Home সারাদেশ ২৫ বছর পর খোঁজ পেল শাহানারার মাকে

২৫ বছর পর খোঁজ পেল শাহানারার মাকে

96

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:০ দীর্ঘ ২৫ বছর পর মাকে খুঁজে পেয়ে এখন আনন্দে ভাসছেন শাহানারা। সে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসর ইউনিয়নের পশ্চিম ধুলাসর গ্রামের আলী হোসেন ও শিরিন বেগমের মেয়ে। মাত্র ৬ বছর বয়সে হারিয়ে যায় শাহানারা। ভুলে গিয়েছিলো বাবা ও মায়ের নাম পরিচয়। বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পারিষদে মা এবং মেয়ের সঙ্গে দেখা হয়। সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শিরিন তার মেয়েকে দেখেই চিনতে পারেন। পরে ছোট বেলায় শাহানারা হাঁটুর নিচে গরম পানি পড়ে পুড়ে যাওয়া দাগ দেখে শনাক্ত করেন তার মেয়েকে।
স্থানীয় ও পরিবরিক সূত্রে জানা গেছে, শৈশবে তার হারিয়ে যাওয়াও ছিলো আরেক করুণ গল্প। তখন বয়স ছিলো ৬ বছর। বাবা মায়ে সংসারে ছিলো খুব অভাব। এ অবস্থায় তাদের মেয়েকে এক ব্যক্তির বাসায় কাজে দেন। একটি গ্যাস ভাঙার অপরাধে শাহানারাকে মারধর করে। এর ফলে সেখান থেকে পালিয়ে লঞ্চ যোগে চলে যায় বরিশাল। এদিকে মা শিরিন বেগম মেয়েকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। তাকে না পেয়ে তিনি অনেকটা পাগলের মতো হয়ে যান।
শাহানারা বলেন, গত কয়েক মাস আগে আমি সরকারিভাবে মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে ট্রেনিং করতে এই গ্রামে আসি। আসার পর থেকেই কেমন যেনো আমার কাছে এই গ্রামটা পূর্ব পরিচিত মনে হয়। এক পর্যায়ে স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যান ও অনেকের সহযোগিতায় আমি আমার পরিবার এবং মাকে খুঁজে পাই। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাই যে আমার হারানো পরিবারকে খুঁজে পেয়েছি।
পরিবারকে ফিরে পেয়ে জীবনের নতুন অধ্যায়ের কথা বলছেন ফিরে আসা শাহানারা, তখন আমি কিভাবে বরিশাল যাই, সেটুকু আমার মনে নেই। তবে ওখানে এক মহিলা আমাকে পেয়ে বরিশালের একটি এতিম খানায় দিয়ে আসে। পরে আমি সেখানেই বড় হই। সেখানে আমার নাম রাখা হয় ইয়াসমিন। এক পর্যায় গত ১৬ বছর আগে আমাকে বিয়ে দেন জেলা প্রশাসক। আমি এখন পরিবারের সাথে বরিশাল বসবাস করছি।
ধুলাসর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ আব্দুর রহিম বলেন, আমার কাছে আসার পরে আমি বিভিন্ন স্থানে খোঁজখবর নিয়ে তার পরিবারের সন্ধান পাই। পরে তার হারিয়ে যাওয়ার কথা উভয় পক্ষের কাছে শুনে নিশ্চিত হই যে, সেই হারিয়ে যাওয়া মেয়েটি এই শাহানারা। তিনি তার মায়ের কাছে এবং পরিবারের কাছে ফিরেছেন।