Home সারাদেশ ২২ মার্চ মেহেন্দিগঞ্জে ১৭৩টি গৃহহীন পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী।

২২ মার্চ মেহেন্দিগঞ্জে ১৭৩টি গৃহহীন পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী।

33

বরিশাল অফিস: আগামী ২২ মার্চ (বুধবার) সারা দেশের সাথে একযোগে স্থায়ী ঠিকানা পাচ্ছেন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার গৃহহীনরা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে তৃতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে ১৭৩টি গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গৃহহীনদের ঘর দেয়ার বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা পূরণ করছে আওয়ামীলীগ সরকার। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত ৪২৫টি পরিবারকে ৭০০ বর্গফুটের বাড়ি দেয়া হচ্ছে। মুজিবর্ষের আয়োজন সার্থক করতে নেয়া হয়েছে এই উদ্যোগ।

এদিকে প্রকৃত গৃহহীনরাই যাতে এই ঘরে ঠাঁই পান সে লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যাচাই-বাছাই করা হয়েছে কয়েক ধাপে। প্রকল্পটি সরাসরি তদারক ও বাস্তবায়ন করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষনা করেছিলেন, মুজিববর্ষে দেশে কোন মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সরকার সব ভূমিহীন এবং গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেবে।

জানা গেছে, সরকারের তিনটি কর্মসূচীর আওতায় দেশের ভূমিহীন, ঠিকানাহীন মানুষদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার কাজ চলছে। এসব কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতায় দূর্যোগ সহনীয় বাড়ি প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় গুচ্ছগ্রাম প্রকল্প ও প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২। তবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা যৌথভাবে গৃহহীনদের জন্য নেওয়া এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকরা মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পের অগ্রগতি তদারকি করছেন। অনেক আগে থেকেই এই তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে নদীভাঙ্গন পরিবার সহ বিভিন্ন কারণে যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়েছেন তাদের ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব প্রকল্পের অনেক বাড়িঘর সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আবার অনেক বাড়ি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

এদিকে মেহেন্দিগঞ্জে নদী সিকস্তী, ভূমিহীন এবং গৃহহীন পরিবারকে মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর দেওয়ায় অনেক খুশি তারা। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে প্রাপ্ত আশ্রায়ন প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী আব্দুল মালেক, কাঞ্চন আলী সিকদার, রাজ্জাক মোল্লা, রহিমা বেগম, বিলকিছ আক্তার সহ একাধিক উপকারভোগী বলেন, আমরা নদী সিকস্তী পরিবারের লোকজন মানুষের দারে দারে কাজ করি, রাস্তার ধারে অন্যের জমিতে ঝুপড়ি ঘর করে বসবাস করতাম। কখনো কখনো জমির মালিক তাদের জমি থেকে তাড়িয়ে দিতো। কখনো ঝড়-বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড়ে সেই ঘর উড়িয়ে নিয়ে যেত। আমাদের ভিটেমাটি-ঘর বলতে কিছুই ছিল না। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত এখানে কাটিয়ে দিতে পারব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যাকে অনেক ধন্যবাদ। এসময় তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র সুস্থ্যতা এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

উল্লেখ্য, সরকার ২০১৬ সালে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে কোন জেলায় কতজন ভূমিহীন, গৃহহীন ও জমি আছে ঘর নেই এমন মানুষের তালিক তৈরি করেন। ওই তালিকা থেকেই এখন সুবিধাভোগী চিহ্নিত করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নুরুননবী জানান, উপজেলাব্যাপী এ পর্যন্ত মোট ৪২৫টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আরো ১৫০টি পরিবারকে ঘর দেওয়ার লক্ষ্যে নির্মান কাজ চলমান আছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য সরকারি জায়গায় এই ঘর করা হয়েছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীন ‘‘ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য গৃহ (দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমি পাঁকা) ঘর নির্মাণ’’ প্রকল্পের কবুলিয়ত ও দলিল, নামজারী খতিয়ান, সনদপত্র ও একটাকা মূল্যের ডিসিআর সহ আগামী ২২ মার্চ (বুধবার) সারা দেশের সাথে একযোগে উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নে ৭৫টি এবং লতা ইউনিয়নে ৯৮টি, মোট ১৭৩টি পরিবারকে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্যদের মাঝেও ঘর হস্তান্তর করা হবে।