Home বাণিজ্য ও অর্থনীতি ব্র্যাক ব্যাংকের নিট মুনাফা ৭৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।

ব্র্যাক ব্যাংকের নিট মুনাফা ৭৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।

34

ডেস্ক রিপোর্ট : ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে শক্তিশালী ব্যালেন্স শীট প্রবৃদ্ধির ফলে ব্র্যাক ব্যাংকের সমন্বিত (Consolidated) কর-পরবর্তী নিট মুনাফা (NPAT) ৭৫% বৃদ্ধি পেয়েছে।

জানুয়ারি-জুন ২০২৩-এ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানসহ সমন্বিতভাবে কর-পরবর্তী নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩৩৪ কোটি টাকায়, যা ২০২২ সালের একই সময়ে ছিল ১৯১ কোটি টাকা। আগের বছরের ২৫৪ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ব্র্যাক ব্যাংক ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে এককভাবে ৩০৩ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা অর্জন করেছে।

জানুয়ারি-জুন ২০২৩ সময়ে পূর্বের বছরের একই সময়ের তুলনায় এককভাবে (স্ট্যান্ডঅ্যালোন ভিত্তিতে) ঋণ পোর্টফোলিওতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯% এবং গ্রাহক আমানতে ২৮% (বার্ষিকীকৃত)।

১০ আগস্ট ২০২৩ ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ২০২৩ সালের অর্ধবার্ষিক আার্থিক ফলাফল ঘোষণা করে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ বিশ্লেষক, পোর্টফোলিও ম্যানেজার ও পূজিঁবাজার বিশেষজ্ঞবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, যা ব্যাংকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন এবং ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ব্যাংকের আর্থিক ফলাফল, উল্লেখযোগ্য অর্জন, অগ্রগামী অবস্থান ও ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক কৌশল তুলে ধরেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য অর্জনসমূহ:

• সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ২০২২ সালের একই সময়ের ১.৩৭ টাকার তুলনায় ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে ১.৯৩ টাকায় উন্নীত হয়েছে;

• ৩০ জুন, ২০২৩ তারিখে ব্যাংকের সমন্বিত নিট সম্পদের মূল্য (এনএভি) শেয়ার প্রতি ৩৮.৯২ টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ৩৮.০১ টাকা ছিল;

• ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে ব্র্যাক ব্যাংকের বার্ষিকীকৃত একক (Standalone) ঋণ পোর্টফোলিও এবং গ্রাহক আমানত ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় যথাক্রমে ২৯% ও ২৮% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মূলত ব্যাংকটির দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধির কৌশল এবং গ্রাহকের আস্থার পরিচায়ক;

• ব্যাংকটি খেলাপি ঋণের হার (NPL) উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে, যা ২০২২ সালের ডিসেম্বরের ৩.৭২% থেকে কমে ২০২৩ সালের প্রথমার্ধে ৩.৫১% -তে হয়েছে। এটি মূলত ব্যাংকের কার্যকর নন-পারফর্মিং অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টকে নির্দেশ করে;

• ভবিষ্যতের যেকোনো ধাক্কা সামাল দিতে ব্যাংক ১১৫% খেলাপি ঋণ (NPL) কভারেজ বজায় রেখেছে;

• সমন্বিত রিটার্ন অন ইক্যুইটি (RoE) এবং রিটার্ন অন অ্যাসেট (RoA) যথাক্রমে ১০.০১% এবং ০.৮৮% এ দাঁড়িয়েছে;

• ঋণ বিতরণে প্রবৃদ্ধির ফলে অধিক ইন্টারেস্ট আয়, দক্ষ তহবিল ব্যবস্থাপনা, অধিক নন-ফান্ডেড আয়ের কারণে মোট সমন্বিত রাজস্ব আয় ২০২২ সালের প্রথমার্ধের তুলনায় ২৫.৮৭% বৃদ্ধি পেয়েছে;

• কর্মীদের বেতন, অন্যান্য পরিচালন ব্যয়ের ওপর মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব এবং প্রবৃদ্ধি কৌশলের অংশ হিসেবে মানবসম্পদ, প্রযুক্তি ও অবকাঠামোতে বিনিয়োগের কারণে সমন্বিত পরিচালন ব্যয় ২০২২ সালের প্রথমার্ধের তুলনায় ১৮.৭৭% বৃদ্ধি পেয়েছে;

• গ্রাহকদের কাছ থেকে অধিক পরিমাণে আমানত সংগ্রহের কারণে জানুয়ারি থেকে জুন ২০২৩ সময়ের জন্য সমন্বিত শেয়ার প্রতি নেট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (NOCFPS) ৭.৩৮ টাকা থেকে ২১.৫৭ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

ব্যাংকের আর্থিক ফলাফল সম্পর্কে ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, “ব্র্যাক ব্যাংকের বছরের প্রথমার্ধের আর্থিক ফলাফল মূলত আমাদের ক্রমবর্ধমান গ্রাহকদের আর্থিক সেবা প্রদানের ক্ষমতার পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে বিদ্যমান ব্যালেন্স শীট অবস্থার চেয়ে অধিকতর প্রসারিত ব্যালেন্স শীট অবস্থায় উন্নীত করার ক্ষমতার বিষয়টি তুলে ধরে। এটি আমাদের ওপর আমাদের গ্রাহকদের অবিচল আস্থা এবং এই খাতে আমাদের দৃঢ় অবস্থানের একটি বড় প্রমাণ। আমরা এই প্রবৃদ্ধির যাত্রা বজায় রাখার পাশাপাশি প্রসারিত করার লক্ষ্যে অবিচল রয়েছি। এই ধরনের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালের মধ্যে আমাদের ব্যবসা দ্বিগুণ করার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার একটি সুস্পষ্ট নির্দেশক।”

তিনি আরও বলেন, “আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি পুরো ব্র্যাক ব্যাংক টিমের প্রতি- তাদের নিরলস প্রচেষ্টার জন্য, আমাদের পরিচালনা পর্ষদের প্রতি- তাদের ধারাবাহিক দিকনির্দেশনার জন্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি- এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে তাদের সময়োপযোগী রেগুলেটরি দিকনির্দেশনার জন্য। আমরা আমাদের গ্রাহক এবং স্টেকহোল্ডারদের কাছ থেকে যে অবিচল আস্থা এবং সমর্থন পাই, সেটিই আমাদের ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির মূল হাতিয়ার।”

২০২৩ সালের প্রথমার্ধের আর্থিক ফলাফলের বিশদ বিবরণ ব্র্যাক ব্যাংক- এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছ:
website: https://www.bracbank.com/en/investor-relations#financialStatements.