ডেস্ক রিপোর্ট: পরিকল্পিত সড়ক ও রেল প্রকল্প থেকে মানুষ এবং প্রকৃতির সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং সুবিধার প্রথম গবেষণা প্রকাশ করেছে পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় বলা হয়, পরিকল্পিত মহাসড়ক এবং রেলওয়ে অবকাঠামোর নির্মান প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়া মানুষের জন্য ক্ষতিকর গ্যাস নির্গমন হ্রাস করতে এবং অর্থনৈতিক সুবিধা বাড়াতে পারে।

গবেষণার চিত্রে পরিকল্পিত পরিবহন অবকাঠামোর পরিবেশগত ঝুঁকি এবং আর্থ-সামাজিক সুবিধার মানচিত্র তুলে ধরা হয়।

কানাডার মন্ট্রিয়লে জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সম্মেলনের (কপ ১৫) দ্বিতীয় দিনে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার(৮ ডিসেম্বর) নতুন এই সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি), জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি দল, ওয়ার্ল্ড কনজারভেশন মনিটরিং সেন্টার (ডাব্লিউ সিএমসি) দ্বারা এটি পরিচালিত হয়েছে।

গবেষণায় বলা হয়, অভিনব পদ্ধতি এবং মেট্রিক্স ব্যবহার করে, গবেষকরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে- বড় আকারের পরিবহন অবকাঠামো প্রকল্পগুলি বর্তমানে চলছে ১৩৭ টি দেশে। কিন্তু পরিকল্পিত ভাবে নয়। এসব ক্ষেত্রে বন্যপ্রাণী, জনসংখ্যা, কার্বন সঞ্চয়স্থান এবং নাইট্রোজেন ধরে রাখার উপর কোনো গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।

গবেষণাটি পরিকল্পিত সড়ক ও রেল উন্নয়নের জন্য প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক সুবিধার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পরিবেশগত প্রভাবগুলি সম্পর্কে ধারনা দিতে সাহায্য করবে বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, গত দুই বছরে মহাসড়ক ও রেল পথ নির্মাণের ফলে বিশ্বের সংরক্ষিত এলাকা বা মূল জীববৈচিত্র্য এলাকাগুলির প্রায় ৬০,০০০ কিমি অতিক্রম করেছে।

গবেষণা পত্রে, পরিবেশ বিজ্ঞানীরা অপরিকল্পিত সড়ক ও রেল প্রকল্প থেকে মানুষ এবং প্রকৃতির সম্ভাব্য ঝুঁকি এবং অসুবিধার কথা উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কিত সমীক্ষাটিতে উল্লেখ করা হয়, প্রধান সড়ক এবং রেলওয়ে অবকাঠামোর সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রকৃতিকে আরও ভালভাবে রক্ষা করতে এবং অর্থনৈতিক সুবিধা বাড়াতে পারে।

এর ফলে প্রায় ২৫ হাজার পাখি, উভচর এবং স্তন্যপায়ী প্রজাতির আবাসস্থল ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এজন্য বিশ্বব্যাপী গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী কমে যাওয়াার প্রবণতা বেড়েছে।

অপসারণ করা গাছ এবং গাছপালা থেকে ৮৮৩ মিলিয়ন টন কার্বন ছেড়েছে। কাজের সাথে সম্পর্কিত গাছপালা নষ্ট হওয়ার ফলে ১.১১ মিলিয়ন টন নাইট্রোজেন ধারণ করাও বিপন্ন হবে। গাছপালা ছাড়া, অতিরিক্ত নাইট্রোজেন নিম্নধারায় প্রবাহিত জল বিষাক্ত হতে পারে।

উল্লেখ্য, ৬ ডিসেম্বর কানাডার মন্ট্রিয়লে বিশ্ব জীব বৈচিত্র্য সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বের যৌথভাবে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এবং জাতিসংঘের মহাসচিন অ্যন্তোনি গুতেরেস। সম্মেলনে বিশ্বের ১৯৬ টি দেশের সরকার প্রধান, মন্ত্রী, সাংবাদিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান, এনজিও প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। এর আগে ২০২১ সালে চীনের কুনমিং শহরে এই সম্মেলনের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
আমাদের সময়.কম