিয়ে দেশের মোট জনগোষ্ঠির প্রায় অর্ধেকের বেশী মানুষ এখন দরীদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে। দেশের এই দুঃসময়ে দরীদ্র মানুষগুলোর জন্য ও খাদ্য নগদ পয়সাসহ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পরলেও তারা তা না করে বরং রাষ্ট্রায়ত্ব কৃষিভিত্তিক ভারী শিল্পগুলো বন্ধ করে দেশে বেকার ও খুদার্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়িয়ে তুলছে। এসরকার ইতোমধ্যেই জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন এখন তারা ভাতের অধিকারও কেড়ে নিচ্ছে। সুতরাং এ সরকারকে আর কোনভাবেই ক্ষমতায় রাখা যায়না।

সম্মেলনে সভাপতিত্বকালে নাটোর জেলা কমিটির সভাপতি ও পলিট ব্যুরো’র অপর সদস্য জননেতা কমরেড আনছার আলী দুলাল বলেছেন সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে সরকার একের পর এক দেশের কৃষিভিত্তিক ভারী শিল্পগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পাটকলের পর এবার বন্ধের ফরমান জারি করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় চিনিকলের ওপর। এর জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রথমে এগুলোকে দুর্বল করা হয়েছে। লোকসানের দায় যথারীতি চাপানো হয়েছে চিনিকল শ্রমিক এবং আখচাষিদের ওপর। সরকার ও বিএসএফআইসি লোকসানের যে দায় চিনিকল শ্রমিক ও আখচাষির ওপর দিচ্ছে এটা চরম একটা মিথ্যাচার। বাস্তবে এর স¤পূর্ণ দায় সরকার ও বিএসএফআইসির দুর্নীতি, ভুলনীতি, লাটপাট আর রাষ্ট্রীয় স¤পদ গুটিকয়েক ব্যক্তির হাতে তুলে দেয়ার নীতি। এখানে শ্রমিকও আখ চাষিদের বলিরপাঠা বানানো হচ্ছে। শ্রমিকরা এই মিথ্যা ও জালিয়াতিপূর্ণ বক্তব্য কোনভাবেই মেনে নিবে না।

আনছার আলী দুলাল আরও বলেন, দেশের সকল রাষ্ট্রায়ত্ব কলকারখানার মালিক দেশের জনগণ। জনগণের মালিকানাধীন এই স¤পদ সরকার মুষ্টিমেয় লুটেরা ধনিকদের হাতে তুলে দিতে চায়। আরতাই সরকার ও লুটেরাদের ‘জনগণের মালিকানাধীন স¤পদ’ লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে আখচাষি-পাটিচাষি ও চিনিকল-পাটকল শ্রমিকসহ দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

নাটোর শহরস্থ লালপুরের বাগানবাড়ীতে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন শ্রমিক সংহতি ফেডারেশনের সভাপতি এড সুমন মিয়া ও সাবেক ছাত্রনেতা কমরেড রোবেল বিশ্বাস। বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নাটোর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সোলাইমান হোসেন, কমরেড শাহীন আলম, আখচাষি নেতা কমরেড আক্রাম হোসেন, শ্রমিকনেতা কমরেড জাহিদুল ইসলাম, কমরেড আব্দুর রহিম, কমরেড মাসুদ রানা সরকার, নারীনেত্রী কমরেড সাবিনা ইয়াছমিন, আখচাষি নেতা কমরেড বাবুল আক্তার, কমরেড আয়তার আলী, কমরেড তুজাম্মেল হক, আখচাষি নেতা কমরেড ফজলুর রহমান, কমরেড আঞ্জুমানারা বেগম, কমরেড পৃথিবী প্রমূখ।