Home রাজনীতি মে দিবসে সিপিবির সমাবেশ ও মিছিল

মে দিবসে সিপিবির সমাবেশ ও মিছিল

45

সব শ্রমিকের নিয়োগ পত্র,জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান

স্টাফ রিপোটার: মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) আজ ১ মে সকাল ৯.৩০টায় ঢাকার পল্টন মোড়ে সমাবেশ ও পরে লাল পতাকা মিছিল করে।
সমাবেশের বক্তারা দেশ ও সারাবিশ্বের শ্রমিকশ্রেণি, শ্রমজীবী মানুষসহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার এবং বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রীয় মালিকানার নীতিতে দেশ পরিচালনার কথা থাকলেও সরকার উল্টো পথে চলছে।লুটেরা পুঁজিপতিরা বারবার রাষ্ট্র ক্ষমতা ব্যাবহার করে রাষ্ট্রীয় কল-কারখানাকে বন্ধ করছে। বিরাষ্ট্রীয়করণের নামে অবাধ লুটপাট অব্যাহত রাখছে। ব্যক্তি মালিকানার নামে অনেক ক্ষেত্রে শ্রমজীবী মানুষের ওপর শোষণের মাত্রা বৃদ্ধি করে লুটপাটের নতুন ধারা তৈরি করার হচ্ছে। শ্রমিকদের জীবনে চরম সংকট সৃষ্টি করে নব্য ধনিক গোষ্ঠীকে আরও ধনি করে শোষণ বৈষম্য বৃদ্ধি করছে।
সিপিবির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক এ এন রাশেদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পার্টির অন্যতম উপদেষ্টা শ্রমিক নেতা মন্জুরুল আহসান খান, সিপিবির সাধারন সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহ -সাধারন সম্পাদক মিহির ঘোষ, সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, , কন্ট্রোল কমিশনের সদস্য শ্রমিক নেতা মাহবুবে আলম, শ্রমিক নেতা ইদ্রিস আলী।
সমাবেশে মন্জুরুল আহসান খান বলেন, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে এখনো শ্রমআইন প্রতিষ্ঠা করা হয়নি বরং শ্রমিকের গণতান্ত্রিক অধিকার ধ্বংস করতে নতুন নতুন আইন করা হচ্ছে। দেশের শ্রমআইনে শ্রমিকদের যতটুকু অধিকার দেয়া আছে, ততটুকুও প্রতিষ্ঠা করা হয়নি। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেয়া হয়না।
কমরেড রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন শ্রমজীবী মানুষের ওপর শুধু শোষণ নয়, তার যতটুকু শ্রমঅধিকার আছে তা দিনদিন খর্ব করার চেষ্টা চলছে সরকার। তিনি বলেন স্বাধীনতার ৫১ বছর পেরিয়ে গেলেও জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও পরিপূর্ণ শ্রমঅধিকার বাস্তবায়ন হয়নি। সব শ্রমিক এখনো নিয়োগপত্র পায় না। বেঁচে থাকতে ৮ ঘন্টার বেশি কাজ করতে বাধ্য হয়। অধিকাংশ শ্রমিকের কাজের নিশ্চয়তা নেই।
তিনি অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, এই বিল পাশ হলে শ্রমিকদের গনতান্ত্রিক অধিকার হরন হবে।
তিনি শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও শ্রমঅধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শোষণ মুক্তির সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান। মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, মে দিবসের বিপ্লবী প্রেরণায় শ্রমজীবী মেহনতি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। শোষণমুক্তির সংগ্রাম অগ্রসর করতে হবে। চলমান দু:শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় করতে হবে।
মিহির ঘোষ বলেন মহান মে দিবসে নতুন করে শপথ নিয়ে শ্রমিকশ্রেণিকে সব ধরনের শোষণ-নির্যাতন-নীপিড়নের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ তীব্র সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক এ এন রাশেদা বলেন জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা দিতে হবে। সকল সেক্টরে মানবিক জীবনযাপন উপযোগী ন্যূনতম মজুরি,বোনাস দিতে হবে। রেশনিং, বাসস্থান ও শিক্ষা-স্বাস্থ্যের সুরক্ষা দিতে হবে। পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করাসহ সংবিধান এবং আইএলও কনভেনশন অনুযায়ী শ্রমআইন-বিধি সংশোধন ও কার্যকর করতে হবে, শ্রমিকদের জন্য স্থায়ী রেশন ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করতেহবে।
আর এ লক্ষ্যে কমিউনিস্ট পার্টির লড়াই সংগ্রামকে জোরদার করবে।।
সমাবেশ শেষে একটি বর্নাঢ্য র্যআরঈ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সমাবেশের আগে উদীচির শিল্পীরা গন সংগীত পরিবেশন করেন।
এছাড়াও মহান মে দিবসে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় নানাবিধ কর্মসূচি পালিত হয়। ঢাকায় পুরানা পল্টনের পাশাপাশি মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও সূত্রাপুরেও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।