Home কুটনৈতিক ও প্রবাস মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই ভাইসহ নিহত ৪

মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দুই ভাইসহ নিহত ৪

18

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি॥ মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আপন দুই ভাইসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের চারজন নিহত হয়েছেন। গত বুধবার মালয়েশিয়ার ঈদেও দিন পেরাক রাজ্যে এই দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের এক্তারপুর গ্রামের করিম সর্দারের দুই ছেলে মোঃ আব্দুল্রঅহ (২৫) ও হাফেজ আরিফুল ইসলাম সোহেল (২৭) এবং একই এলাকার মোঃ শাহাবুদ্দির মিয়ার ছেলে মোঃ সোহেল (২৫), মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ আশকর আলী (৪০)।
একতারপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ঈদ আনন্দ এখন বিষাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের একতারপুর গ্রামের করিম সর্দারের ঘরে। উপর্জনক্ষম দুই ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক করিম কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না। তিনি বলেন, তার তিন ছেলে মালয়েশিয়ায় থাকেন। তাদেরকে বিদেশে পাঠাতে গিয়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার মত ঋণগ্রস্থ হয়েছেন। এমন সময় দুই ছেলের একসাথে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। তিনি আরো বলেন, আমি আমার খরচে সন্তানদের লাশ দেশে আনতে অক্ষম। তাই সরকারের প্রতি দাবী জানাই, যাতে সরকারী খরচে দ্রুত তাদের লাশ দেশে আনা হয়।
এদিকে বুকের ধন ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর মা আলিয়া খাতুন। তিনি বলেন, আমার ছেলে কয়েকদিন আগেও আমার সাথে কথা বলেছে। সে তখন ঈদে কাপড় কিনিছি কা না তা জানতে চেয়েছে। বোনদের বাড়িতে আসার দাওয়াত দেয়া হয়েছে কিনা তাও জানতে চেয়েছে। অবাক লাগছে আজ ঈদের দিন আমার সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমি আমার সন্তানকে দ্রুত আমার কাছে ফিরে পেতে চাই। সরকার যেন দ্রুত আমার ছেলেকে দেশে আনার ব্যবস্থা করে আমি এই দাবি জানাচ্ছি।
স্বজনরা জানান, মালয়েশিয়ায় ঈদের নামাজ শেষে করিম মিয়ার ছেলে মো: আব্দুল্লাহ ও আরিফুল ইসলাম সোহেল, একই এলাকার মো: শাহাবুদ্দির মিয়ার ছেলে মো: সোহেল ও মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ আশকর আলীসহ কয়েকজন মিলে ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন। তারা ক্যামেরুন থেকে গাড়িতে করে কুয়ালালামপুর যাচ্ছিলেন। দুপুরের দিকে পেরাক রাজ্যের কাম্পার এলাকার এক্সপ্রেসওয়েতে আকস্মিক নিয়ন্ত্রণ হারায় তাদের বহন করা গাড়িটি। মুহূর্তেই পেছনে থাকা লরির ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যায় সেটি। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনজন। পরে গুরুতর আহত মোহাম্মদ সোহেল বৃহস্পতিবার স্থানীয় তেলুক ইন্তান হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজন হারানোর বেদনা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না তারা।