Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ইউপিডিএফের ৪ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

ইউপিডিএফের ৪ নেতাকে হত্যার প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

18

জাবি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে প্রসীতপন্থি ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা বিপুল চাকমাসহ ৪ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেল আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে এ হত্যাকাণ্ডকে জঘন্য, ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান বক্তারা।

ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিব জামানের সঞ্চালানায় ইংরেজি বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, খাগড়াছড়িতে যে হত্যাকান্ড হয়েছে তা দেশের বিচার ব্যবস্থা এবং আইনের শাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। পাহাড়ি আদিবাসীরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। আদিবাসী জুম্মুদের উপর সংঘটিত গণহত্যা কেবল সেই ১৯৮০ সালের ২৫ই মার্চ কলমপতি গণহত্যার মধ্য সীমাবদ্ধ থাকেনি। কলমপতি গণহত্যার পর আরো অনেক গণহত্যা চালিয়েছিলো সেনাবাহিনী এবং সেটেলার বাঙালীরা। যারাই আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে কথা বলে তাদেরকেই নিরাপত্তার হুমকির মুখোমুখি হতে হয়েছে এবং গুমের শিকার হতে হয়েছে। ইউপিডিএপের নেতাদের হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী কনোজ কান্তি রায় বলেন, ইউপিডিএফের নিহত ৪ জন কোন নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য নয়। কিন্তু তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। পাহাড়ীদের বাঙালি হয়ে যাওয়ার যে আহ্বান, তা অপমান করার আহ্বান। বেঁচে থাকার জন্য তারা লড়াই করছে। পাহাড়ে বারবার খুন, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এরকম দেশে অনেকেই হত্যার শিকার হয়েছে কিন্তু কোন বিচার হয়নি। পাহাড়ে এখন সেনা শাসন চলছে। দেশজুড়ে ঘুম, খুনের দামা ঢোল বাজছে। এদেশের মানুষ এখনো দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এ মানববন্ধন থেকে আমরা দাবি করছি, পার্বত্য চট্টগ্রামে সকল ঘুম, খুন বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।

জাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সংগঠক সোহাগী সামিয়া বলেন, একটা সভা করতে যাওয়ায় কিভাবে নির্মমভাবে তাদেরকে হত্যা করা হলো। এটা পরিকল্পিত হত্যা ছাড়া কিছুই নয়। হত্যার পিছনে সেনাবাহিনী বা দুর্বৃত্তদের হাত রয়েছে। আমরা বলতে চাই এ হত্যার সাথে জড়িতদের অনতিবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে। নইলে আমরা ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এর আগে, গতকাল সোমবার রাতে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফতেহপুর এলাকায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা, খাগড়াছড়ি জেলা সহ-সভাপতি লিটন চাকমা, পিসিপির সহ-সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা ও ইউপিডিএফের সদস্য রুহিনসা ত্রিপুরাকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের গোলাগুলিতে নিহত হন তারা।

এ ঘটনায় গণতান্ত্রিক ইউপিডিএফকে দায়ী করেছেন ইউপিডিএফের সংগঠক অংগ্য মারমা। এ সময়, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা হরি কমল ত্রিপুরাসহ দুজনকে অপহরণ করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানান মারমা।