Home রাজনীতি সরকার পতন আন্দোলনে গণধিকারের সঙ্গে বিএনপির ঐক্যমত

সরকার পতন আন্দোলনে গণধিকারের সঙ্গে বিএনপির ঐক্যমত

38

স্টাফ রিপোটার: সরকারকে সরাতে বিএনপির সাথে যুগপৎ আন্দোলন করবে গণঅধিকার পরিষদ। এ বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়েছে।
বুধবার দুপুরে গণ অধিকারের পরিষদে দলটির নেতাদের সঙ্গে সংলাপের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানান।

তিনি বলেন,আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়া হবে না। সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হবে। জয়ী হলে সকলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে রাষ্ট্র
মেরামতের জন্য।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা গণ অধিকার পরিষদের সাথে আলোচনা সভায় সন্তুষ্ট হয়েছি খুশি হয়েছি,তারা আমাদের সাথে প্রায় সব বিষয়েই একমত পোষণ করেন। বিশেষ করে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমরা এই বিষয় একমত হয়েছি যে, এই সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া যায় না।

তিনি আরো বলেন, এই সরকার অত্যন্ত সচেতনতার সাথে আমাদের অর্জনগুলো ছিলো,গনতন্ত্র বাক স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে। এই কারনে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটা আন্দোলন করার জন্য একমত হয়েছি

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, সংবাদ ও সাংবাদিকতা, ও ন্যায় বিচারের স্বাধীনতা ধ্বংস করেছে এই কারনে জনগণকে সাথে নিয়েই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে একটা নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটা নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে, একটা শক্তিশালী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সকলের অংশ গ্রহমের মধ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করা যোগ্য পার্লামেন্ট গঠন করা ও সরকার গঠন করা।

তিনি বলেন,সরকার গঠনের পরেই সবাইকে নিয়ে একটা জাতীয় সরকার গঠন করবো। আমরা মনে করি এ বিষয়ে একটা পরিবর্তন হওয়া দরকার

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম নূর বলেন, বিএনপির সাথে আমাদের খুব একটা
পার্থক্য নাই।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করেছি, প্রায় ১০ টা বিষয় উঠে এসেছে। ভোটাধিকার ও গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জনগণের ভোট বিহীন জোর জবর্দস্তি করে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান ফ্যাসিবাদ সরকার যুগপৎ আন্দোলনে সংগ্রাম করার ক্ষেত্রে গণ অধিকার পরিষদ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে একমত। সেক্ষেত্রে আমাদের দ্বিমত নেই।

আপনারা জানেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মামলা দিয়েছে

ঐকমত্যের ভিত্তিতে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যারা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছে তাদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটা নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে অন্তবর্তীকালিন সরকার।

বিএনপির সাথে গণধিকার পরিষদের যে ১০ টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাহলো-

১/ ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় জনগণের ভোটবিহীন জোরজবরদস্তি করে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার হঠাতে যুগপৎ বা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রাম।

২/অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে, রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমতের ভিত্তিতে একটি অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠন, ইভিএম বাতিল করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোটগ্রহণ।

৩। রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনায়নসহ সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কার।

৪/বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণরূপে আলাদা করে প্রধান বিচারপতিসহ বিচারক নিয়োগে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন।

৫/বাক, ব্যক্তি ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশ করার অধিকারসহ নাগরিকদের সংবিধান স্বীকৃত সকল অধিকার প্রতিষ্ঠা।

৬/ খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দী ও ধর্মীয় নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার।ভিন্নমতের উপর রাষ্ট্রীয় দমন, পীড়ন, গুম, খুন, নির্যাতন-লিপীড়ল, হামলা মামলা বন্ধে পদক্ষেপ।

৭/ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ সকল গণবিরোধী ও নিপীড়নমূলক আইন বাতিল করা।

৮/ বর্তমান সরকারের গত ১৩ বছরের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করে দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ।

৯/মেগা প্রকল্প ও কুইক রেন্টালের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করা এবং দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আইন করে বাপেক্সেকে শক্তিশালী স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা।

১০/রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন,বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের চুক্তি, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেশ,দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বসহ জাতীয় স্বার্থে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা।

বিএনপি তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের মধ্যে অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন সংলাপে অংশ নেন।