Home শিক্ষা ও ক্যাম্পাস ভর্তিচ্ছুদের পাশে তারা…

ভর্তিচ্ছুদের পাশে তারা…

82

জাবি প্রতিনিধি: তখন প্রায় সন্ধ্যা। চারিদিকে অচেনা মানুষের ভীড়। ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা শেষে ক্যাফেটেরিয়ার পিছনে মায়ের সাথে বসে আছে প্রিয়া। সে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি উপজেলা থেকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছে। আগামীকালও পরীক্ষা আছে তার। তবে অচেনা নগরীতে এমন কেউ নেই; যার কাছে একটু মাথাগোঁজার ঠাঁই পাওয়া যায়। তাই মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাবেন সেই দুশ্চিন্তায় মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় মায়ের। এমন সময় ত্রাতা হয়ে এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। সব শুনে যোগাযোগ করলেন কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সদস্যদের সাথে। তারা অতিসত্বর মা-মেয়ের আবাসনের ব্যবস্থা করে দিলেন। পাহাড় সমান দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেলেন প্রিয়া ও তার মা।

বলছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা পরিক্ষার্থীদের কল্যানে কাজ করে যাওয়া এক সংগঠনের কথা। প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে জেলা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি’। এবছরও ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য নিবেদিত প্রাণ তারা।

ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্টলে খাবারের উচ্চমূল্য, অতিরিক্ত রিক্সা ভাড়া, মানহীন শিট বিক্রির ভীড়ে তারা এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পরীক্ষা দিতে আসা অসংখ্য পরীক্ষার্থী, অভিভাবকদের কাছে অন্যতম ভরসার নাম ‘জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি’।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি স্বপ্ন জামান বলেন, ‘পরীক্ষার্থীদের জন্য আমরা নিজ উদ্যোগে আবাসন ব্যবস্থা করে থাকি। পরীক্ষার্থীদের তথ্য সহায়তা দেওয়া, পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌছে দেওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করি।’

যশোর জেলা ছাত্রকল্যান সমিতির সভাপতি সুরুজ রহমান বলেন, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা পরিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় কাজ করছি। তবে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে আমরা সকলকে সহযোগিতা করতে পারি না। এক্ষেত্রে প্রশাসন এবং সমাজের বিত্তশালী মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে আমাদের কার্যক্রমের পরিধি আরও ব্যপ্তি লাভ করবে।

গাইবান্ধা জেলা সমিতির সভাপতি আব্দুল আলিম বলেন, জেলা সমিতির পক্ষ থেকে ৫৫ জন পরীক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রমেও আমরা সহায়তা করে থাকি।

গাইবান্ধা থেকে আগত এক শিক্ষার্থী বলেন, জেলা সমিতির মাধ্যমে আমি হলে থাকার জায়গা পেয়েছি। অপরিচিত জায়গায় এই সামান্য সহযোগিতাও আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। আশা করি, তারা এ ধরনের সহযোগিতা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা থেকে আগত আইয়ুব আলী বলেন, খুলনা জেলা সমিতির পক্ষ থেকে পরীক্ষা কেন্দ্র সংক্রান্ত তথ্য সহায়তা পেয়েছি। আবাসনের ব্যবস্থাও করেছেন। আশা রাখি, নিজেও একদিন এধরনের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অংশ হয়ে কাজ করতে পারবো।