Home জাতীয় শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করার দাবিতে স্মারকলিপি পেশ

শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করার দাবিতে স্মারকলিপি পেশ

30

স্টাফ রিপোটার: গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ- জি স্কপ এবং ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিল এর উদ্যোগে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন এবং শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করার দাবিতে শ্রম ও কর্মসংসংস্থন মন্ত্রনালয়ে স্মারকলিপি পেশ করা হয়।স্মারকলিপি প্রদানের পূর্বে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জি-স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক কামরুল আহসান।সভা পরিচালনা করেন আইবিসির সাধারন সম্পাদক কুতুবউদ্দিন আহমেদ।সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জি-স্কপ নেতা এনসিসিডাব্লিই সদস্য সচিব নাইমুল আহসান জুয়েল, আইবিসি সভাপতি আমিরুল হক আমিন, জি-স্কপ যুগ্ম সমন্বয়ক আব্দুল ওয়াহেদ, জি-স্কপ-আইবিসি নেতৃবৃন্দ নেতা খালেকুজ্জামান লিপন, কাজী রুহুল আমিন, সেলিম মাহমুদ, সালাউদ্দিন বাদল, মীর আবুল কালাম আজাদ, নুরুল ইসলাম, সৈয়দা খায়রুন্নাহার তামরিন, মো: রফিক, শিরিন শিকদার, মফিজুর রহমান বাবুল, আব্দুল জলিল।
সমাবেশে বক্তাগন বলেন দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতি দেশের ৭ কোটির বেশি শ্রমজীবীর জীবনকে কি দুর্বিষহ অবস্থায় ফেলেছে তা আমরা সবাই উপলব্ধি করি। শুধু খাদ্য পন্য, চিকিৎসা, শিক্ষার খরচ, বাড়ি ভাড়া গাড়ি ভাড়া বিপুল পরিমাণ বেড়েছে তাই নয় রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত গাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। বিশ্ব বাজারের দোহাই এবং উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাতে শ্রমজীবীরা যা ব্যবহার করে সেসব পন্যের দাম বাড়ছে কিন্তু বাজার দর, উৎপাদনে তাদের মুল্য সংযোজন, বিভিন্ন দেশের সাথে তুলনামুলক বিচার, রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্ধারিত বেতন কাঠামো বিবেচনা করে গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করা হচ্ছে না। আপনারা জানেন বাংলাদেশ শ্রম আইনের ১৩৯ ধারা অনুযায়ী প্রতি পাঁচ বছর অন্তর নিম্নতম মজুরি হারের সুপারিশ করার বিধান এবং ১৪০(ক) ধারায় বিশেষ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় নতুনভাবে মজুরি কাঠামো ঘোষণার বিধান আছে। কিন্তু কোন আইনের সুফলই যেন গার্মেন্টস শ্রমিকদের প্রাপ্য নয়। গার্মেন্টস শিল্প সেক্টরে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর সর্বশেষ মজুরি ঘোষিত হয়েছিল। ইতিমধ্যে পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে এবং দ্রব্যমুল্য ও গার্মেন্টসের রপ্তানি দুটোই বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি শ্রমিকের মজুরি। ফলে জীবন মানের উন্নয়ন তো দুরের কথা প্রয়োজনীয় খাদ্য কেনার সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছে শ্রমিকেরা। ইতিমধ্যে গার্মেন্টস শ্রমিকরাই শুধু নয় সরকারি কর্মচারী, সাংবাদিক সহ বিভিন্ন শিল্প সেক্টরের শ্রমিকরা মজুরি পুনঃনির্ধারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে।
বক্তাগন আরোও বলেন, গার্মেন্টস শিল্পে রপ্তানী ও প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে কিন্ত ৫ বছর অতিক্রম করার ও নিত্যপণ্যের আকাশ ছোয়া মূল্যবৃদ্ধির পরও কেন মজুরি বোর্ড গঠন এবং মজুরি বৃদ্ধি হচ্ছে না এটা শ্রমিকদের বোধগম্য নয়।জি-স্কপ ও আইবিসি ইতোমধ্যে নিম্নতম মজুরি নির্ধারনে যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদন্ড, আইনি বাধ্যবাধকতা এবং বিভিন্ন গবেষনা প্রতিষ্ঠানর নানা রিপোর্ট পর্যালোচনা করে বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য ২০২৩ সালের নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন ও শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা ও ৫ টি গ্রেডে তা বাস্তবায়ন করার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন এবং উপরোক্ত দাবিতে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারির দেশব্যপী দাবি দিবস পালনের ঘোষনা দিয়ছেন জি-স্কপ ও আইবিসি।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল মিছিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় নিকট স্মারকলিপি প্রদান করতে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে কদম ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড় হয়ে মন্ত্রনালয় অভিমূখে যেতে চাইলে পল্টন মোড়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে।পরে পুলিশ বেরিকেডের মধ্য থেকে কুতুবউদ্দিন আহমেদ, সেলিম মাহমুদ, সৈয়দা খায়রুন্নাহার তামরিন ও সালাউদ্দিন বাদলের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি টিম শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ে গিয়ে শ্রম পতিমন্ত্রীর দপ্তরে জি- স্কপ ও আইবিসির প্রস্তাবিত মজুরি কাঠামো সংক্রান্ত স্মারকলিপি পেশ করেন।