Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ‘মেয়াদের দ্বারপ্রান্তে উপাচার্য, পদ আকড়ে থাকতে ছলচাতুরী’

‘মেয়াদের দ্বারপ্রান্তে উপাচার্য, পদ আকড়ে থাকতে ছলচাতুরী’

42

জাবি প্রতিনিধিঃজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের দ্বিতীয় মেয়াদ আগামী ২ মার্চ শেষ হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন, সিন্ডিকেট, সিনেট হতে সিন্ডিকেট সদস্য, শিক্ষা পর্ষদ, অর্থ কমিটি, সিনেটে রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি এবং সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি পর্ষদগুলোর মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। ‘এ্যাক্ট অনুযায়ী প্যানেল নির্বাচনের আয়োজন না করে অনৈতিকভাবে ও ছলচাতুরী করে তিনি পদ আঁকড়ে থাকার দূরভিসন্ধিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত আছেন। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত না করলেও মেয়াদের শেষ দিকে এসে তিনি নির্বিচারে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন’-বলে বিবৃত্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।

১৯৭৩-এর অ্যাক্ট, অর্ডিন্যান্স ও সংবিধিকে সমুন্নত রাখা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিশেষ করে উপাচার্যের আইনগত দায়িত্ব ও নৈতিক কর্তব্য। বহুবার নানাভাবে উপাচার্যকে ড. ফারজানা ইসলামকে সে দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা স্মরণ করিয়ে দিলেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নিয়ম-নীতিরই তোয়াক্কা করছেন না। বরং ‘এ্যাক্ট অনুযায়ী প্যানেল নির্বাচনের আয়োজন না করে অনৈতিকভাবে ও ছলচাতুরী করে তিনি পদ আঁকড়ে থাকার দূরভিসন্ধিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত আছেন। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত না করলেও মেয়াদের শেষ দিকে এসে তিনি নির্বিচারে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন’-বলে বিবৃত্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।

শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) জাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম সভাপতি এবং সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি অনতিবিলম্বে মেয়াদোত্তীর্ণ সকল গণতান্ত্রিক পর্ষদের নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৭৩-এর অ্যাক্ট, অর্ডিন্যান্স ও সংবিধিকে সমুন্নত রাখা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিশেষ করে উপাচার্যের আইনগত দায়িত্ব ও নৈতিক কর্তব্য। বহুবার নানাভাবে ক্ষমতাসীন উপাচার্যকে সে দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা স্মরণ করিয়ে দিলেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নিয়ম-নীতিরই তোয়াক্কা করছেন না। দীর্ঘদিন ধরে সিনেট, সিন্ডিকেট, শিক্ষা পর্ষদ, ডীন ইত্যাদি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও বিধি মোতাবেক নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো চেষ্টাই তিনি করেননি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এমনকি উপাচার্যের দ্বিতীয় মেয়াদ আগামী ২ মার্চ শেষ হলেও এ্যাক্ট অনুযায়ী প্যানেল নির্বাচনের আয়োজন না করে অনৈতিকভাবে ও ছলচাতুরী করে তিনি পদ আঁকড়ে থাকার দূরভিসন্ধিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত আছেন।’

অ্যাক্টের ধারা পর্ষদগুলোর মেয়াদ সম্পর্কে বলা হয়, ২০১৬ সালের জুলাই মাসে মেয়াদ শেষ হয় সিনেট হতে সিন্ডিকেট সদস্যের মেয়াদ। এরপর মে ২০১৮তে ডীন, ২০১৮’র জুনে সিন্ডিকেট, শিক্ষা পর্ষদ, অর্থ কমিটি এবং একই বছরের অক্টোবর মাসে সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধিদের মেয়াদ শেষ হয়। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে মেয়াদ শেষ হয় সিনেট রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিদেরও।

বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলা হয়, ‘গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত না করলেও মেয়াদের শেষ দিকে এসে তিনি নির্বিচারে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন। একটি বিশেষ মহলের নিয়োগ-বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক অনাচারের পথ সুগম করে দেয়াটাই বর্তমান প্রশাসনের একমাত্র লক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে?

বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্টের প্রতি অনির্বাচিত উপাচার্যের এই অবজ্ঞার ভিন্ন কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু শিক্ষা-গবেষণা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অনতিবিলম্বে মেয়াদোত্তীর্ণ সকল পর্ষদের নির্বাচন সম্পন্ন করার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলার কারণে উদ্ভূত যে কোন সংকটময় পরিস্থিতির দায় উপাচার্যকেই বহন করতে হবে।’

এদিকে, উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হতে আর ২৩ দিন সময় থাকলেও প্যানেল নির্বাচনের কোন প্রস্তুতি চোখে পড়ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুরাবস্থা সম্পর্কে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘করোনা প্রকোপের মধ্যে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন হয়ে গেল, অন্যান্য নির্বাচনগুলো হতে বাধা নেই। প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এগুলো দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখা হয়। তবে খুবই দ্রুত এসব নির্বাচন হয়ে যাওয়া উচিত। করোনার প্রকোপ এখন অনেকটা কমে আসছে ফলে নির্বাচনের আয়োজন করা কোন সমস্যা না।’

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজকে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্ঠা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।