Home রাজনীতি ভিন্নদল করার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের অবদান তাদের স্মরণ করা হয় না...

ভিন্নদল করার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধে যাদের অবদান তাদের স্মরণ করা হয় না : ফখরুল

44

স্টাফ রিপোটার: ২রা মার্চকে জাতীয় জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আক্ষেপ করে বলেছেন, ৫২ বছরেও এই দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধ মানে আজ আওয়ামী লীগ এবং এক ব্যক্তির নাম প্রচার করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে লক্ষ্ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে। কই তাদের নামতো স্মরণ করা হয় না।

তিনি বলেন, আজকে স্বাধীনতা যুদ্ধের রূপকার মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর অবদান এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময় নেতৃত্বদানকারী তাজউদ্দীন আহমেদের অবদানও স্মরণ করা হয় না। আজকে ভিন্ন দল করার জন্য স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক আসম রব, ইশতেহার পাঠক শাজাহান সিরাজ, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকেও স্মরণ করা হয় না। বরং জিয়াউর রহমানকে একটা খলনায়ক হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। তারা (আওয়ামী লীগ) বলেন জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। সবকিছুই নাকি করেছে আওয়ামী লীগ এবং একজন ব্যক্তি।

বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐতিহাসিক পতাকা উত্তোলন দিবস উপলক্ষে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় চেপে বসেছে। দেশের সকল আশা আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। তারা আবারও বাকশাল কায়েম করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে লুটের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আজকে পত্রিকায় দেখলাম চট্টগ্রামের ও এম এসের চালের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে এক বৃদ্ধ অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছে। মানুষ যখন খেতে পারছে না তখন প্রধানমন্ত্রী হাওরে গিয়ে ২৫ পথ দিয়ে রান্না করে উৎসব করছে। এগুলো জনগণের সাথে পরিহাস।

তিনি বলেন, এ সরকার আজ দেশের ঐতিহ্য ইতিহাস বিনষ্ট করে দিচ্ছে। মানুষ ভোট দিতে পারছে না। ভিন্নমত পোষণ করতে পারছে না। ভিন্ন মত প্রকাশ করলেই কারাগারে যেতে হচ্ছে। গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে লিখতে পারছে না। সৎভাবে কেউ ব্যবসা করতে পারছে না। দলীয় লোক না হলে সেই ব্যবসায়ীর প্রতি চলে নিপীড়ন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারতের এক বিতর্কিত ব্যবসায়ীর সাথে সরকার বিদুৎ নিয়ে একটি চুক্তি করেছে। যার ফলে দুইশ টাকার কয়লা চারশ টাকা দিয়ে কিনতে হবে। আজকে বিদ্যুৎয়ের মূল্য বৃদ্ধির কারণে সবকিছুর দাম আরো বেড়ে যাবে। তারা আইন করেছে, গণশুনানী না করেই আবারও বিদ্যুৎয়ের মূল্য বৃদ্ধি করতে পারবে। এ সরকার জনগণের টাকা লুটপাট করতেই বারবার বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করছে।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় বসে থাকলে চলবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই আন্দোলন বিএনপি বা গণতন্ত্র মঞ্চের আন্দোলন নয়। এটা গোটা জাতির সংগ্রাম। স্বাধীনতা, ভোটাধিকার এবং গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে সকল গণতন্ত্রগামী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

জেএসডি’র সিনিয়র সহ সভাপতি তানিয়া রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতার পতাকা উত্তেলক ও জেএসডি সভাপতি আ স ম রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকের হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।