Home জাতীয় শ্রম ভবনে শ্রমিকদের লাগাতার অবস্থানের অষ্টম দিন

শ্রম ভবনে শ্রমিকদের লাগাতার অবস্থানের অষ্টম দিন

54

স্টাফ রিপোটার: শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও আইনগত পাওনা পরিশোধে দুই দফা চুক্তি ভঙ্গের প্রতিবাদে ঢাকার শ্রম ভবনে লাগাতার অবস্থান শুরু করেছে গাজীপুরের স্টাইল ক্রাফট কারখানার শ্রমিকরা। গত ২৬ অক্টোবর সকাল থেকে শ্রমিকরা দিন রাত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে।
এর আগে শ্রমিকদের চার মাসের বকেয়া বেতন এবং আইনগত পাওনা পরিশোধ না করে মালিকপক্ষ বেআইনিভাবে কারখানা বন্ধ করলে শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, গত ১ ও ২ সেপ্টেম্বর বিজিএমইএ ভবনের সামনে পাওনার দাবিতে শ্রমিকেরা অবস্থান-আন্দোলন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ সেপ্টেম্বর শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তি অনুসারে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করার কথা। কিন্তু মালিকপক্ষ এখন পর্যন্ত সেই চুক্তি প্রতিপালন করেনি।
অবস্থান আন্দোলনের শুরুর দিন শ্রম প্রতিমন্ত্রী এসে শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয়বারের মতো মালিকপক্ষ চুক্তি ভঙ্গ করায় শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, পাওনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। পরবর্তীতে ২৭ অক্টোবর গভীর রাত পর্যন্ত মালিকপক্ষের সাথে শ্রমমন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং পরের দিন শ্রমিকপক্ষের সাথে সরকার পক্ষের সভা হলেও কোন সমঝোতা ছাড়াই আলোচনা ভেঙ্গে যায়।
শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্য বলেন, শ্রমিকদের প্রায় ৭০ কোটি টাকার পাওনা আত্মসাৎ করার চক্রান্তের সাথে অনেক হোমড়া চোমড়া ব্যাক্তি যুক্ত হয়ে পড়ায় মালিকপক্ষ বেপরোয়া আচরণ করছে। তারা চলমান আন্দোলনে সমাজের সকল বিবেকবান মানুষকে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় অবস্থিত শ্রম ভবনে আন্দোলনরত শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করছে। সমাবেশে শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র-নারী ও গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংহতি বক্তব্য রাখছেন। এ সময় ভবনের পাশের রাস্তায় উন্মুক্ত চুলা জ্বালিয়ে শ্রমিকদের রাতের খাবার প্রস্তুত করা হচ্ছে। আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্য বলেন, নারী শ্রমিকরা রাতে মুক্তি ভবনে অবস্থান করেন এবং পুরুষ শ্রমিকরা শ্রম ভবনের সিঁড়ি ঘর, গ্যারেজ ও বারান্দায় রাত্রি যাপন করছেন। চুক্তি বাস্তবায়নে মালিককে বাধ্য করার দায়িত্ব সরকারের। আশ্বাসবাণী আসছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। শ্রমিকরা কোন ঝুলন্ত সমাধান মানবে না, চূড়ান্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
চলমান আন্দোলনের নবম দিনে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার উদ্দেশ্যে আগামীকাল ৩ নভেম্বর বুধবার বেলা ১১টায় শ্রম ভবন প্রঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন এবং অবিলম্বে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে বিকেল ৩টায় একই স্থান থেকে পল্টন মোড় ও প্রেসক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।