ডেস্ক রিপোর্টঃ দু’বছরেরও বেশি সময় বিশ্বজুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে মহামারী মরণঘাতী করোনা। অদৃশ্য এই দানবের থাবায় কেবল প্রাণহানি’ই নয়, বিপর্যস্ত হয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। স্থবির পৃথিবী আবার স্বাভাবিক হতে না হতেই উঁকি দিচ্ছে করোনার নতুন ধরণ ‘এক্সই’। ইতোমধ্যে প্রতিবেশি দেশ ভারতে করোনা ভাইরাসের এই ধরণ শণাক্ত হয়েছে। ভারত ছাড়াও থাইল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডেও শনাক্ত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, ‘এক্সই’ এখন পর্যন্ত পাওয়া ধরণগুলোর মধ্যে ১০ গুণ বেশি সংক্রামক। যদি তাই হয়, তাহলে বিশ্ব আরেকবার মহামারি আতঙ্কের দিকে ধাপিত হতে যাচ্ছে!

ভারতীয় প্রধান সারির গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও এনডিটিভি সূত্রে জানাগেছে, ৬ এপ্রিল দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মুম্বাইয়ে আসা ৫০ বছর বয়সী একজন নারীর করোনা পরীক্ষা করে নতুন ধরণ ‘এক্সই’ শনাক্ত হয়। মুম্বাই সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, আক্রান্ত নারী করোনাভাইরাসের দুই ডোজ টিকাই নিয়েছেন। গত ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি যখন ভারতে আসেন তখন তার করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না এবং পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসে। তবে, জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফলাফলে তার একটি নমুনায় ‘এক্সই’ ধরণ পাওয়া যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ধরণটিকে এখন পর্যন্ত পাওয়া ধরণগুলোর মধ্যে সম্ভাব্য সবচেয়ে বেশি সংক্রামক বলে অভিহিত করেছে।
জানাগেছে, এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সবচেয়ে সংক্রামক ধরণ ওমিক্রন। এই ধরনের আবার তিনটি উপ-ধরণ রয়েছে ‘বিএ-১’, ‘বিএ-২’ এবং ‘বিএ-৩’। তবে ‘বিএ-৩’ ধরণের সংক্রমণের বিষয়টি সবচেয়ে কম লক্ষ্য করা গেছে। ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলাকালীন সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা গেছে ‘বিএ-১’ এবং ‘বিএ-২’ উপ-ধরণটির। বিশেষ করে ‘বিএ-২’ ধরণটিতে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলাকালে ভারতে বেশি সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হন। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, নতুন শনাক্ত হওয়া ‘এক্সই’ধরণটি ‘বিএ-২’ উপ-ধরণের তুলনায় অন্তত ১০ শতাংশ বেশি সংক্রামক।
‘এক্সই’ ভেরিয়েন্টকে ‘রিকম্বিন্যান্ট’ বলা হচ্ছে। এর অর্থ এটিতে ‘বিএ-১’ এবং ‘বিএ-২’ ওমিক্রন উপ-ধরণের মিউটেশন আছে। করোনার এ ধরণটি প্রথম যুক্তরাজ্যে জানুয়ারি মাসে আবিষ্কৃত হয়েছিল। ইতোমধ্যে এতে ৬০০ বেশি মানুষ আক্রন্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরণ ওমিক্রনের ‘বিএ-২’ রূপের চেয়েও কিছুটা বেশি সংক্রামক। কিন্তু এটিতে মৃত্যু ঝুঁকি যে বেশি এমনটা বলার সময় আসে নি। প্রাথমিকভাবে গবেষকরা মনে করছেন, ‘এক্সই’ ধরণের মৃত্যুঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি।
বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রাথমিকভাবে এই রোগটিতে আক্রান্তদের জ্বর, গলাব্যথা, গলা খসখসে, কাশি এবং সর্দি, ত্বকের জ্বালা, বিবর্ণতা, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল হতে পারে। এছাড়া গুরুতর কিছু উপসর্গের কথাও জানা গেছে। সেগুলো হল- হৃদরোগ, বুক ধড়ফড় এবং কখনো কখনো ভাইরাসটি গুরুতর স্নায়ু রোগের কারণও হতে পারে।