Home সারাদেশ রাণীশংকৈল মডেল স্কুলে ভর্তি নিয়ে শিক্ষক অভিভাবক থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

রাণীশংকৈল মডেল স্কুলে ভর্তি নিয়ে শিক্ষক অভিভাবক থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

77

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি।।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় জাতীয়ভাবে পুরস্কারপ্রাপ্ত দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক ধিরেন, শেফালীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়েছে। পক্ষে বিপক্ষে স্যোশাল মিডিয়ায় ভিডিও ভাইরাল, থানায় সাধারণ ডায়েরী, শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে এদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়েছে।

জানাযায়, ওই স্কুলে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়ে রয়েছে। হঠাৎ করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সরকারি কারিকুলামকে সমস্যা দেখিয়ে সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৬ষ্ঠ-৮ম শ্রেণির ভর্তি বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে অভিভাবক ও পৌর শহরের স্থানীয়রা। এরই প্রেক্ষিতে গত ৩ ডিসেম্বর নওরোজ কাউসার কাননকে সাথে নিয়ে প্রায় ১০০ জন অভিভাবক বিদ্যালয়ে জড়ো হয়। পরে ১৫ থেকে ২০ জন অভিভাবক প্রধান শিক্ষকের রুমে প্রায় আধা ঘন্টা অপেক্ষার পর ও প্রধান শিক্ষক তার চেয়ারে এসে বসে।

এসময় অভিভাবকরা ভর্তি কেন বন্ধ করা হয়েছে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা ছেলিমা সিদ্দিকা আলাপচারিতার এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে বলেন, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত একরকম কারিকুলাম এবং ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম পর্যন্ত নতুন কারিকুলাম হওয়ায় এটিকে সমস্যা মনে করায় ৬ষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি বন্ধ করার কথা বলেন। সরকরি ভাবে ভর্তির বন্ধের নির্দেশ আছে কিনা অভিভাবকরা প্রশ্ন করলে প্রধান শিক্ষক বলেন, ভর্তি বন্ধের ব্যাপারে সরকারি কোনো নির্দেশনা দেননি। এসব কথা শুনে অভিভাবক সদস্য কানন সহ অন্যান্য অভিভাবকরা বলে সরকারি নিয়মকে অবজ্ঞা করে আপনি ভর্তি বন্ধ করতে পারেন না। একথা শুনে অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হন।
এভাবে কথাকাটা কাটির এক পর্যায়ে দুই পক্ষেই উত্তেজিত হয়ে উঠে। এই উত্তেজিত ঘটনার দুপক্ষের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হলে বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়। ঘটনার প্রেক্ষিতে দুই পক্ষেই থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছে।ওই স্কুলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিউটি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা ছেলিমা আক্তার স্কুলের স্টাপ মিটিংয়ে বলেন এবার তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে কোন ছাত্র/ছাএী ভর্তি করাবেন না। প্রধান শিক্ষকের এমন মন্তব্য নিয়ে অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরা এর বিরোধিতা করেন। ভর্তি না নেওয়ার বিষয়টি তখনই অভিভাবক মহলের কাছে প্রকাশ পায়।

এ ব্যপারে অভিভাবক ও স্কুল কমিটির সদস্য সাবেক কাউন্সিলর সিরাজউদ্দিন সিরু, ইস্তেকার, মহসিন, কাউন্সিলর সেফাউল আলম, রুমা বসাক, সেলিনা আকতার, মুনজুরুল আলম, মাসুম, রফিকুল ইসলামসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা, সহকারী শিক্ষক ধীরেন্দ্রনাথ ও শেফালী খাতুনসহ কয়েকজনকে বদলী করলে সব ঠিক হয়ে যাবে, এরাই স্কুলে গ্রুপিং সৃষ্টির মূলহোতা।

এ ব্যাপারে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা ছেলিমা সিদ্দিকার সাখে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে আমি ব্যাস্ত আছি বলে ফোন কেটে দেন। সহকারী শিক্ষা অফিসার ঘ্যানশ্যাম রায় বলেন,বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে কোচিং বাণিজ্য ও তাদের মধ্যে অভ্যান্তরিণ কোন্দল নিয়েই মূলত গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বিধায় স্কুলটির শিক্ষা ব্যবস্তা ভেঙে পড়েছে। এ ব্যপারে পৌর মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত স্কুলটির বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে আমাকে অনেকে মৌখিক অভিযোগ করেছে স্কুলটির আগের সুনাম ফিরে পেতে প্রাথমিক অধিদপ্তরের দ্রুত সু দৃষ্টি কামনা করছি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রাহিমউদ্দিন বলেন,ওই ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্ত শিক্ষকদের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহণ করা হবে।

রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন,আমি বাকবিতন্ডার খবর পেয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।তিনি আরো বলেন শিক্ষা অফিসারের সাথে কথা বলে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং শিক্ষকদের অভ্যন্তরিণ কোন্দলের ব্যপারে ব্যবস্তা নেওয়া হবে।