Home আন্তর্জাতিক সিতারাম ইয়েচুরি আবারো সিপিআই(এম)-র সাধারণ সম্পাদক

সিতারাম ইয়েচুরি আবারো সিপিআই(এম)-র সাধারণ সম্পাদক

কান্নুরে ২৩তম কংগ্রেসে ৮৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন

55

ডেস্ক রিপোর্ট ।। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির ২৩তম কংগ্রেসে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক হলে কমরেড সীতারাম ইয়েচুরি। ৬-১০ এপ্রিল কেরালার কান্নুরে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের শেষ দিনে ৮৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হলে তিনি এ পদে আবারো নির্বাচিত হন। ২০১৫-তে ভাইজাগের কংগ্রেসে থেকে সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন।

এদিন ১৭ সদস্যের পলিটব্যুরো গঠিত হয়েছে। পলিটব্যুরোতে নতুন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন রামচন্দ্র ডোম, অশোক ধাওয়ালে, এ বিজয়রাঘবন। বিদায় নিয়েছেন বিমান বসু, এস রামচন্দ্রন পিল্লাই, হান্নান মোল্লা। কেন্দ্রীয় কমিটিতে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা মেনেই এই তিন প্রবীণ নেতা অব্যাহতি নিয়েছেন। তিনজনই কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য থাকবেন। 

কেন্দ্রীয় কমিটির ৮৫ জনের মধ্যে কংগ্রেসে নির্বাচিত হয়েছেন ৮৪ জন। একটি সদস্য পদ ফাঁকা রাখা হয়েছে। নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে মহিলা রয়েছেন ১৫ জন। প্রথম বারের মতো নতুন মুখ এসেছেন ১৭ জন। 

নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রয়েছেন ১২জন। তাদের মধ্যে শমীক লাহিড়ি, সুমিত দে, দেবলীনা হেমব্রম নতুন এসেছেন। পলিটব্যুরোর সদস্য রামচন্দ্র ডোম পার্টির ইতিহাসে প্রথম দলিত পলিটব্যুরো সদস্য। ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে কমিউনিস্ট আন্দোলনে যুক্ত হওয়া দরিদ্র পরিবারের সন্তান রামচন্দ্র ডোম ডাক্তারি পাশ করেছিলেন। পরে পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হিসাবে কাজ করেন। বীরভূম জেলায় তার কাজের মূল ক্ষেত্র ছিল। বীরভূম জেলা কমিটির সম্পাদক ছিলেন। ছিলেন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ। ২০১২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হন। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যও হন। 

পলিটব্যুরোর অন্য দুই নতুন সদস্যের মধ্যে এ বিজয়রাঘবন কেরালার। ছাত্র আন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতা ছিলেন, খেতমজুর ইউনিয়নের সর্বভারতীয় নেতৃত্বে রয়েছেন। মহারাষ্ট্রের অশোক ধাওয়ালে ছাত্র আন্দোনের সর্বভারতীয় নেতা ছিলেন, মহারাষ্ট্রে পার্টিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সারাভারত কৃষক সভার সভাপতি ধাওয়ালে নাসিক থেকে মুম্বাই পদযাত্রা, মহরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। এক বছরের বেশি কৃষক অবরোধের আন্দোলনেও তিনি সংযুক্ত কৃষক সভার অন্যতম নেতা হিসাবে ভূমিকা পালন করেছেন।

বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বয়সের সীমা ও অন্যান্য কারণে অব্যাহতি নিয়েছেন ১৬ জন। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থাকাকালীন মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। এর মধ্যে কংগ্রেস চলাকালীন কেরালার নেত্রী যোসেফিনের মৃত্যু সংবাদ আসে। তিনি  শনিবার অসুস্থ বোধ করায় কান্নুরের একেজি মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আকস্মিক ভাবে পরপর হৃদরোগে তার জীবনাবসান হয়। 

কেন্দ্রীয় কমিটিতে এবারের বয়সের ঊর্ধ্বসীমা ঠিক করা হয়েছিল ৭৫। সেইমতোই বিদায় নিয়েছেন অনেকে। সীতারাম ইয়েচুরি এদিন বলেন, প্রবীণ, অভিজ্ঞ ও দক্ষ নেতারা অব্যাহতি নিয়েছেন। কিন্তু তারা পার্টির কাজ করতেই থাকবেন। কমিউনিস্টরা অবসর নেন না। পশ্চিমবঙ্গের নেতা মৃদুল দে’র কথা উল্লেখ করে ইয়েচুরি জানান, তার বয়স এখনও ৭৫ হয় নি। কিন্তু তিনি নিজেই চিঠি দিয়ে বলেছেন, আর ছ’মাস পরে সেই সীমায় পৌঁছে যাবেন তিনি। নৈতিকভাবে তাই এখন আর কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা তার উচিত হবে না বলে তিনি মনে করেছেন। অব্যাহতি নেওয়া নেতাদের মধ্যে তিনজনকে এদিন মঞ্চেই সংবর্ধিত করা হয়। বিমান বসুকে সংবর্ধনা জানিয়ে ইয়েচুরি বলেন, আমি যখন ছাত্র আন্দোলন করতাম তখন বিমানদা আমার নেতা ছিলেন। পার্টিতে তার অবদান কোনোদিনই ভোলা যাবে না। 

কেন্দ্রীয় কমিটির নতুন সদস্যরা হলেন আসামের ইসফাকুর রহমান, বিহারের লালন চৌধুরি, ঝাড়খণ্ডের প্রকাশ বিপ্লবী, কর্ণাটকের ইউ বাসবরাজ, কেরালার কেএন বালাগোপাল, পি রাজীব, পি সতীদেবী, সিএস সুজাথা, মহারাষ্ট্রের উদয় নারকার, তামিলনাডুর পি সম্মুগম, ত্রিপুরার নারায়ণ কর, পশ্চিমবঙ্গের শমীক লাহিড়ি, সুমিত দে, দেবলীনা হেমব্রম, খেতমজুর নেতা বি ভেঙ্কট, ট্রেড ইউনিয়ন ফ্রন্টের নেতা আর কারুমালায়ম, কেএন উমেশ। কেন্দ্রীয় কমিটির স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য হয়েছেন উত্তরাখণ্ডের রাজেন্দ্র সিং নেগি, ও ছত্তিশগড়ের সঞ্জয় পারাতে। সূত্রঃ গণশক্তি