মাহাবুবুর রহমান: জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ঢাকা-৪ আসনের এমপি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেছেন, কথায় বথায় আমরা অনেকেই গণতন্ত্রের কথা বলি। গণতন্ত্র আমরা পেয়েছি সত্য।
কিন্তু গণতন্ত্র আদৌ কি প্রাতিষ্ঠানিত রুপ পেয়েছে ? ৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর আমাদের প্রয়াত নেতা পল্লীবন্ধু এরশাদ যে গণতন্ত্রের জন্য ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন, সেই গণতন্ত্রকে এখনো টর্চলাইট দিয়ে খুজতে হয়।
আজ বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তির ওপর বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই কথা বলেন। এই সময় সংসদে সভাপতিত্ব করেন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
সংসদে জাপা দলীয় এমপি বাবলা আরো বলেন, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র এবং বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ এই চার নীতির উপর ভিত্তি করে আজ হতে ৫০ বছর আগে এসেছিল স্বাধীনতা। কিন্তু সেই স্বাধীনতার কতটুকু সুফল ভোগ করতে পেরেছি আমরা? কতটুকু পূরণ হয়েছে আমাদের প্রত্যাশা? আজ জাতির কাছে, নতুন প্রজন্মের কাছে সেটি অনেক বড় একটি প্রশ্ন।
বাবলা বলেন, জাতির পিতার কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে অর্থনৈতিকভাবে, অবকাঠামোগতভাবে বা রাষ্ট্রীয়ভাবে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের এক রোল মডেল। বাংলাদেশ আজ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। কিন্তু আমাদের আরও বহুদূর যেতে হবে। সত্যিকারের সুখী-সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বপ্নের সোনার বাংলা রূপে গড়ে তুলতে হবে। যে অর্থনৈতিক উন্নতি ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে, তার সুফল আরও অধিক মাত্রায় জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছাতে হবে। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে সত্য, কিন্তু তার সিংহভাগ কয়েক হাজার কোটিপতির ঘরে বৃত্তাবদ্ধ হয়েছে। দেশের অর্থ কালো টাকার মালিকরা বিদেশে পাচার করে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। বিভিন্ন দেশে বেগম পাড়া’র মতো অবাঞ্চিত কালো টাকার ধনীপাড়া গড়ে উঠেছে, যা কাম্য হতে পারে না।
জাপার সাংসদ বাবলা আরো বলেন, সাম্প্রতিক কালে শারদীয় দুর্গাৎসবের সময় সাম্প্রদায়িক শক্তির যে আস্ফালন দেখেছি তা স্বাধীন বাংলাদেশে কল্পনাও করতে পারি না। এর আগে আমরা দেখেছি, ৬৪ জেলায় বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠতে সারাদেশ! আমরা দেখেছি বাংলা ভাই, আব্দুর রহমানদের উত্থান। আমরা দেখেছি, জাতির পিতার ভাস্কর্য স্থাপনে বাধাদানকারী মৌলবাদী ধর্মাদ্ধ শক্তির আস্ফালন।
আমরা ঘটতে দেখেছি রামু, নাসিরনগর, রংপুর, মুরাদনগর, ভোলা, শাল্লা, নোয়াখালী, পীরগঞ্জে সংখ্যালঘুদের উপরে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক হামলা। এই ক্ষেত্রে আমরা দেখছি প্রত্যাশা-প্রাপ্তির মাঝে যোজন যোজন ব্যবধান। স্বাধীনতার ৫০ বছরে, সে কথা বলাই বাহুল্য ! তবু আমরা স্বপ্ন দেখি একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আবারও একটি সত্যিকারের শোষণমুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, বঞ্চনামুক্ত দুর্নীতিবিহীন একটি জাতি রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশে যেন প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্ব দরবারে।