Home রাজনীতি এক দফার আন্দোলনে এবি পার্টির সংহতি

এক দফার আন্দোলনে এবি পার্টির সংহতি

25

স্টাফ রিপোটার: সরকারের পদত্যাগে ১ দফা আন্দোলনের প্রতি সংহতি ও রাষ্ট্র মেরামতের অঙ্গীকারসহ এবি পার্টি ঘোষিত ২ দফা’র ভিত্তিতে সকল দলের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়ে আগামী শুক্রবার রাজধানীতে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষনা করেছে এবি পার্টি।

বুধবার ঢাকার বিজয়নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত ও উপস্থিত সংবাদ কর্মীদের সামনে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এই ঘোষনা দেয়া হয়।

আমার বাংলাদেশ পার্টি; এবি পার্টি’র আহ্বায়ক সাবেক জনপ্রশাসন সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরী মিডিয়া ব্রিফিংয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এতে দলের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। ব্রিফিংটি সঞ্চালনা করেন দলের যুগ্ম আহবায়ক অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।

স্বাগত বক্তব্যে এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবির প্রতি আমার বাংলাদেশ পার্টি সংহতি প্রকাশ করছে। সেই সাথে এবি পার্টি রাষ্ট্র মেরামতের রুপরেখা নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নে সকল দলের ঐক্যমত প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। শুধু সরকার পরিবর্তনেই এই রাষ্ট্রের কোন পরিবর্তন অতীতে সাধিত হয়নি, ভবিষ্যতেও হওয়ার সম্ভাবনা নাই। তিনি রাষ্ট্র মেরামতে সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ ভুমিকা রাখার উদাত্ত আহ্বান জানান।

১ দফা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে আগামী শুক্রবার রাজধানীতে বিক্ষোভসহ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষনা করে লিখিত বক্তব্যে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন; গতবছরের ডিসেম্বর মাসে এবি পার্টির পক্ষ থেকে ‘দুই দফা’র দাবিতে আমরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম। আমাদের সেই ‘দুই দফা’ ছিল; অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ-নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্র মেরামত ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা।
২০১৪ সাল থেকে পরিকল্পিতভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলার কারনে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে আজ জবাবদিহিতা বিহীন ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের মাথা আজ এতটাই হেট হয়ে গেছে যে, আমাদের গণতন্ত্র, ভোট ব্যবস্থাপনা, মানবাধিকার ইত্যাদির কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞা সহ নানা ধরনের স্যাংশন ঝুলে আছে জাতির গলায়। প্রশাসন যন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে নিবর্তনমূলক মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে এবি পার্টি সবসময় প্রতিবাদ এবং ধিক্কার জানিয়ে এসেছে। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের মানুষের মতামত ও দাবিকে উপেক্ষা করে দমন-নিপীড়ন চালানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগকেও উপুর্যুপুরি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আজ দুঃখ ও হতাশার পুঞ্জীভূত ক্ষোভে জন-মানুষের দাবি’র প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে আমরা আমাদের দুই দফা দাবির পাশাপাশি “অবিলম্বে বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন”র ‘এক দফা’ দাবির প্রতি সংহতি ঘোষনা করছি। এবি পার্টি আগামী শনিবারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সফররত মিশনের সাথে বৈঠকেও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্দলীয় নির্বাচনকালীন সরকারের ব্যাপারে গুরুত্ব আরপ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিএনপি’র সাথে যুগপৎ আন্দোলনে শামীল না হয়েও চলমান আন্দোলনে স্বতন্ত্র অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদকে পরাস্ত করতে হলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সংগ্রামরত সকল রাজনৈতিক শক্তিকে একযোগে রাজপথে নামতে হবে। আমরা অধিকার সচেতন একটি গণতান্ত্রিক সংগ্রামের স্বতন্ত্র ধারা গড়ে তুলতে চাই, তাই অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট, জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার ও গণতন্ত্রের চলমান সংগ্রামের এই পর্বে কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে স্বাধীনভাবেই সকলের অংশগ্রহণ করা উচিত বলে মনে করি। ফলে আমাদের দল নিজস্ব নীতি ও পরিকল্পনার আলোকে অতীতের মত স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে ‘এক দফা’র প্রতি সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি ‘দুই দফা’ দাবিতে সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবে।

আগামী ১৪ জুলাই, শুক্রবার বিকেল তিনটায় বিজয়-৭১ চত্ত্বরে এবি পার্টি বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নতুন ধারার আন্দেলনের সূচনা’র আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই ফ্যাসিবাদী সরকারের সকল জুলুম ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে জনগনের গনতান্ত্রিক ও ভোটাধিকার রক্ষায় এবি পার্টি জীবন বাজি রেখে লড়াই চালিয়ে যাবে। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে গনতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলন ও সংগ্রামে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুণর্বাসনে যথাসাধ্য ভূমিকা রাখার অঙ্গীকার পূণর্ব্যাক্ত এবং রাজনৈতিক ও গায়েবী মামলায় আটক সকল রাজবন্দির নি:শর্ত মুক্তি দাবি জানানো হয়।

মিডিয়া ব্রিফিংয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বিএম নাজমুল হক, সিনিয়র সহকারী সদস্য সচিব আনোয়ার সাদাত টুটুল, আব্দুল বাসেত মারজান, প্রকৌশলী মোহাম্মদ লোকমান, যুবনেতা শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, মেহেদী হাসান চৌধুরী পলাশ, ফিরোজ কবির, মোহাম্মদ প্রিন্স, কেফায়েত হোসেন তানভীর, আলী নাসের খান, আব্দুল হালিম নান্নু, সুমাইয়া শারমিন ফারহানা, আমেনা বেগম, ফেরদৌসী আক্তার অপি, সুলতানা রাজিয়া, শিলা আক্তার, প্রকৌশলী নুর মোহাম্মদ, জামিল আব্দুর রব, আব্দুল মান্নানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।