সিলেট থেকে সৈয়দ রাসেল আহমদ: কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বুধবার সকাল ৮টা থেকে চলছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ। সিসিক নির্বাচনের দলীয় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল ইতোমধ্যে নিজ নিজ ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
২০০২ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সিলেটের সকল ওয়ার্ডে এবারই প্রথম হচ্ছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ।
ভোট গ্রহণের পূর্বে সাধারণ ভোটারের মধ্যে ইভিএম নিয়ে নানা প্রতিক্রিয়া দেয়। আর সে প্রতিক্রিয়ার বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ও প্রদানে। ভোটাররা ব্যালটের মত সহজে ও স্বল্প সময়ে ভোট দিতে পারছেন না। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে প্রচুর সময় বিলম্ব হচ্ছে ।
সিলেট সিটির ৪২ নং শ্রীরামপুর এলাকার এক ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়া এক বৃদ্ধ জানান, ভোট অবশ্য দিতে পেরেছি। তবে সময় লেগেছে প্রায় পৌণে এক ঘন্টা। মেশিনের আলো কম থাকায় ভোট দিতে সময় লেগেছে।
আরেকজন জানান,অনেকেই ইভিএমএ ভোট দেয়ার নিয়ম জানেননা,তাই ভোট দিতে সমস্য পোহাতে হচ্ছে।
নগরের সুবিদবাজারস্থ আনন্দনিকেতনে কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। সকাল পৌণে ১০ টার দিকে তিনি ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। তাকে স্বাগত জানান ইলেক্ট্রনিক ও মোবাইল মিডিয়ার প্রায় ৩ ডজন সাংবাদিক। এসময় সাধারণে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল না বললেই চলে।
আমাদের এক সহকর্মী জানান, নগরের হাউজিং এস্টেট গার্লস স্কুল সেন্টারে পুরুষ মহিলা মিলে তিনঘন্টার ভোট গ্রহণ করা হয়েছে ৩২০টি।
মিরের ময়দানস্থ ব্লুবার্ড স্কুল এন্ড কলেজ সেন্টারে গিয়ে দেখা যা-য় ভোটাররা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন, তাদের ভেতরে যেতে দিচ্ছে না পুলিশ।
ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় সব ক’টি ভোট কক্ষই ভোটার শূন্য। এই কেন্দ্রের ৩ নং ভোট কক্ষে দেখা গেছে দুই ধারে অফিসাররা কর্মহীন অবস্থায় বসে গল্পগুজব করছেন। ইত্যবসরে একজন সাংবাদিক ঢুকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তবে ভোট দিতে তেমন বিলম্ব হয়নি বলে জানান তিনি।
ব্লুবার্ড স্কুল এন্ড কলেজ সেন্টারের পুরুষের ২ নং ভোট কক্ষে এক পৌঢ় ব্যক্তিকে ভোট প্রদানকালে গোপন কক্ষ থেকে বারবার ফিরে আসতে ও ঢুকতে দেখা গেছে। তিনি কোনোমতেই ভোট দিতে পারছিলেন না বলে জানান। তবে ভোট দিতে না পারলেও এর আগেই তার ভোটে কালেক্ট হয়ে গেছে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
শিবগঞ্জ স্কলার্সহোমে, বালুচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সিলেট সরকারি মডেল স্কুল কেন্দ্রে বাইরে ভোটারদের দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে ও বসে থাকতে দেখা গেছে। এসব কেন্দ্রে ধীরগতিতে ভোট গ্রহণে করা হচ্ছে বলে ভোটাররা জানিয়েছেন।
নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটার উপস্থিতি ভালো থাকলেও ইভিএমে অভ্যস্ত না হওয়ার কারণে ভোট গ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে। তবে ইভিএমে ভোট দিতে ভোটারদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা।
সাম্প্রতিক বর্ধিত ১৫টি ওয়ার্ড নেয়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশনে (সিসিক) এখন ওয়ার্ড সংখ্যা ৪২টি। ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৪ হাজার ৩৬৩, নারী ২ লাখ ৩৩ হাজার ৩৮৪ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া ভোটর রয়েছেন ৬ জন। সিসিক নির্বাচনে মোট কেন্দ্র ১৯০টি যেখানে স্থায়ী ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৩৬৭টি এবং অস্থায়ী ভোটকক্ষ রয়েছে ৯৫ টি।