Home বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেট্রোরেলে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে সংশয়

মেট্রোরেলে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে সংশয়

36

ডেস্ক রিপোর্ট: চার দিন পরেই দেশের প্রথম মেট্রোরেল উদ্বোধন করা হচ্ছে। মেট্রোর যাত্রীদের প্রায় সবার হাতেই থাকবে মোবাইল। তাঁদের নির্বিঘ্নে সেবা দিতে মেট্রোরেলের স্টেশনগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম স্থাপন করতে চায় মোবাইল অপারেটররা। তা না হলে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়া কঠিন হবে বলছে তারা।

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল করবে এই রেল। ২৮ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেল উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই দিন মেট্রোরেলে চড়ে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত যাবেন এবং সেখান থেকে আবার আগারগাঁও আসবেন বলে কথা রয়েছে। পরদিন ২৯ ডিসেম্বর থেকে সর্বসাধারণের জন্য চালু হবে এই রেল।
মেট্রোরেলের স্টেশনে সরঞ্জাম বসাতে অ্যামটবের চিঠি
মেট্রোরেলের উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ে এমআরটি লাইন-৬ এ মোবাইল নেটওয়ার্ক সুবিধা চালু করতে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডকে (ডিএমটিসিএল) গত ২৭ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়েছিল অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব)। চিঠির একটি কপি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকেও (বিটিআরসি) দেওয়া হয়।

অ্যামটব তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেছে, প্রতিদিন অনেক মানুষ এই মেট্রোরেলের বিভিন্ন স্টেশন থেকে যাতায়াত করবে। এতে মোবাইল নেটওয়ার্কের ব্যবহার বাড়বে। স্টেশনের ভেতরে কথা বলা ও ইন্টারনেটের (ডেটা) বাড়তি চাহিদা মেটাতে মোবাইল অপারেটরদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

এই পরিস্থিতিতে মোবাইল অপারেটররা সমন্বিত নেটওয়ার্ক সুবিধা স্থাপন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। টিকিট কাউন্টার, প্ল্যাটফর্ম, লাউঞ্জ, ফুড স্টল অর্থাৎ যেখানে লোকসমাগম বেশি হবে, সেখানে এসব নেটওয়ার্ক সুবিধার জন্য অ্যানটেনা বসানো হবে। এতে স্টেশনে চলাচলকারী যাত্রীরা নির্বিঘ্নে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাবেন।

অ্যামটব বলছে, তারা ইতিমধ্যে প্রস্তুত থাকা ৯টি স্টেশনে প্রযুক্তিগত জরিপ ও মূল্যায়ন করেছে এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনাও করেছে। চিঠির সঙ্গে ডিএমটিসিএলকে খসড়া পরিকল্পনাও দিয়েছে তারা।
অ্যামটব বলেছে, দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবা গুরুত্বপূর্ণ। তারা আশা করছে, উদ্বোধনের তারিখের আগেই স্টেশনগুলোতে মোবাইল নেটওয়ার্ক সুবিধা চালু করার বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবে।

চিঠির বিষয়ে অ্যামটবের মহাসচিব বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, মেট্রোরেলে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করতে অপারেটররা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কারিগরি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। অ্যামটব আশা করছে, সরকার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।

স্টেশনে ও মেট্রোরেলে কলড্রপ, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে
পুরোদমে কার্যক্রম শুরুর পর মেট্রোরেলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী চলাচল করবে।

দিনে মেট্রোরেলে চলাচল করবে চার লাখ যাত্রী। অপারেটরগুলোর আশঙ্কা, যেহেতু মানুষের চাপ বাড়বে সেহেতু মেট্রোরেলের স্টেশনে ও চলতি অবস্থায় বারবার কলড্রপ হতে পারে, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা ওয়াহিদ ফয়সাল বলেন, মেট্রোরেলের মতো একটি সেবায় ঠিকমতো মুঠোফোন সেবা পাওয়া যাবে না, এটা কেমন কথা।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, এখন যেভাবে মেট্রোরেলের নকশা ও অবকাঠামো করা হয়েছে, তাতে মোবাইল নেটওয়ার্কের টাওয়ার ও তার বসানোর উপায় নেই। কোম্পানিগুলোকে আশপাশের ভবনে অথবা খালি জায়গায় নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম স্থাপন করতে। মেট্রোরেলের (লাইন-৬) মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশ এবং নতুন যেসব লাইন হবে, সেগুলোতে এ ব্যবস্থা রাখতে হলে এখন থেকে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হবে।

অবশ্য অপারেটরগুলো বলছে, টাওয়ার বসানোর ক্ষমতা এখন আর তাদের হাতে নেই। টাওয়ার বসানোর কাজ করে টাওয়ার কোম্পানি। আর সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনে টাওয়ার বসানোর জন্য জায়গা পাওয়া যায় না।

মেট্রোরেল বা স্টেশনে আপাতত ওয়াই-ফাই সংযোগ দেওয়ারও কোনো পরিকল্পনা নেই।
প্রথমআলো