Home বাণিজ্য ও অর্থনীতি ৪০০ কোটি টাকার ঘূর্ণমান তহবিল করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন

৪০০ কোটি টাকার ঘূর্ণমান তহবিল করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন

46

ডেস্ক রিপোর্ট: বিতরণকৃত ঋণের অর্থ ও নিজস্ব তহবিলের অর্থের সমন্বয়ে ৪০০ কোটি টাকার একটি রিভলভিং ফান্ড বা ঘূর্ণমান তহবিল গঠন করেছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশন। এই তহবিলের অর্থে উদ্যোক্তাদের আবার ঋণ দেবে সংস্থাটি। এ লক্ষ্যে আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ১৪টি ব্যাংক ও ৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সংস্থাটি।

এসএমই ফাউন্ডেশন জানায়, তারা ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির আওতায় ঘূর্ণমান তহবিল পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যে নীতিমালাও তৈরি করেছে। ঘূর্ণমান তহবিল তৈরির এ কাজে এসএমই ফাউন্ডেশনকে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।

করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের দুই ধাপে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছিল ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশন। সরকারি আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় এ ঋণ দেয় সংস্থাটি। এখন সেই ঋণের টাকা সুদসহ ফিরে আসছে। গ্রাহকদের পরিশোধ করা সেই অর্থ আর এসএমই ফাউন্ডেশনের নিজস্ব অর্থের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ৪০০ কোটি টাকার এই ঘূর্ণমান তহবিল।

এই তহবিলের অর্থ ঋণ আকারে পুনরায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিতরণ করবে সংস্থাটি। নতুন তহবিলের ঋণের বিপরীতেও উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ৪ শতাংশ হারে সুদ নেওয়া হবে। একজন গ্রাহক সর্বনিম্ন ১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন।

এসএমই ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যে ১৭টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চুক্তি হয়েছে, সেগুলো হলো ব্র্যাক ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, দি সিটি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সীমান্ত ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, আইপিডিসি ফাইন্যান্স ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।

সংস্থাটি জানিয়েছে, নতুন নীতিমালা অনুসারে গ্রামীণ ও প্রান্তিক পর্যায়ের অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। এর মধ্যে অঞ্চল বা ক্লাস্টারভুক্ত উদ্যোক্তা, নারী, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, শারীরিকভাবে সক্ষম নন ও এখনো যাঁরা ব্যাংক থেকে ঋণ পাননি, এমন উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত বাণিজ্য সংগঠন, এসএমই অ্যাসোসিয়েশন, নারী-উদ্যোক্তা সংগঠন, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সমিতি (নাসিব) ও উদ্যোক্তাদের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেন এমন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সুপারিশ করা উদ্যোক্তাদেরও ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ঋণ পরিশোধের জন্য গ্রাহকদের তিন বছর পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে।

ঋণগ্রহীতারা ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৩০টি মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। মোট ঋণের ২৫ শতাংশ পাবেন নারী উদ্যোক্তারা। আর ৩০ শতাংশ উদ্যোক্তার ঋণ হবে ১০ লাখ টাকা বা এর চেয়ে কম।

ক্লাস্টার ও সেক্টরের ভ্যালু চেনের উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ ঋণ ব্যবসা বা ট্রেডিং খাতে দেওয়া যাবে। থাকবে গ্রুপভিত্তিক ঋণের ব্যবস্থা। ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্ক ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ পাঁচজন উদ্যোক্তার অনুকূলে গ্রুপভিত্তিক ঋণ মিলবে। আর ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম নিয়মিত তদারক করবে এসএমই ফাউন্ডেশন। তবে মুদি, হার্ডওয়্যার ও ওষুধ বিক্রেতার মতো অনুৎপাদনশীল খাত এবং ইটভাটা ও তামাকজাত দ্রব্যের মতো পরিবেশদূষণকারী ব্যবসায়ীদের এ ঋণ দেওয়া হবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা অংশীদার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে জামানতবিহীন ঋণ দিতে উৎসাহিত করব, যাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সহজ প্রক্রিয়ায় ঋণ নিতে পারেন। বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ সংখ্যায় ঋণ দেওয়ার চেষ্টা করব।’
প্রথমআলো