Home কৃষি উপকূলীয় বিস্তির্ন মাঠ জুড়ে কাঁচা-পাকা সোনালী ধান।।কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষকরা

উপকূলীয় বিস্তির্ন মাঠ জুড়ে কাঁচা-পাকা সোনালী ধান।।কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছে কৃষকরা

30

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: হালকা বাতাসে সমুদ্র উপকূলীয় বিস্তির্ন মাঠ জুড়ে কৃষকের স্বপ্নের সোনালী ধানের শীষ দোল খাচ্ছে। মাঝে মধ্যে দুই একটি পাখি কিটপতঙ্গ খাওয়ার আশায় হানা দিচ্ছে ক্ষেতে। ইতোমধ্যে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে শীষ। আর ক’দিন পরেই পটুয়াখালীর কলাপাড়ার গ্রামীণ জনপদে শুরু হবে ধান কাটা, মাড়াই ও নতুন ধান ঘরে তোলার মহোৎসব। তাই প্রতিটি কৃষক পরিবারের চোখে মুখে লেগে আছে সোনালী স্বপ্ন পূরনের ছাপ। এ উপজেলায় দু’টি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নে কৃষক পরিবার রয়েছে ৩৫৫০০। মোট জমি ৪৯২১০ হেক্টর। এ বছর ৩১২৪০ হেক্টরে আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ২২৫৫০ হেক্টরে মৌসুমি উফশী রোপা আমন ও ৮১৫০ হেক্টর জমিতে মৌসুমি স্থানীয় রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন কৃষকরা। এছাড়া সবজি চাষ করা হয়েছে ৫৪০ হেক্টর জমিতে। তবে ঘূর্নিঝড় সিত্রাংয়ে ধানের আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ জমির পরিমান ৯২১ হেক্টর। আংশিক ক্ষতি ৫% হারে সম্পুর্ন ক্ষতির পরিমান ৪৬.০৫ হেক্টর। এছাড়া সবজি ফসলে ৫৪ হেক্টর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ২০% হারে সম্পুর্ন ক্ষতি ১০.০৮ হেক্টর বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।
বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ জুড়ে কাঁচা-পাকা ধানের ফসলি ক্ষেত যেন দিগন্ত ছুঁয়ে গেছে। কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হবে ধান তোলার পালা। তাই ধান কাটার জন্য নতুন কাস্তে তৈরী করতে দিয়েছে অনেকে। কেউ আবার পুরাতন কাস্তে মেরামত করাচ্ছে কামার বাড়িতে। কেউ কেউ মেশিন দিয়ে ধান কাটার জন্য আগাম বায়নাও দিয়ে রেখেছেন। এছাড়া অনেকেই ধান রাখার জন্য বাড়ির আঙ্গিনা সুন্দর ভাবে পারিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। এ জনপদে কৃষকদের যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। তবে ফরিয়া বা মধ্যস্বত্বভোগীদের আনাগোনা আর তৎপরতায় ফসলের কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া নিয়ে কৃষকদের মধ্যে রয়েছে শঙ্কা।
কৃষকরা জানান, আগে প্রতি ২৬৬ শতক জমি চাষাবাদ থেকে শুরু করে মাড়াই পর্যন্ত খরচ হতো ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এ বছর একই জমিতে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া বাজারের দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্বগতির কারনে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা মজুরিতেও শ্রমিক পাচ্ছেনা।
উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের নাচনাপাড়া গ্রামের কৃষক মিলন মিয়া বলেন, ঘুর্নিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষেতের তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। সার-ঔষধ প্রয়োগ ও ক্ষেতের নিয়মিত পরিচর্যা করে এ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে।
নবীপুর গ্রামের কৃষক নিঠুর হাওলাদার বলেন, প্রথম দিকে বৃষ্টি না থাকায় জমিতে চাষ করতে একটু দেরি হয়েছে। তার পরও এ বছর ক্ষেতের ফসল ভাল। ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া গেলে দুই-চার দিনের মধ্যেই ক্ষেতের ধান কাটা হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমআরএম সাইফুল্লাহ বলেন,ঘুর্নিঝড় সিত্রাংয়ে এ উপজেলায় কৃষকদের আমন ধান ক্ষেতের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। তবে আবহাওয়া অনুকলে থাকলে কৃষকরা কাঙ্খিত ক্ষেতের ফসল সুন্দর ভাবে কাটতে পারবে বলে তিনি জানিয়েছেন।