Home বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আগামী দিনের শিক্ষা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল: মোস্তাফা জব্বার

আগামী দিনের শিক্ষা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল: মোস্তাফা জব্বার

31

স্টাফ রিপোটার: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, আগামী দিনের শিক্ষা হবে সম্পূর্ণ ডিজিটাল । বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থায় অর্জিত সনদ আগামীর প্রযুক্তি সভ্যতার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী নয়। নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে নিজেকে টিকে থাকার উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, দেশে দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে সরকার শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে দেশের দুর্গম অঞ্চলে সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের সুযোগ পৌঁছে দিতে ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পার্বত্য অঞ্চলের ২৮টি পাড়া কেন্দ্রে ডিজিটাল শিক্ষার অভিযাত্রা শুরু হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকার আইডিইবি মিলনায়তনে কবি নজরুল শিশু দিগন্ত, ময়মনসিংহ আয়োজিত শিশু কিশোর মিলন মেলায় ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশ ও শিশু কিশোরদের মেধা বিকাশে বিজয় শিশু শিক্ষার ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
কবি নজরুল শিশু দিগন্ত-এর সভাপতি এডভোকেট রায়হানা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিজয় ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে শিশু শিক্ষা বিষয়ক ভূমিকা উপস্থাপন করেন বিজয় ডিজিটাল-এর প্রধান নির্বাহি জেসমিন জুঁই। অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষা হামিদা আলী, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়াল, সুবিধা বঞ্চিত অঞ্চলে শিশুদের মধ্যে ডিজিটাল শিক্ষা বিস্তার সংক্রান্ত প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবদুল ওয়াহাব, বাংলাদেশ শিশু মেলা সোসাইটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শহীদুল্লাহ আনসারী, আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য কাব্য পরিষদের চেয়ারম্যান কবি নজরুল ইসলাম বাঙ্গালি, কবি নজরুল শিশু দিগন্তের সাধারণ সম্পাদক মো: রুহুল আমিন বাদল এবং অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহবায়ক গাজী আলম ভূইয়া বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রী শিশু কিশোরদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ তোমারাই হচ্ছ স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বড় শক্তি। তোমরা যদি ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন না কর, ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার না জান তবে আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সফল হবো না।’ পৃথিবীর বড় লাইব্রেরি হচ্ছে ইন্টারনেট। এ থেকে শিশুদের বঞ্চিত রেখে আগামী দিনের উপযোগী শিক্ষা অর্জন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরের চেয়ে ভাল কাজ হতে পারে না। শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরে ১৯৮৭ সাল থেকে দীর্ঘ পথচলায় নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখী হয়েও শিশু শিক্ষার জন্য সফটওয়্যার বানিয়েছি। যে শিশুরা পড়তে চায় না তাদের আগ্রহ সৃষ্টিতে ডিজিটাল কন্টেন্টে পাঠ প্রদানের ফলপ্রসূ অবদান তুলে ধরে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেন, শিশুরা খেলার ছলে তাদের এক বছরের সিলেবাস ২ মাসের মধ্যে শেষ করতে সক্ষম। নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলায় একটি ডিজিটাল স্কুলের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতেই হবে। তিনি বলেন নতুন প্রজন্মকে ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহারে দক্ষ করে তুলতে পারলে ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ। ডাক ও টেলিযোাগাযোগ মন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট মানুষ চেয়েছেন উল্লেখ করে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তুমি স্মার্ট হলে বাংলাদেশ স্মার্ট হবে। শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের স্বপ্নদ্রষ্টা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, এখনকার যুগে বাস করে তোমরা যদি কোন ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করতে না পার তবে তোমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। প্রচলিত শিক্ষা প্রতিনিয়তই বদলাচ্ছে। ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কাগুজে বইকে বিদায় করে ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে তোমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হবে। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়, যেদিন প্রতিটি শিক্ষার্থী ব্যাগে বই নয়, একটি ল্যাপটপ নিয়ে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। ২০১৫ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা দিয়েছিলেন। তোমার উপরই নির্ভর করবে তোমার পরিবার, সমাজ সর্বোপরি দেশের রূপান্তর। তিনি বলেন, সবার উপরে দেশ। দেশের চেয়ে বড় কিছু হতে পারে না।
মূল ভূমিকায় বিজয় ডিজিটাল এর সিইও জেসমিন জূঁই বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অন্যতম প্রধান উপকরণ হচ্ছে ডিজিটাল কনটেন্ট। তিনি বলেন, একটি ভাল কনটেন্ট শিশুদের ভাল বন্ধু। উন্নত জাতি বিনির্মাণে মানসম্মত ডিজিটাল শিক্ষার জন্য মান সম্মত একটি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করা অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জ। গত তের বছরে বিজয় ডিজিটাল সে চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরিতে মাননীয় মন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টার বিবরণ শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি শিক্ষার্থীদের ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মূল কারিগর আখ্যায়িত করেন। তিনি প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম ডিজিটাল কনটেন্টে রূপান্তরের অংশ বিশেষ মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে জনাব ওহাব বলেন যে ডিজিটাল শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন তার জীবনের সেরা আনন্দের বিষয়।