Home জাতীয় ‘উইমেন ইন লিডারশিপ’ প্রোগ্রামের অধীনে অনলাইন কোর্স চালু করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল

‘উইমেন ইন লিডারশিপ’ প্রোগ্রামের অধীনে অনলাইন কোর্স চালু করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল

22

ডেস্ক রিপোর্ট: ব্রিটিশ কাউন্সিল সম্প্রতি এর ‘উইমেন ইন লিডারশিপ’ (ডব্লিউআইএল) প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারী নারীদের প্রথম দলের জন্য আট সপ্তাহব্যাপী অনলাইন সেলফ-অ্যাকসেস লিডারশিপ অনলাইন কোর্স চালু করেছে। লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব ও পিয়ার মেন্টরিং প্রোগ্রামের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে ২০২৪ এর ডব্লিউআইএল প্রোগ্রাম। এ প্রোগ্রাম ২০২০ সাল থেকে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতে এবং নিজ নিজ খাত ও কমিউনিটিতে নারীদের নেতৃত্বের বিকাশে ভূমিকা রাখতে উদীয়মান নারী নেতৃত্বদের নেতৃত্ব অর্জনে প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা করা।

ব্রিটিশ কাউন্সিল, ক্লোর সোশ্যাল লিডারশিপ ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সাথে অংশীদারিত্বে এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস উইমেন নেটওয়ার্কের (বিসিএসডব্লিউএন) সহযোগিতায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ ২০২৪ উইমেন ইন লিডারশিপ (উইল) প্রোগ্রাম আয়োজন করেছে। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিসিএসডব্লিউএন’র ৩০ জন উদীয়মান নারী নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন খাতের ২০ জন তরুণ নারী পেশাজীবী ডিজিটাল ফেলোশিপের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব বিষয়ক সক্ষমতা এবং দক্ষতা বিকাশের সুযোগ পাবেন। যার মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণ, অনলাইন নেটওয়ার্কিং, মেন্টরশিপ এবং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করা সুযোগ। এ প্রোগ্রামে ছয়টি ভার্চুয়াল স্পিড মেন্টরিং সেশন আয়োজনে করা হবে, যেখানে অংশ নিবেন দেশের বিশিষ্ট এবং খ্যাতিমান নারী কর্মীবৃন্দ, যারা লিঙ্গ সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ক্ষেত্রে নেতৃত্বদান সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। এছাড়াও, এ প্রোগ্রামে আয়োজন করা হবে ছয়টি ওয়েবিনার। ওয়েবিনারগুলোতে অংশগ্রহণকারীরা কী শিখেছেন, তাদের ভাবনা ও অভিজ্ঞতা এবং প্রকল্প থেকে তাদের অর্জনগুলো সবার সাথে ভাগাভাগি করার এবং এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোকপাত করার সুযোগ পাবেন। আগামী মার্চে ঢাকায় একটি দিনব্যাপী নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট (উইল সামিট) আয়োজন করা হবে, যেখানে শীর্ষস্থানীয় ভূমিকায় কর্মরত নারীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ভিত্তিক ক্ষেত্র নিয়ে নীতিনির্ধারক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়েরসুযোগ পাবেন।

অংশগ্রহণকারীরা অনলাইন কোর্স ও পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের নেতৃত্ব দক্ষতা বিকাশ এবং নিজ দেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে আন্তঃ-সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করার সুযোগ পাবেন। শীর্ষস্থানীয় ভূমিকায় কর্মরত নারীরা কীভাবে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে নিজ নিজ খাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ও উদ্ভাবন প্রভাবিত করার মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা অর্জন ত্বরান্বিত করা যায় তা তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। অংশগ্রহণকারীরা লিঙ্গ-সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার সুযোগ পাবেন। যার মাধ্যমে এ প্রোগ্রাম সামাজিক পুঁজির প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।

উইল প্রোগ্রামে পঞ্চাশ জন বৈচিত্র্যময় অংশগ্রহণকারীর দল অংশগ্রহণ করবে। এ দলে থাকবেন বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক থেকে ত্রিশজন সরকারি কর্মজীবী নারী এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল অ্যালামনাই নেটওয়ার্কের বিশজন নারী পেশাজীবী। উল্লেখ্য, গত ২২ জানুয়ারি ত্রিশজন সরকারি কর্মজীবী নারীদের প্রথম ব্যাচ সফলভাবে ভার্চুয়াল ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা বলেন, “ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে লিঙ্গ-সমতা এবং নারী নেতৃত্ব বৃদ্ধি করা বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের অন্যতম লক্ষ্য। এই লক্ষ্যের সাথে একাত্মতা রেখে গৃহীত এই প্রোগ্রাম নারী নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে নারীরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা ক্যাডার সার্ভিসকে যেমন শক্তিশালী করে যাচ্ছি, তেমনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ইতিবাচক উদাহরণ তৈরি করছি। এই অংশীদারিত্বমূলক উদ্যোগ বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পেশাজীবীদের ক্ষমতায়নের জন্য একটি ন্যায্য পরিবেশ তৈরিতে অবদান রাখবে এই প্রকল্প।”

ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিশসা বলেন, “বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে বলা যায় যে, রাজনীতি, বিনোদন, ব্যবসা ও আইটি সহ অন্যান্য খাতের নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকায় নারীদের প্রতিনিধিত্ব অনেক কম। ব্রিটিশ কাউন্সিল উইমেন ইন লিডারশিপ (উইল) প্রোগ্রামের মাধ্যমে নারী নেতৃত্বের উন্নয়নে অবদান রাখতে পেরে গর্বিত। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৩০৪ জন শীর্ষস্থানীয় ভূমিকায় কর্মরত নারীদের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। প্রোগ্রামটি ক্লোর সোশ্যাল লিডারশিপ (ইউকে) এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের (বাংলাদেশ) সাথে অংশীদারিত্বে পরিচালিত হয়। এ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ, মেন্টরশিপ (পরামর্শ) ও নেটওয়ার্কিংয়ের পাশাপাশি ডিজিটাল ফেলোশিপ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।”