ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি এবং সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং আমাদের সেগুলি অতিক্রম করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন এবং ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশসাশন পদক-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
অনুষ্ঠানে ২৭ জন কর্মকর্তা, তিনটি মন্ত্রণালয় ও একটি ইউনিটের কাছে পদক তুলে দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি, ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশনের প্রভাবে সারাবিশ্বে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশেও তার প্রভাব পড়েছে। এ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই।
তিনি বলেন, এজন্য হয়তো আমাদের পত্রপত্রিকা নানা কথা লিখবে ‘টক শো’তে নানা কথা বলবে, বিরোধী দলেরা নানা কথা বলবে। হ্যাঁ বিরোধী দল বলবেই কারণ বলাটাই তাদের কর্তব্য এবং তারা বলে যাক। কিন্তু আমাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা সঠিক পথে আছি কি না, সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করছি কি না, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি কি না এবং দেশের তৃণমূলের সাধারণ মানুষ যথাযথ সেবাটা পাচ্ছে কি না- আমরা যদি সেভাবে চিন্তা করি, তাহলে কে কি করলো সেদিকে আমাদের খুব একটা নজর দিতে হবেনা।
সমালোচনা শুনে কোথাও কোন ঘাটতি থাকার বিষয়টি পরীক্ষা করে নেয়া যেতে পারে মর্মেও অভিমত ব্যক্ত করে তিনি বলেন, কিন্তু এই কথা শুনে কেউ যেন বিভ্রান্ত বা হতাশাগ্রস্থ না হন- সেদিকে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, হতাশ হবার মত কিছু নেই। যখন যে অবস্থা হবে, তার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই আমাদের চলতে হবে এবং আমাদের নিজস্ব যতটুকু ব্যবস্থা আছে, সেটা নিয়েই আমরা চলবো।
এবার ‘সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা’য় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ‘উন্নয়ন প্রশাসনে’ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক পেয়েছে।
‘জনসেবায় উদ্ভাবন’ ক্ষেত্রে ‘সুরক্ষা অ্যাপ’-এর জন্য দলগতভাবে পুরস্কার পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, ঢাকার জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম এবং সুরক্ষা ডেভেলপার ইউনিট।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে একটি করে স্বর্ণপদক, সম্মাননা পত্র, ব্যক্তিগত অবদানের জন্য দুই লাখ টাকা এবং দলগত অবদানের জন্য ৫ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি প্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম।
এর আগে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জনপ্রশাসনের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
জনপ্রশাসনে কর্মরত কর্মচারীদের সৃজনশীল ও গঠনমূলক কার্যক্রম উৎসাহিত করার মাধ্যমে কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়নে উৎসাহিতকরণ ও সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অধিকতর গতিশীল করতে সরকার ২০১৬ সালের ২৩ জুলাই প্রথমবারের মতো জনপ্রশাসন পদক প্রদান শুরু করে। পরবর্তীতে ‘জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা ২০১৫ (২০১৬ সালে সংশোধিত)’ করা হয়। এ বছর সেই নীতিমালা বাতিল করে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা, ২০২২’ প্রণয়ন করা হয়।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী- সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন প্রশাসন, সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, মানব উন্নয়ন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন, দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা, অপরাধ প্রতিরোধ, জনসেবায় উদ্ভাবন, সংস্কার, গবেষণা এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক প্রদান করা হয়।