Home জাতীয় ১৫ জেলে ভারতে কারাবন্দী।। আড়াই মাসেও মুক্তি মেলেনি

১৫ জেলে ভারতে কারাবন্দী।। আড়াই মাসেও মুক্তি মেলেনি

38

কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রাতনিধিঃ গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করতে গিয়ে পথ ভুলে পটুয়াখালী কলাপাড়ার ১৫ জেলে এখন ভারতীয় কারাগারে। আড়াই মাসেও মুক্তি পায়নি জেলেরা। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি কারাগারে বন্দী থাকায় অনিশ্চয়তায় পড়েছে ভুক্তভোগী জেলে পরিবার। বর্তমানে এসব পরিবার পার করছে মানবেতর জীবন। তাদের ফিরে পেতে স্বজনদের মধ্যে চলছে আর্তনাদ। এযেন হৃদয় বিদারক এক করুন দৃশ্য। আটক জেলে পরিবারে শিশু ও নারীদের কান্না যেন দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় ও জেলেদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর মৎস্য বন্দর আলীপুর থেকে এফ,বি তানজিলা ও এফ, বি তাহিরা নামক দু’টি ট্রলারে মাছ শিকারে যান ওইসব জেলেরা। গভীর সমুদ্রে পথ হারিয়ে ভারতীয় জল সীমানায় প্রবেশ করে ট্রলার। এসময় ভারতীয় কোস্টগার্ড ট্রলারে থাকা জেলেদের আটক করে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়। আটক এসব জেলেরা উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা।
আটক জেলেরা হচ্ছে পান্না মিয়ার মালিকানাধীন এফ,বি তানজিলা ট্রলারের মাঝি আলমগীর হোসেন, নাইম ফরাজী, রহিম মোল্লা, জহির, পান্না মিয়া, ইউসুফ, ইসমাইল, তারাইয়া, কবির আহম্মদ এবং শাহজাহান ফকিরের মালিকানাধীন এফ,বি তাহিরা ট্রলারের মাঝি মো.তৈয়ব, ড্রাইভার খাইরুল আমিন, ইব্রাহিম সরদার, ইসমাইল, কফিল উদ্দিন, জাহিদ। হতদরিদ্র এসব জেলে পরিবারে আর কোন কর্মক্ষম লোক না থাকায় অনাহারে-অর্ধহারে মানবেতব জীবন যাপন করতে হচ্ছে। কারাবন্দী জেলে নাঈমের স্ত্রী আনিকা কান্নজড়িত কণ্ঠে জানান, তার স্বামী সাগরে গিয়ে পথ হারিয়ে ভারতের জেলে আটকা পড়ে আছে। ভারতীয় জেলে বন্দীদশায় থাকে ফিরে পেতে বিলাপ করছে এই গৃহবধূ।
এফবি তাহিরা ট্রলারের মালিক শাহজাহান ফকির জানান, তার ট্রলারে ছিলো ৬ জন জেলে এবং এফবি তানজিলা ট্রলারে ৯ জন জেলে। একই দিন ঘন কুয়াশায় করানে তারা দিক নির্নয় করতে না পেরে ভারতীয় জল সীমানয় ঢুকে পরে। এর পর কোষ্টগার্ডের সদস্যরা তাদের আটক করে ওখানকার পুলিশে হস্তান্তর করে। এ খরব শুনে তারা মহিপুর থানায় একটি সাধারন ডায়রি করেছে। বর্তমানে ওইসব জেলে কাকদ্বীপ প্রদেশের মডান কারাগারে রয়েছে। তাদেরকে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে ঘুরে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
এফবি তানজিলা ট্রলারের মালিক পান্না মিয়া বলেন, ওই ট্রলারে আমার ছেলে নাঈম ছিলো। তাকেও আটক করে জেলে দেয়া হয়েছে। ওই সময় ভারতীয় উকিলের মাধ্যমে আমার ছেলে আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। এরপর আর কথা বলতে পারিনি।
কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো.আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, প্রকৃত পক্ষে জেলেদের ফিরিয়ে আনা জরুরি। কারণ ওই সকল জেলে পরিবারে আর কোন কর্মক্ষম লোক নাই। তাই হতদরিদ্র জেলে পরিবারের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে তাদের মুক্ত করতে সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ হাই কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।
মহিপুর থানার ওসি খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত রয়েছে। ওই সময় একটি জিডি করা হয়েছে। আমরাও বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেছি।