Home জাতীয় “রাজধানীর রেইনট্রিতে হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায়ের প্রতিবাদে বশেমুরবিপ্রবিতে মানববন্ধন”

“রাজধানীর রেইনট্রিতে হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায়ের প্রতিবাদে বশেমুরবিপ্রবিতে মানববন্ধন”

42

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি: রাজধানীর রেইনট্রি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় পাঁচ আসামিকে খালাস এবং ৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণ মামলা না নেওয়ার বিষয়ে আদালতের নির্দেশনাকে প্রত্যাখ্যান ও শাহবাগ থেকে শুরু হওয়া ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’ সাথে সংহতি প্রকাশ করে বশেমুরবিপ্রবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুর রহমান সাগর বলেন, একবিংশ শতকে মধ্যযুগীয় বর্বর প্রথাগুলোর অবসান ঘটুক এবং নারীরা তাদের অধিকার ফিরে পাক। প্রতিটি ধর্ষণের, প্রতিটি নির্যাতনের বিচার হউক। বিচারগুলো যাতে কোনভাবেই অবহেলিত না হয়, কোনভাবেই যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সে জন্যই আমাদের এখানে সমবেত হওয়া। সেই বাধাগ্রস্তের জায়গা থেকে শুধু ৩ দিন নয়, যদি ৫ বছরও হয় তবু যেন কেউ মুখ ফুঁটে বললে সত্যটা যদি বেরিয়ে আসে তার বিচার হয়। কোন বেরিয়ার দিয়ে নয়, নিরপরাধ কেউ শাস্তি না পাক যেমন সত্য, তেমন একজন নির্যাতিত নারীর প্রতিটি জায়গায় বিচার পাওয়ার অধিকার আছে।

সহকারী অধ্যাপক(বাংলা বিভাগ) জাকিয়া সুলতানা মুক্তা বলেন, বিচারিক আদালতে আমরা যে অন্যায় রায় বিচারপতি কামরুন্নাহারের পক্ষ থেকে দেখলাম তার বিপরীতে আইনমন্ত্রী এবং সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে শাস্তি দেবার বা তার বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেবার এজন্য সরকারকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমরা মনে করছি, এটিই শুধুমাত্র সঠিক বিচার নয়। যদি তাকে(বিচারপতি) শাস্তির আওতায় আনা হউক।একইসাথে রেইনট্রি হোটেলের ধর্ষণকান্ডে জড়িত আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলের ক্ষমতার দম্ভকে আমরা গুড়িয়ে দিতে চাই এবং নতুন করে মামলাটি পুনঃবিবেচনা করার দাবি জানাই।

একইসাথে তিনি নারীর প্রতি সহিংসতার সকল ধারাকে প্রত্যাখ্যান করে আরও বলেন, স্বাক্ষ্য আইনের ১৫৫ এর ৪ নং নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের পক্ষের ধারার অবিলুপ্তর দাবি জানান।

মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধু ইনস্টিটিউট অব লিবারেশন ওয়ার এন্ড বাংলাদেশ স্ট্রাডিস এর সহকারী অধ্যাপক মোঃ সানজিদা সুলতানা বলেন, অতি সম্প্রতি যেই ঘটনাটি ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং একইসাথে প্রহসনমূলক। আরও অবাক করা কান্ড হচ্ছে পুরুষতান্ত্রিকতা আমাদের নারীদের ভেতর এভাবেই প্রবেশ করেছে যে, একজন নারীর বিচারপতির মুখ থেকেই ৩ দিন পর ধর্ষণের মামলা গ্রহণ না করার বিষয়ে পুলিশকে যে সুপারিশ করেছে, অর্থাৎ আমাদের অবচেতন মনে পুরুষতান্ত্রিকতাকে গ্রহণ করে ফেলেছি।

তিনি আরও বলেন, নারীর প্রতি যেকোন ধরনের সহিংসতার বিচার শুধুমাত্র মুখে নয়, আইন করে বা খাতা- কলমে নয় কার্যতভাবে প্রতিষ্ঠিত হউক, ক্ষমতাধর ব্যক্তির ক্ষমতার হাতকে সুসঙ্গত করা না হউক। এক্ষেত্রে সে যত বড় ক্ষমতাধরই হউক না কেন, তাকে অপরাধী হিসেবে সাবস্ত করা হউক।

একইসাথে এ সময় শিক্ষার্থীরা ধর্ষণ, ঘুম, খুন, নারী নির্যাতন এবং সর্বপরি নারী অধিকার সুরক্ষার বিষয়ে যথাযথ আইন প্রনয়ণ, আইনের প্রয়োগ ও কার্যকর করবার দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাতে রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ মামলায় ওই বছরের ৮ জুন সাফাতসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) আদালত বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার ঘোষণাকৃত রায়ে অভিযুক্ত সব আসামিকে খালাস দেয়া হয়।