Home রাজনীতি মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠন বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে অনন্য ঘটনা–ইনু

মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠন বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে অনন্য ঘটনা–ইনু

65

ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি বলেছেন, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠন এবং ১৭ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের রাণাঙ্গনে মুজিবনগরে সেই সরকারের শপথ গ্রহণ শুধু মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসই নয়, বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে এক অনন্য মহান ঘটনা। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে তাঁকে বাংলাদেশ সরকারের রাষ্ট্রপতি, জাতীয় নেতা অধ্যাপক সৈয়দ নজরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি, জাতীয় নেতা তাজউদ্দিন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় নেতা এ এইচ এম কামারুজ্জামান, জাতীয় নেতা মনসুর আলীসহ নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্যদের নিয়ে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন রাষ্ট্রের ন্যায্যতা আন্তর্জাতিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিল। তিনি বলেন, অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর দখল থেকে বাংলাদেশ মুক্ত করার লক্ষ্যে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক নেতৃত্বে পরিচালিত করে বিজয়ী করতে উচ্চ রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক দক্ষতা প্রদর্শন করেছিলেন। জনাব হাসানুল হক ইনু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শীতার প্রশংসা করে বলেন, বঙ্গবন্ধু নিজেই তার অনুপস্থিতিতে জাতি যেন নেতৃত্বশুন্য না হয় তার জন্য চার জাতীয় নেতা, চার যুবনেতা, চার ছাত্রনেতা কার কি দায়িত্ব-কর্তব্য তা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন। জনাব ইনু বলেন, অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিবাহিনী, গণবাহিনী, মুজিব বাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌ কমান্ডোসহ আঞ্চলিক বাহিনীগুলোকে শৃংখলার মধ্যে রেখে পারিচালনা করেছে। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে কূটনৈতিক তৎপরতা, আঞ্চলিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা, সম্প্রচার বিভাগ, আয়কর বিভাগ, ডাক বিভাগ, স্বাস্থ বিভাগ, পুলশ বিভাগসহ প্রশাসনিক বিভাগ প্রতিষ্ঠা করে পূর্ণাঙ্গ সরকার হিসাবে কাজ করেছে। তিনি বলেন, অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রও বাংলাদেশ ও বিশ্বের রাজনীতি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা। বাংলাদেশ ও আমেরিকা ছাড়া বিশ্বের আর কোনো দেশের লিখিত স্বাধীনতার ঘোষণা নাই। তিনি বলেন, স্বাধীনতার এই মহান ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতেই স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান প্রণীত হয়েছিল। জনাব ইনু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান, অধ্যাপক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও সেই ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে প্রণীত স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে গণতান্ত্রিক, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ে তোলার সংগ্রাম অব্যাহত রাখার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জাতির দুর্ভাগ্য স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের চিরশত্রু পাকিস্তানপন্থী ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী জঙ্গিবাদী শক্তি এখনও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঘোষিত-অঘোষিত-প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী বাঙালি সংস্কৃতির বিপরীতে ধর্মকে দাঁড় করিয়ে দেয়ার পাকিস্তান আমলের বস্তাপঁচা রাজনীতিকে বিচ্ছিন্নভাবে না দেখে তেঁতুলতত্ত্বসহ সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে জাতীয় প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সকল ব্যক্তি-মহল-গোষ্ঠী-শক্তি-দলকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহবান জানান।

ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস উপলক্ষে আজ ১৭ এপ্রিল রবিবার বিকাল ৪:৩০ টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় ভাষনদানকালে এ কথা বলেন। জাসদ স্থায়ী কমিটির সদস্য নুরুল আকতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর্জা মোঃ আনোয়ারুল হক, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ন-মা) এর কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমূখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন।