Home রাজনীতি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ হুমকীর মুখে: বাসদ

মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ হুমকীর মুখে: বাসদ

22

স্টাফ রিপোটার: দেশের মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠান চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ঢাকায় এক বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। আজ ১২ জুলাই বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসদ ঢাকা মহানগর শাখার আহবায়ক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় শীর্ষনেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নিখিল দাস, জুলফিকার আলী, আহসান হাবীব বুলবুল ও খালেকুজ্জামান লিপন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, ২০০০ সালে দেশে প্রথম ডেঙ্গু রোগি ঢাকায় শনাক্ত হলেও বর্তমানে তা দেশের ৫৯টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। ২০১৮ সালে আক্রান্ত রোগিদের শতভাগই ছিল ঢাকায় কিন্তু বর্তমানে আক্রান্ত রোগির প্রায় ৫০ ভাগই ঢাকার বাইরের জেলায়। ডেঙ্গু রোগি নিয়ন্ত্রণে ২০২১-২২ অর্থ বছরে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন ১০২ কোটি টাকা এবং ২২-২৩ অর্থ বছরে ৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও তার কোন প্রভাব ডেঙ্গুর উপর পড়ে নাই। উল্টো ডেঙ্গু রোগ বিস্তারকারী এডিস মশা এখন শুধু দিনে নয়, রাতেও কামড় দিচ্ছে এবং পরিষ্কার পানির পাশাপাশি ময়লা পানিতেও ডিম পাড়ছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতায় নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ২০২২ সালে জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত যেখানে হাসপাতালে ভতি রোগি ছিল ১০৮৯ জন, মৃত্যু ১ জন; সেখানে ২০২৩ সালে ঐ একই সময়ে রোগি প্রায় ৮ হাজার ও মৃত্যু ৪৭ জন এবং জুলাই মাসের প্রথমে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬৯১৯ জন। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার রোগি হাসপাতালে ভর্তি ও প্রায় শতাধিক মৃত্যুবরণ করেছে। তাহলে প্রশ্ন সরকার ও সিটি কর্পোরশন কি করছে? তারা কি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করছে না ডেঙ্গু বিস্তারে কাজ করছে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশের কোটি কোটি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠান চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এতে জনগণ হুমকীর মুখে পড়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ও অবকাঠামো খাতে এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে, যার বেশীরভাগ সমাপ্ত, কিন্তু এই হাজার হাজার কোটি টাকা খরচের সুফল কি দেশের মানুষ পেল?
গত জুন মাসেই দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান থেকে জন্মমৃত্যু নিবন্ধনকারী প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু সরকার তাতে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। তাদের অবহেলার ও উদাসীনতার চরম খেসারত হলো দেশের কোটি কোটি মানুষের তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া। এখন এই তথ্য ফাঁসের ফলে দেশের কোটি কোটি মানুষ নানা হয়রানী ও আর্থিক ক্ষতির সন্মুখীন হতে পারেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার বাগাড়ম্বর করছে দেশ ডিজিটাল হয়েছে এখন স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনায় ডিজিটাল বাংলাদেশের জারিজুরিও ফাঁস হয়ে গেলো।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কীটতত্ত¡ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করে বৈজ্ঞানিক উপায়ে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকার ও সিটি কর্পোরেশনের প্রতি আহবান জানিয়ে ব্যর্থতার দায়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহবান জানান। একই সাথে দেশের নাগরিকদের তথ্য ফাঁস এর ঘটনার জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, তথ্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে তোখানা রোড, পল্টন, বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা এলাকা প্রদক্ষিণ করে।