Home জাতীয় শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন অক্টোবরে!

শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন অক্টোবরে!

36

ডেস্ক রিপোর্ট: রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে এবং আগামী অক্টোবর মাস নাগাদ এটি উদ্বোধন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের একটি হোটেলে পর্যটন বিষয়ক প্রকাশনা বাংলাদেশ মনিটর আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ১৩তম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার উদ্বোধনকালে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের মেয়াদকালেই দেশের প্রতিটি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে ঢেলে সাজানোর কাজ সম্পন্ন হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল সম্ভবত আমরা এই বছরের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে যাচ্ছি। কক্সবাজার বিমানবন্দরে সমুদ্রের মধ্যে ভূমি উদ্ধার করে রানওয়ে সম্প্রসারণ ও নতুন টার্মিনাল নির্মাণের কাজ দ্রুতবেগে এগিয়ে যাচ্ছে। সিলেট বিমানবন্দরে নতুন টার্মিনাল নির্মাণ ও রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের টার্মিনাল সম্প্রসারণের জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ হয়েছে। খুব শিগগিরই কাজ শুরু হবে। আমরা বোর্ডিং ব্রিজ বাড়াব। রানওয়ের ক্যাপাসিটি বাড়ানোর কাজ আগামী একমাসের মধ্যেই সম্পন্ন হবে। তখন ট্রিপল সেভেনসহ সুপরিসর বিমান এখানে ওঠানামা করতে পারবে। অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের মধ্যে সৈয়দপুরে আমরা সুন্দর একটা টার্মিনাল নির্মাণ করেছি। যশোর বিমানবন্দরের নতুন ভবন এ মাসের মধ্যে উদ্বোধন হবে। রাজশাহী বিমানবন্দরে আরও বড় আকারের নতুন টার্মিনাল নির্মাণের জন্য বাজেট অনেক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হওয়ার পথে। সামগ্রিকভাবে দেশের প্রতিটি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাজানো হয়েছে।’
পর্যটন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে প্রায় ১ হাজার ৭০০ পর্যটন স্পট রয়েছে। কিন্তু এসব বিষয় দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে কমই তুলে ধরা হয়। মানুষকে কম জানানো হয়। ফলে ক্রমবর্ধমান পর্যটনশিল্প যে হারে বাড়ার কথা, সে হারে বাড়ছে না। কোভিডের কারণে পর্যটনশিল্প কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও বর্তমানে এ খাতের উন্নয়নে কাজ চলছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড ইতিমধ্যে ‘ট্যুরিজম রিকভারি প্ল্যান’ ও এ সংশ্লিষ্ট ২০টি গাইডলাইন প্রণয়ন করেছে। আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত পর্যটন শিল্পে কি পরিমাণ কর্মসংস্থান হবে তা নিরূপণের জন্য ন্যাশনাল ট্যুরিজম হিউম্যান ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়ন করা হয়েছে। জাতীয় পর্যটন নীতিমালা ২০১০ যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশব্যাপী অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন করা হয়েছে। এসব যুগান্তকারী পদক্ষেপের কারণে ২০১৯ সালের ১ কোটি পর্যটক থেকে ২০২২ সালে বেড়ে ২ কোটি ছাড়িয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অভ্যন্তরীণ পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে দেশব্যাপী পরিচালিত অন্যান্য কার্যক্রমের পাশাপাশি কক্সবাজারের সাবরাং, নাফ ও সোনাদিয়াতে তিনটি পর্যটন পার্ক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন করে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এ লক্ষ্যে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সঙ্গে সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক পর্যটন সংস্থাসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হচ্ছে। বিদেশি পর্যটক আকর্ষণ করতে পর্যটন পণ্যের উন্নয়ন, ভিসা প্রদান পদ্ধতি সহজীকরণ, সৃজনশীল ও গতিশীল বিপণন ও পর্যটন সেবার প্রচারে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যায় অচিরেই বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প বিশ্বের দরবারে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাহাজে করে হজযাত্রী প্রেরণ বিশ্বে দেশীয় পর্যটন খাতকে আরও আকর্ষণীয় করবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের পাশাপাশি কক্সবাজারের কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর সৌন্দর্য গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবালসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রেখে পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

বাংলাদেশ মনিটরের সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান ইকবাল, এয়ার এস্ট্রার প্রধান নির্বাহী ইমরান আসিফ, ইউএস বাংলার জেনারেল ম্যানেজার (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম, ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের মার্কেটিং প্রধান অ্যানা মে ডিয়াল বক্তৃতা করেন। মেলায় টাইটেল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে এয়ার এস্ট্রা এয়ারলাইনস। মেলায় বিদেশি ছয়টি প্রতিষ্ঠানসহ ৩৫টি স্টল স্থান পেয়েছে। নগরীর পেনিনসুলা হোটেলে আয়োজিত এ মেলা আগামীকাল শনিবার শেষ হবে।
ইত্তেফাক