Home রাজনীতি ভাড়া নৈরাজ্য, পথের সীমাহীন মহাদুর্ভোগ ঈদযাত্রার আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে–রিজভী

ভাড়া নৈরাজ্য, পথের সীমাহীন মহাদুর্ভোগ ঈদযাত্রার আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে–রিজভী

46

স্টাফ রিপোটার: সরকারের সিন্ডিকেটে ভাড়া নৈরাজ্য, পথের সীমাহীন মহাদুর্ভোগ তাদের ঈদযাত্রার আনন্দকে ম্লান করে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, একদিন পরেই ত্যাগের মহিমায় উৎকীর্ন কোরবানীর ঈদ, পবিত্র ঈদুল আজহা। শহরের কস্টক্লান্ত মানুষ প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ উৎযাপনে ফিরছেন গ্রামে। ঈদ আসলেই আওয়ামী সরকারের পরিবহন ও টিকিট সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে ওঠে। যে যেভাবে পারে দুই-তিনগুন ভাড়া বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটে। সবকিছু করছে সরকারি দলের লোকেরা। কারণ এই অর্থের ভাগ পায় ক্ষমতাসীনদলের রাঘব বোয়ালরা। পথে পথে যানজট-চাঁদাবাজি-হয়রানি অব্যাহত রয়েছে। পথের ক্লান্তিই শেষ না, দেশের বৃহৎ অঞ্চলজুড়ে ত্রাণ বঞ্চিত বন্যার্ত মানুষের হাহাকার। অন্যদিকে গ্রামীণ জনপদে সরকারি দলের ক্যাডারদের অত্যাচার ওঁৎ পেতে আছে ঈদের আনন্দকে নিরানন্দে পরিনত করতে।

শুক্রবার (৮ জুলাই) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

উন্নয়নের ফানুসের মায়াজাল সৃষ্টির মাধ্যমে মূলত; দুর্নীতির উল্লম্ফন দেশে এক বিকট রুপ ধারণ করেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘সরকারপ্রধান ঘরে ঘরে আলো পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ঘরে ঘরে এখন ঘুটঘুটে অন্ধকারের আধিপত্য। বারবার পূর্ববর্তী সরকারের ব্যর্থতার মিথ্যা বয়ান দিয়ে বিদ্যুতের বাম্পার উৎপাদনকারী সরকারের আমলে এই ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কথা শুনতে হচ্ছে কেন? এটি কি সেই কৃচ্ছতার জন্য বেলী ফুলের মালা দিয়ে বিবাহের আহবান জানানোর মতো হবে না তো ? যেখানে কারো কারো বিয়ে সোনার মুকুট পরে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এখন প্রধানমন্ত্রী নির্দ্বিধায় বলছেন লোডশেডিং হবেই, এটি এড়ানো যাবে না। আওয়ামী মন্ত্রীরা এখন লোডশেডিংয়ের জন্য জনগণকে ধৈর্য ধারণের কথা বলছেন। বছরব্যাপী কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে বিশাল বিশাল অনুষ্ঠানের নামে করা হয়েছে ঝাড়বাতির আলোক ঝলকানি। বিশাল আলোকসজ্জা করে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর এখন মন্ত্রীরা বলছেন বিয়ের অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে শেষ করতে হবে, করা যাবে না কোন আলোকসজ্জা। কোন ধর্মীয় উৎসবেও আলোকসজ্জা করা যাবে না। বিদ্যুৎ সংকটের কারণে সরকার এখন অফিস টাইম কমিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশ যে শ্রীলংকার মতো এক মহা দেওলিয়াত্বের দিকে ধাবিত হচ্ছে, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ থাকলো না। এর পাশাপাশি বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন একের পর এক জনগণের অতি প্রয়োজনীয় উপযোগিতা সেবা অর্থাৎ জ্বালানী, গ্যাস-বিদ্যূৎ-পানির মূল্য। মূল্যের সর্বগ্রাসী আগুনের উত্তাপে চারিদিক বিপন্ন হয়ে গেছে। যেমন গতকালই পানির দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রী বলেছেন জ্বালানী তেলের দাম বাড়বে। এর আগে বৃদ্ধি করা হয়েছে বিদ্যূৎ ও গ্যাসের দাম। সরকারের প্রতি সেক্টরে দুর্নীতির সমান্তরাল বিচ্ছুরণ ছাড়া আর কিছু নেই। দেশের ওপর মূলত; আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর সামষ্টিক দখলদারী চলছে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশ জনগণের টাকায় এই লুটপাটের সরকার আকাশে স্যাটেলাইট পাঠায়, নিচে রাস্তা বন্ধ করে উপরে মেট্রোরেল- ফ্লাইওভার বানায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য কোটি টাকার আতশবাজি পুড়ায়। গ্যাস উত্তোলন বন্ধ রেখে বিদেশ থেকে মূল্যবান এলএনজি আমদানি করে বিদ্যুৎ তৈরি করাও লুটপাটের জন্য। অথচ মানুষের এখন খাদ্য নেই, কর্ম নেই, ঘরে ঘরে কোটি শিক্ষিত বেকার, অনাহারক্লিষ্ট মানুষ খাদ্যের সন্তান হত্যা করছে বা বিক্রি করছে।