Home জাতীয় যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যার প্রতিশোধ নিতেই আওয়ামী লীগ নেতা টিপু হত্যা–র্যাব

যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যার প্রতিশোধ নিতেই আওয়ামী লীগ নেতা টিপু হত্যা–র্যাব

36

স্টাফ রিপোটার: র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যার প্রতিশোধ নিতেই আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার ঘটনা ঘটেছে।আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, শুক্রবার রাতে রাজধানীর মুগদা, শাহজাহানপুর ও মিরপুর এলাকা থেকে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকাণ্ডে জড়িত চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৩। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- অন্যতম পরিকল্পনাকারী ওমর ফারুক, পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির ও মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ । তাদের কাছ থেকে মোটর সাইকেল এবং হত্যার কাজে প্রদান যোগ্য ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইলসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে টিপু ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছিলো। দ্বন্দ্ব-সংঘাতের পরম্পরায় গত ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই গুলশান শপার্স ওয়ার্ল্ড এর সামনে মিল্কী হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়। মিল্কী হত্যাকান্ডের ৩ বছরের ভেতর একই এলাকার বাসিন্দা রিজভি হাসান ওরফে বোচা বাবু হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।
তিনি বলেন, মিল্কী হত্যাকান্ডের সঙ্গে টিপুর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ওমর ফারুক, পলাশসহ একটি পক্ষ মানববদ্ধন, আলোচনা সভা, পোস্টার লাগানো ইত্যাদি কার্যক্রম চালায়। কিন্তু মিল্কি হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পায় টিপু। পরবর্তীতে ওমর ফারুক ও অন্যান্য সহযোগীরা স্বার্থগত দ্বন্দের কারণে টিপুর অন্যতম সহযোগী বাবুকে হত্যা করে। বাবু হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচার কার্য শুরু হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা জানায় তাদের ধারণা টিপুর কারণেই বাবুর মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে স্থানান্তরিত হয়েছে।
মঈন বলেন, বাবুর বাবা কালামের সঙ্গে ওমর ফারুক ও তার সহযোগীরা ৫০ লাখ টাকায় দফারফা করার চেষ্টা করে। কিন্তু টিপুর কারণে বাবুর বাবা মিমাংসায় আসেনি। টিপু বাবুর বাবাকে নিয়ে সার্বক্ষণিক চলাচল করতে থাকে। তারা এক পর্যায়ে কালামকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে, কিন্তু টিপুর সঙ্গে চলাচল করার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা করে যাতে মামলা পরিচালনা ধীরগতি করা যায়। প্রায় ৩ মাস আগে আদালত চত্ত্বর এলাকায় টিপু হত্যাকান্ডের সংগঠনের প্রাথমিক আলোচনা করে। বাবু হত্যাকান্ডের অন্যতম সাক্ষী কাইল্লা পলাশকে তারা অর্থের বিনিময়ে সাক্ষ্য প্রদানে বিরত থাকতে বলে। পলাশ রাজী থাকা সত্বেও টিপুর চাপে সে সাক্ষ্য দেয়।
মঈন বলেন, পলাশ পরবর্তীতে বাবু হত্যাকান্ডের আসামীদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে টিপুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে অংশ নেয়। পলাশ হত্যাকান্ড বাস্তবায়নের জন্য ফারুক ও মুসাকে ফোনে কয়েকজন আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। হত্যাকান্ডটি বাস্তবায়নের চূড়ান্ত সমন্বয়ের জন্য মুসা গত ১২ মার্চ দুবাই গমন করে। সেখানেই হত্যাকান্ড সংঘঠনের চুড়ান্ত সমন্বয় করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ওমর ফারুকের সঙ্গে হত্যাকান্ডের জন্য ১৫ লক্ষ টাকার চুক্তি হয়। এর মধ্যে ওমর ফারুক ৯ লাখ ও বাকি টাকা কিলার নাছির, শুটার সালেহ এবং মুসাকে দেয়। দুবাইয়ে গমনের সময় মুসা ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায় এবং হুন্ডির মাধ্যমে মুসাকে আরও ৪ লাখ টাকা পাঠায়। বাকি ৬ লাখ টাকা দেশে হস্তান্তর করার চুক্তি হয়।