Home রাজনীতি আত্মশুদ্ধি নতুবা বিলুপ্তি-যে কোন একটি পথ বিএনপিকে বেছে নিতে হবে

আত্মশুদ্ধি নতুবা বিলুপ্তি-যে কোন একটি পথ বিএনপিকে বেছে নিতে হবে

79

*বিএনপির পাঁচটি অসুখ সারাতে এবার উচ্চ আদালত বসাবেন নাসিম

*বিএনপি পুনর্গঠনে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামছেন নাসিম

ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপি পুনর্গঠনের উদ্যোক্তা কামরুল হাসান নাসিম বলেছেন, ‘আত্মশুদ্ধি, নতুবা বিলুপ্তি- যেকোন একটি পথ বিএনপিকে বেছে নিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন নাসিম।

২০১৫ সালের ৯ জানুয়ারী বিএনপি পুনর্গঠনের ডাক দিয়ে দেশব্যাপি আলোচনায় আসেন তিনি। দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপির ‘পাঁচটি অসুখ’ হয়েছে বলে তিনি দলটির পুনর্গঠন করার ঘোষণা দেন। নাসিমের অভিযোগ- দলটি জাতীয়তাবাদী নয়, ‘জামায়াতেবাদী’ দল হয়ে পড়েছে। দলটি নাশকতাকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসাবে সঙ্গী করেছে। বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। জনস্বার্থ সংরক্ষণের রাজনীতি দলটি করছে না। এবং দুই শীর্ষ নেতৃত্ব বেগম জিয়া ও তারেক রহমান দল পরিচালনায় ব্যর্থ এবং প্রাসঙ্গিক বাস্তবতায় তারা দলের অবৈধ নেতৃত্ব।

এ অভিযোগগুলোকেই বিএনপির গুরুতর পাঁচটি অসুখ বলে চিহ্নিত করে এর সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছেন নাসিম। বিবৃতিতে তিনি জানান, অসুখগুলো সারিয়ে বিএনপিকে মূলধারার গণতন্ত্রমনা পরিচ্ছন্ন দল করতে বিশ্বাসযোগ্য কাউন্সিলের বিকল্প নেই।

নাসিম বলেন, “নয়া পল্টন কার্যালয়ের সামনে প্রতীকী উচ্চ আদালত বসিয়ে কাউন্সিল করতে হবে। পাঁচটি অসুখ সারাতে হবে। দল কোনো দণ্ডিত ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত হতে পারে না। আবার,দলের মধ্যেই যখন কোন গণতন্ত্র নেই, রাষ্ট্রের কাছে কেন তাহলে গণতন্ত্র চাওয়া হচ্ছে ? এই বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে এরা দানব হয়ে উঠবে। কাজেই পুনর্গঠন করেই বিএনপির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে হবে। পথ এখন দুইটা- আত্মশুদ্ধি, নতুবা বিলুপ্তি।”

বিএনপির এ সংস্কারের লক্ষ্যে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি অফিসের সামনে প্রতীকী উচ্চ আদালত বসানোর তারিখ ঘোষণা করবেন বলে বিবৃতিতে জানিয়েছেন নাসিম। নাসিম বলেন, “সুদীর্ঘ ৮ বছর লেগে থাকার পর বিএনপির অগণিত নেতাকর্মীসহ বিএনপি পুনর্গঠনের এ চূড়ান্ত উদ্যোগে দেশবাসীর সহযোগিতা চাই। সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং দেশের সকল নিবন্ধিত সংগঠনকেও পাশে চাই।”

প্রসঙ্গত, এ আন্দোলন শুরুর বছরটিতে অর্থাৎ ২০১৫ সালে নাসিম প্রায় ত্রিশটির মত কর্মসূচী রাখেন। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী জনতার নিম্ন আদালত বসাতে সক্ষম হন। সেই প্রতীকী আদালত থেকে দু’টো রায় পান। এক- দলের গঠনতন্ত্র স্থগিত করা হল। দুই- জাতীয়তবাদী জনতার উচ্চ আদালত দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বসবে। সংষ্কার প্রক্রিয়াকে চূড়ান্ত ফলফলের দিকে নিয়ে যেতে নাসিম ও তাঁর জাতীয়তাবাদী অনুসারীরা ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারী, ১৭ জানুয়ারী, ১৭ মে ও ৫ সেপ্টেম্বর মোট চারবার দলীয় বিপ্লবের মহড়ার আদলে বিএনপির নয়া পল্টন কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করেন এবং প্রতিবারই বাঁধার সম্মুখিন হন। এদিকে ২০২২ সালের শেষভাগেও নাসিমের একটি মিছিল কার্যালয় অভিমুখে গিয়েছিল,যা বিএনপির মুলধারার পক্ষ দ্বারা বরাবরের মতো প্রতিহত করা হয়।

লেখক, গবেষক, কবি, আবৃত্তিকার, গায়ক কিংবা নির্মাতা বিভিন্ন পরিচয়ে নিজের দার্শনিক অভিজ্ঞান নিয়ে মানুষের সামনে হাজির হলেও নিজের রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই মৃত্যুঝুঁকি জেনেও এ দলীয় বিপ্লবের পথে হাঁটছেন বলে বিবৃতিতে জানান নাসিম।

নাসিমের ভাষ্যে, “তারেক রহমানরা হিংস্র পশুর মতোই।”

নাসিম বলেন “ট্র্যাডিশনাল পলিটিক্স করতে যেয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠনেতাদের সাথে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েই পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করি। ঝুঁকি নিতে আমি পছন্দ করি। এই প্রক্রিয়ার গন্তব্য নির্ধারণ করার সময় হয়ে গেছে। এখন আর ৮ বছর ধরে অধারাবাহিক দলিয় বিপ্লবের মহড়া নয়,চূড়ান্ত পরিণতির দিকে যেতে চাইছি।”
“মানুষের মনে সাময়িকভাবে এ উদ্যোগটি উপদ্রব হিসেবে বিবেচিত হলেও একটা সময় তারা আমার কথা স্মরণ করবে। দল কোনো ব্যক্তির হতে পারে না। তবে একজন ব্যক্তিও রাজনীতির ক্যানভাসে রঙ বদলিয়ে দিতে পারে। যেমন বঙ্গবন্ধু কিংবা শেখ হাসিনা পেরেছেন।”-যোগ করেন নাসিম।

বিভিন্ন সময় তিনি ও তার জাতীয়তাবাদী অনুসারিদের ‘আসল বিএনপি’ বলে গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হলেও বিবৃতিতে এ দল কখনো আসল নকল হয়না জানিয়ে এ উদ্ধৃতির বিরোধিতা করেছেন নাসিম।