ডেস্ক রিপোর্ট: ভাগ্যের সন্ধানে ইউরোপে প্রবেশকালে ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ৮ বছরে ২৯ হাজারের বেশি অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়ার সময় কিংবা ইউরোপের স্থল সীমান্ত অতিক্রম করার সময় এবং ইউরোপে প্রবেশ করার পর এসব অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, গত দুই বছরেই অভিবাসী মারা গেছে অন্তত ৫ হাজার। জাতিসংঘের নিখোঁজ এজেন্সির বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান এই মৃত্যুর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

জানা যায়, অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রুট হলো কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগর। এই রুটে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজার ৮৩৬ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এসব অভিবাসী লিবিয়া ও তিউনিসিয়া থেকে ইউরোপে পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
এরপরই দ্বিতীয় মারাত্মক রুট হলো পশ্চিম আফ্রিকা থেকে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের আটলান্টিক রুট। এই রুট পাড়ি দিতে গিয়ে ২০২১ সালের পর থেকে দেড় হাজারের বেশি অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার দাবি, সাগরে বহু জাহাজের ধ্বংসাবশেষ তারা পেয়েছেন। এসব জাহাজ বা নৌকার অভিবাসীদের হিসাব তাদের জরিপে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে আরও বেশি হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের সীমান্তবর্তী অন্যান্য অঞ্চলের পাশাপাশি গ্রিস, পশ্চিম বলকান এবং ইংলিশ চ্যানেলেও অভিবাসী মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান হার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সম্প্রতি এসব রুটে বহু অভিবাসীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

আইওএম এর মিসিং মাইগ্রান্ট প্রজেক্টের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুর্দশার মধ্যেও কার্যকর সহায়তার মাধ্যমে অনেক অভিবাসীর মৃত্যু রোধ করা সম্ভব। পুশব্যাকের কারণেও ২৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবদেনে তুলে ধরা হয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, পুশব্যাক বেআইনি। কারণ পুশব্যাকের মাধ্যমে অভিবাসীদের আশ্রয় চাওয়ার অধিকার লঙ্ঘিত হয়। এমনকি পুশব্যাকের ফলে শেষ পর্যন্ত তারা সাগরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

এক জরিপে বলা হয়েছে, পুশব্যাকে ভূমধ্যসাগরের কেন্দ্রে ৯৭ জন, পূর্বে ৭০ জন ও পশ্চিমে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া একই কারণে তুরস্ক-গ্রিস স্থল সীমান্তে ৫৮ জন এবং বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে ৪ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। তবে প্রতিবেদনের এই মৃত্যুর সংখ্যা মূলত প্রকৃত সংখ্যা নয় বলে স্বীকার করা হয়েছে। বরং এই সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে।
আমাদের সময়.কম