Home রাজনীতি যেখানে গণতন্ত্র নেই সেখানে কোন ধর্মের মানুষই নিরাপদ নয় : ফখরুল

যেখানে গণতন্ত্র নেই সেখানে কোন ধর্মের মানুষই নিরাপদ নয় : ফখরুল

35

স্টাফ রিপোটচার: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শুধু হিন্দু নয়, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সকলের উপর সমানভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, সেই দেশে কখনোই শান্তি আসবে না, কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ, ব্যক্তি নিরাপদে থাকবে না যতক্ষণ, না সেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। যেখানে গনতন্ত্র নেই, সেখানে কোনো ধর্মের মানুষই নিরাপদ নয়। আজকে সেই গণতন্ত্রই এখানে অনুপস্থিত।

শনিবার রাতে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জন্মাষ্টমী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এ বিষয়ে কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বাংলাদেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে এই অবস্থার সঙ্গে শ্রী কৃষ্ণের আর্বিভাবের সময়ের বহুলাংশে মিল আছে। একইভাবে আজকে মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে দেখছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি তার সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তাকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। লক্ষ্য করেছি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, ৬শ বেশি নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে প্রায় হাজারের উপর মানুষকে। তার স্বীকৃতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার তিনি এসে নিজেই বলে গেছেন যে, এই দেশে গুম করা হচ্ছে, বিচারবর্হিভূত হত্যা চলছে।

তিনি বলেন, আজকে সকল মানুষের অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে, ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই অবস্থা প্রেক্ষিতে আজকে জন্মষ্টমীতে শ্রী কৃষ্ণের যে কাজ ছিল তা স্মরণ করতে চাই। অর্থাৎ আমরা ৭১ সালে একসাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান মুসলমান যুদ্ধ করে ছিলাম। লক্ষ্য ছিল একটি সুস্থ-মুক্ত সমাজ গড়ে তুলবো, গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তুলবো, সেই লক্ষ্য থেকে সম্পূর্ণভাবে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে বর্তমান সরকার।

আওয়ামী লীগ আমাদের ভোটাধিকার ও বেঁচে থাকার অধিকার হরণ করেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য, একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করবার জন্য আজকে তারা সমস্ত অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখন আমাদের প্রয়োজন অটুট ঐক্য। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের সেই অধিকার যে অধিকারের জন্য ৭১ সালে যুদ্ধ করে ছিলাম সে অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করা। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের অধিকারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। তাই আসুন আজকে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া যিনি আমাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন এবং লড়াই করার জন্য এখনো অন্তরীণ আছেন তার মুক্তির জন্য, বিদেশ থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাকে দেশে ফিরিয়ে আনবার জন্য এবং অসংখ্য যুবক তরুণরা যারা মামলার শিকার হয়েছে তাদের মামলা প্রত্যাহার, দেশে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করবার জন্য এই সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা। পদত্যাগের পর নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করা এবং নতুন একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে আমাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনে একটা পার্লামেন্ট-সরকার গঠন করা। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব এটাই হউক জন্মষ্টমীর দিনে প্রার্থনা।

এসময় ফুলের তোড়া দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-এর মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান-কে জন্মাষ্টমী শুভেচ্ছা জানান স্বর্গীয় সাবেক মন্ত্রী ও হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য ফ্রন্টে’র প্রতিষ্ঠিতা গৌতম চক্রবর্তী’র স্ত্রী দীপালি চক্রবর্তী।

সভাপতিত্ব করেছেন বিজন কান্তি সরকার, পরিচালনা করেছেন অমলেন্দু দাস অপু। ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান।

জন্মাষ্টমী শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নিতাই রায় চৌধুরী, সুকোমল বড়ুয়া, সুব্রত চৌধুরী, সুশীল বড়ুয়া, জয়ন্ত কুমার কুন্ড, রামকৃষ্ণ মিশন পূর্নধানন্দ, ইসকন ঢাকা দ্বিজননি, বিশ্বনাথ সরকার, গৌরাঙ্গ দাস, পুরোহত বিজয় পান্ডে, স্বাধীন কুন্ড, সুকৃতি মন্ডল, মিলটন বৈদ্য, তরুণ দে, কামাক্ষা চন্দ্র দাস, দেবাশীষ রায় মধু, রমেশ দত্ত, বিশ্বনাথ সরকার, সুরঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।