Home জাতীয় কলাপাড়ায় সাংগ্রাই উৎসবে মেতেছে রাখাইন তরুণ-তরুণীরা।। নতুন বছরকে স্বাগত জানায় একে-অপরের গায়ে...

কলাপাড়ায় সাংগ্রাই উৎসবে মেতেছে রাখাইন তরুণ-তরুণীরা।। নতুন বছরকে স্বাগত জানায় একে-অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে

41

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আদিবাসি রাখাইন সম্প্রদায়েদের তরুণ-তরুণীরা মেতেছে পানি খেলায়। একে-অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানায় তারা। একই সঙ্গে চলে নাঁচ-গান ও আতিথীয়তা। আর উৎসব স্থলে নিজস্ব সংস্কৃতির নতুন পোশাকে দলবেঁধে জড়ে হয় যুবক-যুবতি, আবাল-বৃদ্ধা ও শিশুরা। বর্ষবরণ বা সাংগ্রাই উপলক্ষে বুধবার বিকেল সাড়ে ৪ টায় উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের তুলাতলীর রাখাইন পল্লীতে বে-সরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাস আইসিডিপি রাখাইন প্রকল্পের উদ্যোগে রাখাইন যুব ফোরাম এ উৎসবের আয়োজন করেন।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জলকেলি উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা উদ্বোধন করেন কারিতাস বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মি. ফ্রান্সিস ব্যাপারী। এসময় কুয়াকাটা শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহারে ভিক্ষু ইন্দ্রবংশ, কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের সহকারি অধ্যাপক আঃ রাজ্জাক খান, কলাপাড়া রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি এসকে রঞ্জন, সাংবাদিক হাবিবুল্লাহ খান রাব্বি, রাখাইন সমাজপতি বাবু তেননান রাখাইনসহ রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সংঞ্চালনা করেন, কারিতাস আইসিপি প্রকল্পের সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা বাবু মংম্যা।
স্থানীয় রাখানইদের সূত্রে জানা গেছে, দূর-দূরান্ত থেকে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে সাংগ্রাই উৎসবে যোগ দেয়। করোনার কারণে দীর্ঘ দুই বছর উৎসব করতে পারেনি তারা। তবে এবছর উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পেরে রাখাইন পরিবারগুলোর মাঝে বিরাজ করছে উৎসব মূখর পরিবেশ।
অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া রাখাইন কিশোরী টেংনে বলেন, সব দুঃখ দুর্দশা ভুলে নতুন করে পথ চলার জন্যই এ উৎসবে মিলিত হয়েছি। একই কথা বললেন চোচো রাখাইন,খেংনচানসহ আরোও অনেকে।
রাখাইন গৃহবধূ মায়া বলেন, সাংগ্রাই উৎসব উপলক্ষে পুরো মাস জুড়ে প্রতিটি রাখাইন পল্লীর ঘরে রান্না নিরামিষ ভোজের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও তৈরি হয় হরেক রকম বিন্নি চালে পিঠাপুলি। বয়োবৃদ্ধ নিনিসে রাখাইন জানিয়েছেন, পাঁপ মোচনের ব্রত হয়ে উৎসবের এই দিনে সাকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বৌদ্ধ বিহারে পরিস্কার পোশাকে গমন প্রার্থণা করা হয়েছে।
কারিতাস আইসিপি প্রকল্পের সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা বাবু মংম্যা বলেন, রাখাইনের ইতিহাস ঐতিহ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌছে দেবার জন্য কারিতাস প্রতি বছরের মতো এবছরও এ উৎসবের আয়োজন করেছে।
কারিতাস’র আঞ্চলিক পরিচালক মি. ফ্রান্সিস ব্যাপারী বলেন, এক সময় রাখাইন শিশুরা তাদের ভাষায় কথা বলতে পারলেও লিখতে পারত না। শিশুদের মাতৃভাষা শিখানের জন্য ভাষা কেন্দ্র চালু হওয়ায় এখন তারা লিখতে ও পড়তে পারে। কারিতাস রাখানদের সংস্কৃতি ধরে রাখতে এ অঞ্চলে কাজ করে যাচ্ছে।